ঘটনা থেকে শিক্ষা
হালাল হালালের দিকে আকর্ষণ করে এবং হারাম হারামের দিকে আকর্ষণ করে থাকে
, ২১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২১ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ মে, ২০২৫ খ্রি:, ৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
এ প্রসঙ্গে একটি ওয়াকেয়া বর্ণনা করা হয়, “জনৈক বুযূর্গ ব্যক্তির একজন মুরীদ ছিলো। সে অনেক অর্থ-সম্পদের মালিক ছিলো। তার ব্যবসা ছিলো বিরাট। সে বিভিন্ন ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় নিজ মুর্শিদের ছোহবত লাভের উদ্দেশ্যে খানকা শরীফ-এ হাযির হতো।
খানকা শরীফ উনার নিকটবর্তী সদর রাস্তার মোড়ে কিছু গরীব ও অন্ধ ভিক্ষুক জীবিকা অর্জনের জন্য সমবেত হতো। একদিন তাদের মধ্যে এক অন্ধ ব্যক্তিকে দেখে তার দয়ার উদ্রেক হলো। নিজের পকেট হতে পাঁচ টাকা বের করে তাকে দান করে সে ছোহবত লাভের উদ্দেশ্যে চলে গেলো। যথারীতি পরের দিন উক্ত মুরীদ শায়েখের ছোহবতে আসার সময় খানকা শরীফ উনার নিকটবর্তী হলে ওই স্থানেই উক্ত অন্ধ ফকীরের প্রতি তার দৃষ্টি পতিত হলো। সে শুনতে পেলো, উক্ত অন্ধ অপর একজন অন্ধ ব্যক্তিকে বলছে, দেখো, গতকাল এক ব্যক্তি আমাকে পাঁচ টাকা হাদিয়াস্বরূপ দিয়েছে। যা নিয়ে আমি শরাবখানায় গিয়েছি। শরাব পান করেছি এবং আনুষঙ্গিক খারাপ কাজগুলো করেছি।
তা শুনে মুরীদ আশ্চর্য হলো কিন্তু তাকে কিছু না বলে ঘটনাটি মুর্শিদ ক্বিবলা উনাকে জানালো। হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা তিনি তা শুনে কিছু না বলে অন্য প্রসঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পর তিনি উক্ত মুরীদকে একটি কাঁচা টাকা দিয়ে বললেন, “তুমি বাড়ীতে চলে যাও। পথে ওই মোড়ের মধ্যে দেখতে পাবে এক ব্যক্তি চাদর পরিহিত অবস্থায় রাস্তা অতিক্রম করতেছে। তাকে এই টাকাটি দিবে এবং তাকে অনুসরণ করে তার গতিবিধি লক্ষ্য করবে। ”
শায়েখের আদেশ পেয়ে ওই মুরীদ বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হলো এবং উনার বর্ণনা মত মোড়ের মধ্যে এক ব্যক্তিকে গায়ে চাদর জড়ানো অবস্থায় রাস্তা অতিক্রম করতে দেখতে পেলো। তখন সে দ্রুত গতিতে তার নিকটবর্তী হলো এবং কাঁচা টাকাটি তাকে দিলো। টাকাটি হাতে নিয়ে উক্ত ব্যক্তি তাকে কিছু না বলেই চলতে শুরু করলো। কিছু দূর গিয়ে এক জঙ্গলের নিটকবর্তী হলো এবং চাদরের ভিতর হতে কি যেন বের করে ফেলে দিলো। অতঃপর আবার চলতে লাগলো। কিছু দূর গিয়ে এক বাজারে ঢুকে ওই টাকা দিয়ে খাদ্য-সামগ্রী এবং প্রয়োজনীয় কেনা-কাটা করে বাড়ীর দিকে পথ ধরলো। আর সেই মুরীদ কিছু না বলে সবকিছু দেখেই চললো।
