মন্তব্য কলাম
২০৫০ সালের মধ্যেই মুসলমানের সংখ্যা সারা বিশ্বে প্রথম হবে হিন্দুত্ববাদী ভারতেও দিন দিন হিন্দুদের সংখ্যা কমে, মুসলমানের সংখ্যা বাড়ছে তবে হিন্দুত্ববাদী ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার হতো আরো বহুগুণ হিন্দুত্ববাদী ভারতে জোর করে মুসলমানদের বন্ধ্যা করে দেয়া হয়
, ১০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ৭ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ৬ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ২২ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম

মুসলমানদের ভাই বলে সম্বোধনকারী এবং মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বলে প্রচারিত ইন্দিরার শাসনামলে এক মেওয়াত অঞ্চলেই সরকারী হিসেবেই ৮০ লাখ পুরুষকে বন্ধ্যাকরণ করা হয়
সমগ্র ভারতে বন্ধ্যা করা হয় কোটি কোটি ভারতীয় মুসলমানের
মুসলমানদের জন্য ইসরাইলের পর সবচেয়ে বড় নির্মম, নিষ্ঠুর দেশ- ভারত
অথচ ভারত বাঁচে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমানদের টাকায়
মুসলমানরা ব্যবস্থা নিলেই ভারত ইসরাইল সব নাস্তানুবাদ হতে পারে
মুসলিম বিশ্ব সজাগ হবে কবে?
আধুনিক সভ্যতাকে গড়ে তোলার পিছনে মুসলমানদের অবদান বিশাল। রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ধারাকে যুগ যুগ ধরে প্রভাবিত করেছে ইসলাম, ইতিহাস সেই কথাই বলে। তবে সারা বিশ্বের নিরিখে দেখলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধর্ম বিশ্বের মধ্যে অগ্রবর্তী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এখানে সংখ্যাতত্ত্বের কথাই বলা হচ্ছে। আর সেই হিসেবে ২০৫০ সালের মধ্যে ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শীর্ষে থাকবেন মুসলিমরা।
খ্রিস্টধর্মের বাড়বাড়ন্তের আগে ইউরোপ জুড়ে পেগ্যানদের (মূর্তিপূজক) সংখ্যাধিক্য ছিল। পরে গত প্রায় ২ হাজার বছর ধরে সেই স্থানে ছিলো খ্রিস্টানরা। বর্তমান বিশ্বে ‘সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা ধর্ম’ হল ইসলাম। তেমনটাই জানিয়েছে মার্কিন জনমত জরিপ ও গবেষণা সংক্রান্ত সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টারের। ওই সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, এ মুহূর্তে বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত বাড়তে থাকা ধর্ম হল ইসলাম। এভাবে চলতে থাকলে ২০৭০ সালের মধ্যে মুসলিম জনসংখ্যা টপকে যাবে খ্রিস্টান জনসংখ্যাকে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের (ইএসি-পিএম) একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে যে, ১৯৫০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ভারতে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মের (হিন্দু) জনসংখ্যার ভাগ শতকরা সাত দশমিক আট ভাগ হ্রাস পেয়েছে।
১৯৫০ সালে সেই সময়ে ভারতে ছিলেন ৯.৮৪ শতাংশ মুসলিম। মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে ৬৫ বছরে। যদিও প্রকৃত হিসাব আরো অনেক বেশি।
অথচ বিশ্ব থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধরা হেন কোনো অপচেষ্টা নেই, যা চালাচ্ছে না। যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা খ্রিস্টান দেশগুলো ইসলাম ও মুসলমানদের জঙ্গী এবং সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে এবং তা দমন করার নামে ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, লিবিয়ার মতো সমৃদ্ধ মুসলমান দেশ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা সন্ত্রাস দমনের কথা বললেও এর নেপথ্যে যে ইসলাম ও মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা কাজ করছে, তা এখন সবার কাছে পরিষ্কার।
