জীবনী মুবারক
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
বিলাদত শরীফ: ৬১৯ খৃ: বিছাল শরীফ: ৬৮ হিজরী (৬৮৮ খৃ:) বয়স মুবারক: ৭০ বছর।
, ২৯ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৭ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৫ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২১ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

ফযীলত ও মর্যাদা:
জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন বিনয়ী। তিনি জ্ঞানীদের উপযুক্ত কদরও করতেন। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। একদিন কাতিবে ওহী ও বিচার, ফিকাহ, কিরায়াত ও ফারায়েজ শাস্ত্রে মদীনা শরীফের আলিমদের প্রধান হযরত যায়েদ বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বাহনের উপর আরোহন করবেন, এমন সময় হাশেমী যুবক হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সামনে এসে দাঁড়ালেন এবং বাহনের লাগাম ও জিনটি ধরে হযরত যায়েদ বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে আরোহন করতে সাহায্য করলেন। হযরত যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনাকে বললেন, হে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাচাত ভাই! এ আপনি কি করছেন, ইহা ছেড়ে দিন। হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমাদের উলামা ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের সাথে উক্তরূপ আচরণ করার জন্যই আমরা আদিষ্ট হয়েছি। হযরত যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আপনার একটি হাত মুবারক বাড়িয়ে দিন। তিনি একখানা হাত বাড়িয়ে দিলে হযরত যায়েদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ঝুঁকে পড়ে উনার হাত মুবারকে বুছা দিলেন এবং বললেন, আমাদের নবী পরিবারের লোকজনের সাথে এরূপ আচরণ করার জন্যও আমরা আদিষ্ট হয়েছি।
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জ্ঞান, বুদ্ধিমত্তা এবং বিশেষ করে জ্ঞান অন্বেষণে উনার অভ্যাস, একাগ্রতা, কর্মপদ্ধতি দেখে সে যুগের বড় বড় জ্ঞানীগণ চরম বিস্ময়বোধ করেছেন।
খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলতেন, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তোমাদের সকলের অপেক্ষা বড় বিদ্বান। তিনি উনার সম্বন্ধে আরো বলতেন, ইনিفتى الكهول (তরুণ প্রবীন অর্থাৎ বয়সে তরুণ, জ্ঞানে প্রবীন)।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্পর্কে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উক্তি করেছেন, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার তাফসীর বর্ণনার সময় মনে হয় যেন তিনি একটি স্বচ্ছ পর্দার অন্তরাল হতে অদৃশ্য বস্তুসমূহ প্রত্যক্ষ করছেন।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলতেন, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনি কুরআন শরীফ উনার সর্বশ্রেষ্ঠ তাফসীরকারক।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলতেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে তৎসম্পর্কে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এই উম্মতের মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী।
মুহম্মদ হুসাইন আয-যাহাবী হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিদ্যাবত্তার কয়েকটি বিশেষ কারণ বর্ণনা করেছেন- (১) নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে উনার জন্য এ দোয়া মুবারক করেছিলেন-
أللهم علمه الحكمة و تأويل الكتاب ,أللهم فقهه فى الدين وعلمه التأويل
অর্থ: আয় আল্লাহ পাক! আপনি উনাকে কিতাব ও হিকমার জ্ঞান, দ্বীন সম্পর্কে অনুধাবন এবং কুরআন শরীফ তাফসীরের জ্ঞান দান করুন। (২) নবী পরিবারে উনার প্রশিক্ষণ লাভ, (৩) বড় বড় ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সান্নিধ্য লাভ, (৪) অসাধারণ স্মরণ শক্তি এবং আরবী ভাষা ও সাহিত্যের অগাধ জ্ঞান। সুবহানাল্লাহ!
হযরত মাসরুক রহমতুল্লাহি আলাইহি যিনি একজন শ্রেষ্ঠ তাবেয়ী তিনি বলেন, আমি যখন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দেখলাম, তখন উনাকে বললাম- أجمل الناس (সুন্দরতম ব্যক্তিত্ব)। যখন হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি কথা বললেন, তখন আমি বললাম- أفصح الناس (সর্বোত্তম প্রঞ্জলভাষী) এবং যখন তিনি আলোচনা করলেন, তখন আমি বললাম- أعلم الناس (সর্বাধিক জ্ঞানী ব্যক্তি)। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা) (চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১৭)
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কিছু সংক্ষিপ্ত ঘটনা ও ইবরত নছীহত (৫)
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (১৮)
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম
২০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১৬)
২০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কিছু সংক্ষিপ্ত ঘটনা ও ইবরত নছীহত (৪)
২০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬১)
২০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা রক্ষা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া ব্যভিচারের সমতুল্য
১৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)