জীবনী মুবারক
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৭)
বিলাদত শরীফ: ৬১৯ খৃ: বিছাল শরীফ: ৬৮ হিজরী (৬৮৮ খৃ:) বয়স মুবারক: ৭০ বছর।
, ০১ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৯ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৭ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ফযীলত ও মর্যাদা:
হযরত হিশাম ইবনে উরওয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজে তাবেয়ী, কিন্তু উনার পিতা ছাহাবী। তিনি উনার পিতা হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জ্ঞানের গভীরতা ও উনার মর্যাদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। উত্তরে হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছিলেন, হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার তুল্য জ্ঞানী লোক আমার নজরে পড়েনি।
হযরত আমর ইবনে হাবশী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার একটি আয়াত শরীফ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, তুমি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট যাও এবং উনাকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও। কারণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে সে সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের যাঁরা অবশিষ্ট আছেন উনাদের মধ্যে তিনিই অধিক জ্ঞানী।
কাতিবে ওহী ও বিচার, ফিকাহ, কিরায়াত ও ফারায়েজ শাস্ত্রে মদীনা শরীফের আলিমদের প্রধান হযরত যায়েদ বিন ছাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বিছাল শরীফের পর হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি মন্তব্য করেছিলেন, এই উম্মতের বিজ্ঞ আলিম দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন এবং আশা করি মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে উনার স্থলাভিষিক্ত করবেন।
হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বিশিষ্ট ছাত্র ও ব্যক্তিদের শিক্ষাদানের সাথে সাথে সাধারণ লোকদের সম্পর্কেও সচেতন ছিলেন। মাঝে মাঝে বিশেষ মাহফিলের মাধ্যমে তিনি জনসাধারণকে ওয়াজ-নছীহত করতেন। নিজে না করে অন্যকে করতে বলেন, এ ধরণের মানুষ তিনি ছিলেন না। তিনি ছিলেন দিনে রোযাদার ও রাতে ইবাদতগুজার।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মুলাইকা রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, একবার আমি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সাথে পবিত্র মক্কা শরীফ থেকে পবিত্র মদীনা শরীফ পর্যন্ত সফর করলাম। বিশ্রামের প্রয়োজনে উনার জন্য যখনই কোন তাঁবু গেড়েছি, রাতের একটি বিশেষ অংশ তিনি নামাযে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাটিয়ে দিতেন। অথচ অন্য সফরসঙ্গীরা তখন ক্লান্ত-শ্রান্ত অবস্থায় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকতেন। একদিন রাত্রে একাগ্রচিত্তে উনাকে আমি পাঠ করতে শুনলাম-
وَ جَاءَتْ سَكْرَتُ الْمَوْتِ بِالْحَقِّ - ذَالِكَ مَا كُنْتَ مِنْهُ تَحِيْدُ
অর্থ: মৃত্যুর সাকারাত (মৃত্যুকালীন কষ্ট) সত্যভাবেই উপস্থিত হয়েছে। এ হচ্ছে তাই যা থেকে তুমি পালিয়ে বেড়াতে)। (পবিত্র সূরা ক্বাফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯)
বারবার তিনি এ আয়াত শরীফটি আওড়াচ্ছেন আর কাঁদছেন। ছুবহে ছাদিক্ব পর্যন্ত তিনি এভাবে কাটিয়ে দিলেন।
হযরত সা‘ঈদ বিন আবী সা‘ঈদ রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, একবার আমি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট ছিলাম। এমন সময় একজন লোক উনার নিকট আগমন করলো। লোকটি বললো, হে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি (নফল) রোযা কিভাবে রাখেন? তিনি উত্তর দিলেন, আমি ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) ও ইয়াওমুল খমীস (বৃহস্পতিবার) রোযা রাখি। লোকটি বললো, কেন? তিনি বললেন, এ দুই দিনে বান্দাদের আমলসমূহ উপরে উঠানো হয়। আমি পছন্দ করি রোযাদার অবস্থায় আমার আমল উপরে উঠুক।
শুয়াইব বিন দিরহাম আবু রাজা থেকে বর্ণনা করেন, আমি হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দুই চোখের নীচে পুরাতন ফিতার ন্যায় (দাগ) দেখেছি, উনার (অধিক মাত্রায়) ক্রন্দনের কারণে। (সিয়ারু আ’লামিন নুবালা) (চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