এমনকী তারা ভারতের কোটি কোটি মুসলমান পুরুষকে জোর করিয়ে বন্ধ্যাও করিয়েছে।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তাওয়া গ্রামের মতো অনেক অঞ্চল ছিল বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু। কারণ মুসলিমদের জন্মহার তুলনামূলক বেশি ছিল।
আরো ৫০ বছর আগের কথা। তখন ভারতে চলছিল ইন্দিরা গান্ধীর শাসন। এ সময় জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় পুরো দেশে। হরণ করা হয় নাগরিক স্বাধীনতা।
আটক করা হয় হাজারো বিরোধী নেতাকে। দমন করা হয় গণমাধ্যমকে। আর বিশ্বব্যাংক ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে শুরু হয় জোরপূর্বক বন্ধ্যাকরণ কর্মসূচি।
তখন ১৯৭৬ সালের নভেম্বর। শীতের এক নীরব রাতে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের মেওয়াত অঞ্চলের উত্তাওয়া গ্রামে হানা দেয় পুলিশ বাহিনী। গ্রামটি নয়াদিল্লি থেকে মাত্র ৯০ কিলোমিটার দূরের।
ঘোষণা করা হয়, প্রাপ্তবয়স্ক সব পুরুষকে মাঠে একত্রিত হতে হবে। এ সময় সবাই যখন পালিয়ে বেড়াচ্ছিল, নিজের ঘরে ঠায় বসে ছিলেন মোহাম্মাদ দীনু।
দীনু ও তার ১৪ জন বন্ধুকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় একটি অব্যবস্থাপিত শিবিরে। দীনুর ভাষায়, ‘এটি ছিল এমন একটি ত্যাগ-সংগ্রাম, যা তাদের গ্রাম ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করেছে।
যখন সবাই পালিয়ে যাচ্ছিল, তখন কিছু বয়োজ্যেষ্ঠ বুঝেছিলেন যে যদি কেউ ধরা না পড়ে, তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে। তাই কয়েকজনকে তুলে দেয়া হয়েছিল।
আমাদের আত্মত্যাগে গ্রামটি বেঁচে গেছে। আজ এই গ্রাম মানুষে পরিপূর্ণ। ’
দীনুর বয়স এখন ৯০-এর কোটায়। জরুরি অবস্থার ৫০ বছর পূর্তিতে দীনুই উত্তাওয়ার একমাত্র জীবিত ব্যক্তি যাকে সরাসরি এই অভিযানের অংশ হিসেবে লক্ষ্য করা হয়েছিল।
১৯৭৬ সালের এক বছরে প্রায় ৬০ লাখ পুরুষসহ মোট ৮০ লক্ষেরও বেশি পুরুষকে জোর করে ভ্যাসেকটমি করানো হয়েছিল। ভুল চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছিল প্রায় ২ হাজারজনকে।
ভারত ১৯৫২ সালে স্বাধীনতার মাত্র পাঁচ বছর পর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে জাতীয় পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচি চালু করে। তখন পরিবারের সন্তান সংখ্যা দুইয়ের বেশি না রাখতে উৎসাহ দেয়া হতো।
৬০-এর দশকে যখন গড় জন্মহার ছিল প্রতি নারীতে প্রায় ছয় সন্তান, তখন সরকার আরো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ নেয়।
ইন্দিরা গান্ধীর প্রশাসন ভারতের জনসংখ্যাকে অর্থনীতির ওপর বোঝা মনে করতো, যা তখন ৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল। পশ্চিমাও এই ধারণায় সমর্থন দেয়।
বিশ্বব্যাংক ৬৬ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়, আর যুক্তরাষ্ট্র খাদ্য সহায়তা নির্ভর করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের সাফল্যের ওপর।
জরুরি অবস্থায় এই কর্মসূচি চরমে ওঠে। কর্মকর্তাদের নির্দিষ্ট কোটা দেয়া হয়।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না করলে বেতন বন্ধ বা চাকরিচ্যুতির হুমকি দেয়া হতো। অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও সেচের পানি বন্ধ করে গ্রামগুলোকে বাধ্য করা হতো।