লোকটি একটি বাড়ীর নিকটবর্তী হলে সে তার নিকট গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, “হে ব্যক্তি! তুমি তোমার চাদরের ভিতর হতে কি বের করে জঙ্গলে ফেলে দিলে? আর কেনই বা তুমি এতো দ্রুত গতিতে রাস্তা অতিক্রম করলে?” তখন লোকটি বললো, “দেখো! আমি আজ তিনদিন হতে না খাওয়া। অনেক কোশেশ করেও জীবন ধারণের জন্য কোন প্রকার খাবারের ব্যবস্থা করতে পারিনি। এজন্য রাস্তায় পরে থাকা একটি মরা হাঁস পেয়ে তুলে নিলাম। ভাবলাম, এমতাবস্থায় জীবন রক্ষার্থে আমার জন্য মরা হাঁসের গোশত খাওয়া মুবাহ। তবে ব্যাপারটি কোন লোকের গোচরীভূত হওয়া সঙ্গত মনে করলাম না। গোপনীয়তা বজায় রাখার উদ্দেশ্যেই চাদরের নীচে রেখে অতি দ্রুত গতিতে রাস্তা অতিক্রম করছিলাম; কিন্তু আপনি যখন হাদিয়া দিলেন তখন সে ওজর বা অক্ষমতার অবসান হলো এবং মৃত হাঁসের গোশত খাওয়া জায়িয হবে না বিধায় তা জঙ্গলে ফেলে দিলাম এবং বাজার হতে খাদ্য-দ্রব্য কিনে নিলাম। ”
লোকটির মুখে এরূপ জাওয়াব শুনে তাকে আর কিছু বলা সমীচীন মনে করলো না। সুতরাং তাকে কিছু না বলে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হলো। মুরীদ পরের দিন আবার শায়েখের ছোহবতে আসলো। শায়েখ তাকে দেখে বললেন, “তুমি গতকাল কি দেখতে পেলে। ” তখন মুরীদ আদ্যোপান্ত ঘটনা খুলে বললো। সব শুনে মুর্শিদ ক্বিবলা তিনি বললেন, “কিছু বুঝতে পেরেছো?” মুরীদ বললো, “পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারিনি। ”
মুর্শিদ ক্বিবলা তিনি বললেন, “দেখো! তোমার টাকা ছিলো হারাম পন্থায় উপার্জিত। এ জন্যই সে হাদিয়া অন্ধ ফকিরকে হারাম তথা গুনাহের কাজের প্রতি প্রেরণা যুগিয়েছে। আর আমার টাকা ছিলো হালাল পন্থায় উপার্জিত। যার ফলে উক্ত ব্যক্তিকে হারাম খাওয়া হতে বিরত রেখে হালালের পথে সাহায্য করেছে। এজন্য সে হারাম থেকে বেঁচে গেছে।
কাজেই হাল যামানায় যে সমস্ত তথাকথিত মুফতী-মুহাদ্দীছ, শাইখুল হাদীছ, শাইখুত তাফসীর, নামধারী ছূফী-দরবেশ, পীর-মাশায়িখ তাবত হারাম কাজে লিপ্ত হয়েছে; তা যে সে হারাম পন্থায় অর্জিত সম্পদ তথা হারাম হাদিয়া ভোগের কারণে তা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির-মুশরিকদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা জায়েয নেই
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: ভারতের মুসলিম নাম পরিবর্তন
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩১)
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ফিক্বাহ বা ফতওয়ার সকল কিতাবেই গান-বাজনা, বাদ্য-যন্ত্র ইত্যাদিকে হারাম ফতওয়া দেয়া হয়েছে
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুলত্বানুল হিন্দ, কুতুবুল মাশায়িখ, মুজাদ্দিদুয যামান, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল, হাবীবুল্লাহ সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৬৪)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে গরুর গোস্ত শি‘আরুল ইসলাম (১১)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
অসংখ্য হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত- প্রাণীর ছবি হারাম
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (৩০)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)