জীবনী মুবারক
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
বিলাদত শরীফ: ৬১৯ খৃ: বিছাল শরীফ: ৬৮ হিজরী (৬৮৮ খৃ:) বয়স মুবারক: ৭০ বছর।
, ২৭ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৫ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৩ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
অন্য এক হাদীছ শরীফে হযরত মূসা বিন মাইসারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি উনার পুত্র হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে কোন এক প্রয়োজনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট প্রেরণ করেন। তিনি সেখানে গিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এক ব্যক্তিকে দেখে ফিরে আসলেন এবং কিছু বললেন না। অতঃপর হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে সাক্ষাত করে বললেন, আমি আমার পুত্রকে আপনার নিকট পাঠিয়েছিলাম। তিনি আপনার নিকট এক ব্যক্তিকে দেখলেন, তিনি তখন কোন কথা বলতে পারলেন না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে চাচা! এ ব্যক্তি কে, আপনি কি জানেন? তিনি বললেন, না। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, ইনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম, আমার সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। আপনার পুত্রের ইন্তিকাল হবে না যে পর্যন্ত উনার দৃষ্টিশক্তি রহিত না হয় এবং উনাকে ইলিম দান করা না হয়। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দীদার মুবারকে তাশরীফ মুবারক নেয়ার সময় অর্থাৎ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সময় হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বয়স হয়েছিল মাত্র ১৩ বছর।
খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত মুবারককালে উনার বয়স মুবারক দুনিয়াবী দৃষ্টিতে অল্প হওয়ায় তিনি শুধু নিবিড়ভাবে খিলাফতের বিভিন্ন কার্যক্রমগুলো দেখতেন পাশাপাশি সম্ভব হলে খিলাফতের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার কোশেশ করতেন।
পরিণত বয়সে:
খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত মুবারককালে হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যৌবনে পদার্পন করেন। খলীফা উনাকে স্বীয় সান্নিধ্যে ও তত্ত্বাবধানে রাখেন। উনাকে গুরুত্বপূর্ণ মজলিসে বড় বড় ছাহাবী উনাদের সাথে বসার অনুমতি দিতেন। বদরী ছাহাবী উনাদের সাথেও বসার অনুমতি উনাকে দেয়া হয়। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি উনাকে অত্যন্ত মর্যাদা দিতেন এবং কঠিন সমস্যায় উনার সাথে পরামর্শ করতেন।
আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার খিলাফত মুবারককালে হিজরী ২৭ সনে মিশরের গভর্ণর হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নেতৃত্বে আফ্রিকায় একটি অভিযান পরিচালিত হয়। হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ থেকে একটি বাহিনী নিয়ে এ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন এবং মুসলিম পক্ষের দূত হিসাবে আফ্রিকার শাসক জারজীরের সাথে আলোচনা করেন। শাসক উনার প্রখর মেধা ও বুদ্ধিমত্তা দেখে মন্তব্য করেছে যে, “আমার ধারণা, আপনি আরবদের একজন মহাজ্ঞানী ব্যক্তি।”
হিজরী ৩৫ সনে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি মুনাফিকদের দ্বারা গৃহবন্দী হলে তিনি হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে স্বীয় প্রতিনিধি হিসেবে আমীরে হজ্জ নিয়োগ করে পবিত্র মক্কা শরীফে পাঠান। সে বছর উনারই নেতৃত্বে হজ্জ অনুষ্ঠিত হয়।
উটের যুদ্ধে হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার পক্ষে হিজাযী বাহিনীর পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বছরার গভর্ণর নিযুক্ত করেন। বছরা থেকে একটি বাহিনী নিয়ে তিনি ছিফফীনের যুদ্ধে হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার পক্ষে অংশগ্রহণ করেন। চরমপন্থী খারেজীদের সাথে নাহরওয়ান নামক স্থানে হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার যে যুদ্ধ হয় হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বছরা থেকে সাত হাজার সৈন্যসহ এ যুদ্ধে যোগদান করেন। হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বছরার সাথে অধিকৃত সমগ্র ইরানেও হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে গভর্ণর নিযুক্ত করেন। হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ইরানের খারেজী বিদ্রোহ নির্মূল করেন। (চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা-হুসনে যন পোষণ করা ঈমান
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৬)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (১)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহিলাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নির্দেশনা মুবারক- পর্দা পালন করা
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