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ উত্তাওয়া গ্রামের মতো অনেক অঞ্চল ছিল বিশেষভাবে লক্ষ্যবস্তু। কারণ মুসলিমদের জন্মহার তুলনামূলক বেশি ছিল।
দীনুর পাশের গলিতে ১৩ বছর বয়সী মোহাম্মদ নূর খাটে ঘুমাচ্ছিলেন তার বাবার কোলে। পুলিশ ঘোড়ায় চড়ে এসে বাড়িতে হানা দেয়। তার বাবা জঙ্গলে পালিয়ে যান, আর নূর ভেতরে লুকিয়ে পড়ে।
নূর বলেন, ‘তারা দরজা ও আসবাবপত্র ভেঙে ফেলে। এমনকি ময়দার সাথে বালিও মিশিয়ে দেয়।
গ্রামে একটি বাড়িও ছিল না, যেখানে পরবর্তী চার দিন খাবার রান্না করা গেছে। ’ পরে নূরকে ধরে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। বয়স ১৫ বছরের নিচে হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এই ঘটনা জন্ম দিয়েছে একটি লোককাহিনীরও। ঘটনাটি তৎকালীন গ্রামপ্রধান আব্দুল রেহমানকে ঘিরে।
নূর ও তার বন্ধু তাজামুল মোহাম্মদ বলেন, ‘বাইরের কেউ হয়তো তাকে মনে রাখে না। কিন্তু আমরা তাকে মনে রাখি। দুজনেরই বয়স এখন ৬৩। ’
তাজামুল বলেন, ‘উত্তাওয়ায় অভিযান চালানোর আগে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা গ্রামের প্রধান আব্দুল রেহমানের কাছে এসে কিছু পুরুষকে তুলে দেয়ার অনুরোধ করেন।
কিন্তু রেহমান তাতে রাজি হননি। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ‘আমি এই গ্রাম থেকে কোনো পরিবারকে দিতে পারি না। ’ পাশে বসে থাকা নূর আবেগভরে মাথা নাড়েন।
স্থানীয় কিংবদন্তি অনুযায়ী, রেহমান কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘আমি আমার এলাকা থেকে একটি কুকুরও দেব না, আর তোমরা আমার কাছ থেকে মানুষ চাচ্ছো? কখনও না। ’
নূর বলেন, তবে তার এই দৃঢ় অবস্থানও গ্রামকে রক্ষা করতে পারেনি। অভিযান শেষে উত্তাওয়ায় নেমে আসে শোক।
‘যারা পালিয়েছিল, বা যাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তারা বহুদিন গ্রামে ফেরেনি। গ্রামটি হয়ে উঠেছিল একেবারে কবরস্থানের মতো-কেবল নীরবতা। ’
পরের বছরগুলোতে এর প্রভাব আরো ভয়াবহ রূপ নেয়। পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো উত্তাওয়ার পুরুষদের সাথে মেয়ে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
স্থানীয় সমাজকর্মী কাসিম বলেন, অনেকেই এই মানসিক আঘাত থেকে আর কখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। মানসিক চাপ ও সামাজিক নিষেধাজ্ঞা তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে। ’
বর্তমানে ভারতে আর কোনো জোরপূর্বক জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি নেই। প্রজনন হার এখন গড়পড়তা প্রতি নারীতে দু’টি সন্তানের সামান্য ওপরে।
তবুও বিশ্লেষকদের মতে, ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থার সময় যে ভয়ভীতির পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা আজ নতুন রূপে ফিরে এসেছে।
৭৫ বছর বয়সী সমাজবিজ্ঞানী শিব বিশ্বনাথন বলেন, জরুরি অবস্থা কর্তৃত্ববাদের ভিত্তি গড়ে দেয়। ১৯৭৫ সালের ১২ জুন এলাহাবাদ হাইকোর্ট ইন্দিরা গান্ধীকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ছয় বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা করে। ১৩ দিন পর তিনি জরুরি অবস্থা জারি করেন।
