“আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে বিরোধিতাকারীদের আপত্তির জবাব
, ০৭ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১২ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১১ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
قَالَ حَضْرَتْ عَلِىُّ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ: مَنْ عَظَّمَ مَوْلِدَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَكَانَ سَبَبًا لّقِرَائَتِهٖ لايَـخْرُجُ مِنَ الدُّنْيَا اِلَّا بِالْاِيْـمَانِ وَيَدْخُلُ الْـجَنَّةَ بِغَيْرِ حِسَابٍ.
অর্থ : “খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন, আসাদুল্লাহিল্ গালিব, বাবুল ইল্ম, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস্ সালাম তিনি বলেন, যিনি পবিত্র মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (অর্থাৎ নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস ও তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়) উনাকে বিশেষ সম্মান-মর্যাদা দিলেন এবং এ উদ্দেশ্যে পবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিল ইন্তিজাম করলেন, তিনি অবশ্যই পবিত্র ঈমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবেন এবং বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবেন। ” সুবহানাল্লাহ! ......”
এই হাদীছ শরীফসমূহ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের স্পষ্ট দলীল। যা মেনে নিলেই সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বিরোধিতার সকল দরজা বন্ধ হয়ে যায়। আর ওহাবী বাতিল ফিরক্বা যেহেতু বিষয়টা মেনে নিবে না তাই তারা বিভিন্ন মিথ্যাচার, কারচুপি, ছলনার আশ্রয় নিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন বই পুস্তক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে চালাচ্ছে অপপ্রচার।
পূর্ববর্তী নবী-রসূল আলাইহিস সালাম যেমন হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উপর নাযিলকৃত তাওরাত শরীফ, হযরত দাঊদ আলাইহিস সালাম উনার উপর নাযিলকৃত যাবূর শরীফ ও হযরত রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উপর নাযিলকৃত ইনযীল শরীফ ইহুদী, সাবেঈন ও নাছারাদের মন মতো হয়নি। তাই তারা তাদের চাহিদানুযায়ী উক্ত পবিত্র আসমানী কিতাবগুলোর বিকৃতি ঘটিয়ে অর্থাৎ নিজেদের মনগড়া অভিমত উক্ত পবিত্র কিতাবে ঢুকিয়ে মূল আসমানী কিতাবগুলোর অস্তিত্বই নষ্ট করে ফেলেছে। মন মতো না হওয়ায় বাদ দিয়ে দিয়েছে অনেক কিছুই।
মূলতঃ কিতাব বিকৃতি করার বা কিতাব নিয়ে মিথ্যাচারের অভ্যাস কাফিরদের বহু পুরানো অভ্যাস। নিজেদের ধর্মগ্রন্থের পাশাপাশি মুসলমান উনাদের অনেক কিতাবও তারা কুটকৌশলে বিকৃত করে ফেলেছে, গায়েব করে দিয়েছে অনেক দলীল।
আমরা সবাই ইমামে আ’যম ইমাম হযরত আবূ হানীফা রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “ফিকহে আকবর” কিতাবের নাম শুনেছি। বর্তমান বিশ্বে উনার সুপ্রসিদ্ধ ফিকহে আকবরের অনুবাদে সুকৌশলে ঢুকিয়ে দিয়েছে, “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আব্বা-আম্মা আলাইহিমাস সালাম উনারা কাফির অবস্থায় ইন্তিকাল করেছেন। ” নাঊযুবিল্লাহ!! নাঊযুবিল্লাহ!! নাঊযুবিল্লাহ!!
অথচ ফিক্বহে আকবরের মূল পা-ুলিপিতে আছে, “কাফির অবস্থায় বিছালী শান প্রকাশ করেননি। ” কিন্তু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার শত্রুরা মানুষের আক্বীদা নষ্ট করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে “না” শব্দটা মুছে দিয়েছিলো যা পরবর্তীতে অবশ্য ধরা পড়েছে।
৬৫৬ হিজরীতে যখন হালাকু খাঁ বাগদাদ শরীফ জ্বালিয়ে দেয় এবং ৮০ হাজার মুসলমানকে শহীদ করে তখন “ফিক্বহে আকবর” পা-ুলিপি; আমীরুল মু’মিনীন, জামিউল কুরআন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার শাহাদাতের রক্তমাখা স্বহস্তে লিখিত কুরআন শরীফ এবং অন্যান্য মূল্যবান কিতাব সমরখন্দে নিয়ে যায়। যখন রাশিয়ানরা সমরখন্দ দখল করে তখন কিতাবগুলো পিটার্সবার্গে স্থানান্তরিত করা হয় এবং যত্ন সহকারে রক্ষিত হয়। শামসুদ্দিন শামী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার “কামাসুল আলম” কিতাবে সমরখন্দের ইতিহাসে এ সমন্ধে বিস্তারিত লিখেছেন।
এছাড়া বিখ্যাত হাদীছ শরীফ উনার কিতাব “মুছান্নাফে আবী শায়বা” কিতাবে নতুন সংস্করণে হযরত আসওয়াদ আমিরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত ফরয নামাযের পর হাত তুলে দোয়া করার পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে رفع يديه অর্থাৎ হাত উত্তোলন করেছেন- এ অংশটি বাদ দেয়া হয়েছে।
অথচ পুরানো ছাপায় উক্ত অংশ স্পষ্টই রয়েছে। এভাবে বাজারে প্রকাশিত অনেক কিতাবেই সংযোজন-বিয়োজনের অসংখ্য ঘটনা দৃশ্যমান হচ্ছে। আর আজ যারা “নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের বিরোধিতায় নেমেছে, তারাও বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেই নেমেছে। তারা বিরোধিতা করতে গিয়ে মিথ্যা পা-ুলিপি রচনা করেছে। “নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাবের প্রকাশনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করেছে। আজ যখন সমগ্র পৃথিবীর অনেক হক্ব তালাশী সুন্নী মুসলমান উনারা দ্বিধা ও সংশয়ে ভুগছিলেন, পর্যাপ্ত দলীলের অভাবে এই কিতাব নিয়ে কথা বলতে পারছিলেন না। সেই সময় সমগ্র পৃথিবীর একমাত্র ইমাম ও হক্বের আলোকবর্তিকা মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম , ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বত, মুহইউস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে মিল্লাত ওয়াদ দ্বীন, হাকিমুল হাদীছ, হুজ্জাতুল ইসলাম, রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি পৃথিবীর যমীনে একমাত্র ব্যক্তিত্ব যিনি এই বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ ও স্পষ্ট দলীলের মাধ্যমে “নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম” কিতাব নিয়ে যাবতীয় আপত্তির চূড়ান্ত খ-নমূলক জবাব প্রকাশ করেছেন। বক্ষমান কিতাবে এসব মিথ্যাবাদীদের ভয়ানক মিথ্যাচার ও আপত্তি খন্ডন করে প্রতিটি আপত্তির ধারাবাহিক জবাব তুলে ধরা হবে। ইনশাআল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