বিশ্বনাথন বলে, ‘স্বৈরাচারদের অবহেলা থেকেই তৈরি হয় জরুরি অবস্থা, যার কোনো অনুশোচনা ছিল না। আসলে ওই জরুরি অবস্থাই আজকের জরুরি অবস্থা তৈরি করেছে। এটি পরবর্তী ভারত গঠনের ভিত্তি। ’
তৎকালীন ইন্দিরা গান্ধীর ভক্তরা তাকে দেবী দুর্গার সাথে তুলনা করতো, যেমন আজ মোদীর অনুগামীরা তাকে দেবতা বিষ্ণুর সাথে তুলনা করে থাকে। বিশ্বনাথনের মতে, সেই সময় ব্যক্তিত্বকেন্দ্রিক সংস্কৃতি দেশকে ভাবনা-চিন্তা থেকে বঞ্চিত করে তোলে।
তিনি আরো বলেন, ইন্দিরা থেকে মোদি পর্যন্ত, সবাই গণতন্ত্রের মুখোশে এক কর্তৃত্ববাদী ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন।
২০১৪ সালে মোদির ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজনৈতিক বিরোধীদের আটক, বাকস্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও সাংবাদিকদের দমন ইত্যাদি কারণে ভারতের গণতন্ত্র সূচক ও সংবাদমাধ্যম স্বাধীনতার র্যাংকিং দ্রুত কমেছে।
ফ্রি স্পিচ কালেক্টিভ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা গীতা সেশু বলে, ‘তখন যেমন গণমাধ্যম ক্ষমতার সামনে নতি স্বীকার করেছিল, আজও ঠিক তাই। পার্থক্য শুধু এটুকু যে তখন নাগরিক স্বাধীনতা আইন দিয়ে স্থগিত করা হয়েছিল। আর এখন আইনকে অস্ত্র বানিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে। ’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক অসীম আলী বলেন, ‘জরুরি অবস্থার সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো একটি শক্তিশালী নির্বাহী নেতৃত্বের সামনে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ন্ত্রণ কত সহজে ভেঙে পড়ে। ’ তবে তার মতে, আরেকটি উত্তরাধিকার ছিল শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া।
১৯৭৭ সালে ইন্দিরা গান্ধী ও তার কংগ্রেস দলকে জনগণ ব্যাপক ভোটে পরাজিত করে। বিরোধীরা তাদের প্রচারণায় সরকারের দমন-পীড়ন, বিশেষত জোরপূর্বক নির্যাতন তুলে ধরেছিল।
আলীশ বলেন, ‘৭০-এর দশকের মতোই ভারতের গণতন্ত্র মোদির পরবর্তী সময়ে পুনরুত্থিত হতে পারে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। ’
১৯৭৬ সালের সেই রাতে দীনুর মনে পড়ে, প্রিজনভ্যানে বসে তিনি ভাবছিলেন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সালিমার কথা, যিনি তখন বাড়িতে ছিলেন। দীনু বলেন, ‘অনেক অবিবাহিত বা নিঃসন্তান পুরুষ পুলিশকে বলছিল, আমাদের ছেড়ে দাও। কিন্তু কাউকে ছাড়া হয়নি। ’
আট দিন পুলিশ হেফাজতে থাকার পর মোহাম্মদ দীনুকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তাওয়ার কাছের শহর পালওয়ালের একটি নির্বীজন শিবিরে, যেখানে তার ভ্যাসেকটমি করা হয়। প্রায় এক মাস পর গ্রামে ফিরে আসার পর তার স্ত্রী সালিমা জন্ম দেন তাদের একমাত্র সন্তানের একটি পুত্র।
আজ দীনুর রয়েছে তিন নাতি ও একাধিক প্রপৌত্র-প্রপৌত্রী। দীনু হেসে বলেন, আমরাই এই গ্রামকে বাঁচিয়েছি। নইলে ইন্দিরা এই গ্রামকে আগুনে পুড়িয়ে দিতো। ’
ভারতের মুসলমান সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ বহুস্তরবিশিষ্ট ও জটিল। সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নানা উপাদানের মিলিত প্রভাবে এই সম্প্রদায়ের ওপর যে নির্যাতন ও বৈষম্য দেখতে পাওয়া যায়, তা শুধু ব্যক্তিগত নয়; বরং কাঠামোগতও।
ভারতের মুসলমানরা এখন নিজভূমে পরবাসী হয়ে আছে। মোদি সরকার ভারত থেকে মুসলমানদের বিতাড়নে উগ্র হিন্দুদের যেমন লেলিয়ে দিয়েছে, তেমনি ভারতে শত শত বছর ধরে মুসলমান শাসনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য মুছে ফেলার উদ্যোগ নিয়েছে। ঐতিহাসিক মসজিদ ভাঙ্গা ও বিভিন্ন স্থাপত্যকর্ম ধ্বংস করা থেকে শুরু করে মুসলমানদের নামে যেসব সড়ক রয়েছে, তা বদলে হিন্দুদের নামে রাখা হচ্ছে। কাশ্মীর থেকে মুসলমানদের সব ধর্মীয় ও সুফি ঐতিহ্য ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে। মায়ানমার ছাড়া এমন উগ্র ও প্রতিহিংসাপরায়ণ সাম্প্রদায়িক সরকার বিশ্বে আর দেখা যায় না। ভারত এমনই একটি দেশ, যেখানে ধর্মের ভিত্তিতে শহর ও গ্রামের এলাকা বিভক্ত হয়ে পড়েছে। মুসলমানদের আলাদা এলাকা নিয়ে বসবাস করতে বাধ্য করছে। একটি গণতান্ত্রিক দেশে ধর্মের ভিত্তিতে আলাদাভাবে বসবাস করার এমন নজির বিশ্বে খুব কমই রয়েছে। ভারতে মুসলমানদের অবস্থা থেকে বুঝতে অসুবিধা হয় না, সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের ভয়ে তারা কতটা ভীত অবস্থার মধ্য দিয়ে বসবাস করছে। উগ্র হিন্দুদের সবচেয়ে বেশি রোষ মুসলমানদের ওপর। শুধু উগ্র হিন্দু নয়, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মুসলমানরা নিগৃহীত হচ্ছে। দুঃখের বিষয়, মুসলমানদের ওপর ক্রমাগত হত্যা, নির্যাতন ও বিতাড়নের কাজ চললেও মানবাধিকারের ধ্বজাধারী যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাবিশ্ব বরাবরই নীরব ভূমিকা পালন করছে। অথচ, ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনীয়দের জন্য তাদের দরদের সীমা নেই। এর কারণ, তারা ইহুদি-খ্রিস্টান সর্বোপরি শ্বেতাঙ্গ। তারা ইউক্রেনের ইহুদী প্রেসিডেন্ট জেলনস্কিকে অস্ত্র ও বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। এমনকি যুদ্ধের মধ্যেও পশ্চিমা বিশ্বের সরকার প্রধানরা জেলনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছে। তাদের এই একপেশে মানবাধিকারের দরদ ভন্ডামী ছাড়া কিছু নয়। অন্যদিকে, ভারতে যে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ক্রমাগত মুসলমানদের হত্যা, নির্যাতন ও বিতাড়ন কার্যক্রম চলছে, তা নিয়ে তাদের কোনো শব্দ নেই। আরও দুঃখের বিষয়, আরব বিশ্ব ও মুসলমানদের বৈশ্বিক সংস্থা ওআইসিও নীরব ভূমিকা পালন করছে। ভারতের মুসলমানদের রক্ষায় তারা কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ, এমনকি প্রতিবাদ পর্যন্ত করছে না। অথচ, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে লাখ লাখ ভারতীয় হিন্দু কর্মরত এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভারত তাদের ওপর অনেক ক্ষেত্রে নির্ভরশীল। দেশগুলো যদি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় উগ্র হিন্দুদের দ্বারা মুসলমান হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন ও বিতাড়নের ক্ষেত্রে কঠোর হুঁশিয়ারি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তাহলে তাদের কথা উপেক্ষা করার সাধ্য ভারত সরকারের নেই।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নির্মম হিন্দুত্ববাদীরা, নিষ্ঠুর বৌদ্ধরা, মহা জালিম খ্রীষ্টানরা যে নির্বাচনী পদ্ধতি (পি.আর) তাদের সুবিধার জন্য চেয়েছে সেই একই পি.আর পদ্ধতির নির্বাচন চাচ্ছে জামাত, চর্মনাই সহ তথাকথিত ইসলামী দলগুলো।
১২ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার অনবদ্য তাজদীদ ‘আত-তাক্বউইমুশ শামসী’ সম্পর্কে জানা ও পালন করা এবং শুকরিয়া আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরয। মুসলমান আর কতকাল গাফিল ও জাহিল থাকবে?
১১ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রকৃত অর্থে মূল্যস্ফীতি কী কাঙ্খিতভাবে কমেছে? মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের জন্য সম্যক ধারণা সহজ করা হয় না কেন? মূল্যস্ফীতি কতভাবে মানুষের পকেট কাটে তা সর্বজনবিদিত নয় কেন?
১০ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন ক্ষতিকারক এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে যাচ্ছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
০৯ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দেশবিরোধী স্টারলিঙ্কের হাতে ইন্টারনেট-এর গোপনীয়তা এবং এর বাণিজ্য তুলে দেয়া হয়েছে। এবার মোবাইলের মালিকানা ৮০ ভাগ পর্যন্ত পছন্দের বিদেশী কোম্পানীর হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। দেশের ব্যবসায়ীদের সর্বস্বান্ত করে বিদেশী বেনিয়াদের প্রতিষ্ঠা করা তথা নতুন ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানী খোলাই কী এই সরকারের ঘাপটি মেরে থাকা এজেন্টদের উদ্দেশ্যে?
০৮ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কেবল জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলাই নয়, প্রথমেই এর দূত হিসেবে আত্মস্বীকৃত সমকামীকে ঢাকায় পাঠাচ্ছে জাতিসংঘ।
০৫ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
০৪ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাংবাদিক মহল, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, সমালোচক মহল সবাই প্রধান উপদেষ্টা ও অন্তর্বর্তী সরকারকে ভয়াবহ মিথ্যাবাদী ও ষড়যন্ত্রকারী বলে প্রচার করছে। ‘অন্তর্বর্তী সরকার বেকায়দায় পড়লে- ‘না’ করে আর সুযোগ বুঝে ঠিকই মার্কিনী এজেন্ডা তথা দেশ ও ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে’ বলে অভিযোগ উঠেছে
০২ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরা গবেষণার দিকে আগ্রহী না হয়ে বিসিএস পরীক্ষায় আগ্রহী হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তহবিল বা অর্থায়ন আসার প্রক্রিয়াটি সরকারের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের মাধ্যমে সম্পন্ন হতে হবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক স্থাপন হয়নি সব বাধা দূর করে জীবন-জীবিকা বান্ধব সমৃদ্ধ গবেষণার জন্য যথাযথ তৎপরতা ও প্রচেষ্টা একান্ত দরকার
০১ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফকির- ‘আমেরিকার’ প্রকৃত ঋণ শত ট্রিলিয়ন ডলারেরও বেশী দেউলিয়া আমেরিকা, ঋণ করেই যুদ্ধের জুয়া খেলছে আর মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম শাসকরা আমেরিকান রিকন্ডিশন অস্ত্র কিনে তার জুয়ায় রসদের, যোগান দিয়েই চলছে (নাউযুবিল্লাহ)
৩০ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পানিবায়ু তহবিল: জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগই শেষ কথা না বরং আই.এম.এফ এবং চীনা ঋণের ফাঁদের মতই এটা এক মহা প্রতারণাযুক্ত ফাঁদ এ সম্পর্কে চাই জোরদার সচেতনতা
২৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী তথা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ আর দেশীয় প্রথম আলো গং প্রচারণা চালাচ্ছে এবং প্রেক্ষাপট তৈরীর চেষ্টা করছে- “আরাকান আর্মির সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করতে এবং তথাকথিত মানবিক করিডোর দিতে” বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, মুসলমান তথা রোহিঙ্গাদের স্বার্থ তাদের কাছে তুচ্ছ, ফেলনা।
২৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)