তাইয়াম্মুমের জরুরী মাসায়িল
১. মাটিতে কোনো নাজাসাত পতিত হয়ে তা যদি শুকিয়ে যায় এবং দুর্গন্ধও চলে যায়, তবে উক্ত মাটি পাক এবং তার উপর নামায পড়া জায়িয হবে। কিন্তু সেই মাটি দ্বারা তাইয়াম্মুম জায়িয হবে না।
২. যদি কোনো স্থানে কাদা বা ভিজা মাটি ব্যতীত অন্য কোনো জিনিস না পাওয়া যায়, তবে তা কাপড়ে বা শরীরে মেখে, শুকানোর পর উক্ত মাটি দ্বারা তাইয়াম্মুম করাই উত্তম যদিও কাদা মাটি দ্বারা তাইয়াম্মুম জায়িয রয়েছে।
আর যদি নামাযের ওয়াক্ত ফউত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে কাদা মাটি দ্বারাই তাইয়াম্মুম করে নামায আদায় করতে হবে, নামায ক্বাযা করা যাবে না।
৩. বন্ বাকি অংশ পড়ুন...
যেসব ওজরের কারণে তাইয়াম্মুম জায়িয
১. যে ব্যক্তি পানি হতে এক মাইল দূরে থাকে, সে শহরে কিংবা শহরের বাইরে থাকুক, মুসাফির কিংবা মুক্বীম হোক, তার জন্য তাইয়াম্মুম করা জায়িয। আর তা অপেক্ষা কম দূরে পানি থাকলে তাইয়াম্মুম জায়িয হবে না। যদি পানির স্থানে পৌঁছতে পৌঁছতে নামাযের ওয়াক্ত ফউত হবার সম্ভাবনা থাকে, তবে তাইয়াম্মুম করে নামায পড়তে হবে এবং পানির নিকট উপস্থিত হয়ে অজু করে পুনরায় নামায আদায় করতে হবে।
২. যদি লক্ষণ কিংবা পরীক্ষা দ্বারা অথবা কোনো পরহেযগার মুসলমান চিকিৎসকের কথায় দৃঢ় ধারণা হয় যে, পানি ব্যবহার করলে পীড়া বৃদ্ধি কিংবা পীড়া উপশ বাকি অংশ পড়ুন...
তাইয়াম্মুমের শর্ত
১. নিয়ত করা,
২. পাক মাটি হওয়া,
৩. উভয় হাত মাটিতে মারা,
৪. পানির অভাব কিংবা পানি ব্যবহারে অক্ষম হওয়া,
৫. তিন অঙ্গুলির কম দ্বারা তাইয়াম্মুম না করা।
তাইয়াম্মুম ওয়াজিব হওয়ার শর্ত
১. মুসলমান হওয়া,
২. বুদ্ধিমান হওয়া,
৩. বালেগ/বালেগা হওয়া,
৪. হাদাছ (অজু ও গোসল উনাদের কারণ) বর্তমান থাকা,
৫. হায়িয বা মাসিক মাজুরতা না থাকা,
৬. নিফাস বা সন্তান প্রসবের পর মাজুরতা না থাকা,
৭. যেসব বস্তুর দ্বারা তাইয়াম্মুম জায়িয হয়, তা ব্যবহারে সক্ষম হওয়া।
যেসব বস্তুর দ্বারা তাইয়াম্মুম জায়িয
মাটি কিংবা মাটি জাতীয় পাক জিনিসের উপর তাইয়াম্মুম করা বাকি অংশ পড়ুন...
তাইয়াম্মুমের বর্ণনা
অজু বা গোসল করার প্রয়োজন হলে পানি পাওয়া না গেলে অথবা পানি আছে কিন্তু উহা ব্যবহার করলে কঠিন রোগ হওয়ার ভয় থাকলে অথবা রোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা থাকলে অথবা কুয়া থেকে পানি উঠানোর প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র না থাকলে অথবা শত্রুর ভয় থাকলে অথবা পুকুর নদী এক মাইল দূরবর্তীতে অবস্থিত ইত্যাদি কারণে অজু ও গোসলের পরিবর্তে তাইয়াম্মুম করতে হবে।
তাইয়াম্মুমের ফরয
তাইয়াম্মুমের ফরয তিনটি:
১. নিয়ত করা-
نَوَيْتُ اَنْ اَتَيَمَّمَ لِرَفْعِ الْـحَدَثِ وَاِسْتِبَاحَةً لِّصَّلٰوةِ وَتَقَرُّبًا اِلَى اللهِ تَعَالٰى
بِسْمِ اللهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْمِ وَالْـحَمْدُ لِلّٰهِ عَلٰى دِيْنِ الْاِسْلَا বাকি অংশ পড়ুন...
পট্টি বা ব্যান্ডেজের উপর মাসেহের বর্ণনা
পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لَا يُكَلِّفُ اللهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি সাধ্যের বাইরে কাউকে কষ্ট দেন না। ” (পবিত্র সূরা বাক্বারা : আয়াত শরীফ ২৮৬)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ভিত্তিতে পরিলক্ষিত হয় যে, কষ্ট লাঘবের জন্য যেমন মুজার উপর মাসেহ করা জায়িয; তদ্রুপ ক্ষত বা আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে পানি লাগলে যেহেতু আরো অধিক কষ্ট বা ক্ষতি হয়, সেজন্য জখমের পট্টির উপর মাসেহ করাও জায়িয।
মাসয়ালা:
১. পট্টির উপর মাসেহ তখনই জায়িয হবে, যখন সেই ক্ষতস্থানের উপর মাসেহ করলে ক্ষতি বাকি অংশ পড়ুন...
ঝুটার মাসায়িল
জিন-ইনসান কিংবা অন্য প্রাণী, কোনো প্রকার খাদ্য বা পানীয় বস্তু মুখে লাগিয়ে ত্যাগ করলে তাকে ঝুটা বা উচ্ছিষ্ট বলা হয়।
সর্বপ্রকার মানুষের ঝুটা পাক। তবে হাতে বা মুখে কোনো নাপাকী লেগে থাকলে, তাদের ঝুটা নাপাক হয়ে যাবে।
কুকুর, শূকর ও হিংস্র প্রাণীর ঝুটা নাপাক। এ সমস্ত প্রাণী কোনো পাত্রে মুখ দিলে সেটা কমপক্ষে তিনবার ধৌত করতে হবে। আর সাতবার ধৌত করা আফযল বা উত্তম। তন্মধ্যে প্রথমবার মাটির দ্বারা মেজে ফেলা আফযল বা উত্তম। হালাল পশু, যেমন- গরু, মহিষ, বকরী, ভেড়া, হরিণ ইত্যাদি এবং হালাল পাখি, যেমন- ময়না, তোতা, ঘুঘু, চড়ুঁই ইত্যাদির ঝ বাকি অংশ পড়ুন...
কূপের মাসায়িল
সাধারণতঃ কূপের পানি পাক। কিন্তু কূপে যখন কোনো প্রকার নাপাক জিনিস পতিত হয়, তা কম হোক কিংবা বেশি হোক অথবা কোনো প্রাণী মরে কূপে পতিত হয়, তখন তার সমস্ত পানি উঠিয়ে না ফেলে দেয়া পর্যন্ত উক্ত কূপ ও তার পানি পাক হবে না। এ অবস্থায় সমস্ত পানি উঠিয়ে ফেললে, কূপের পানি, কূপের ভিতরের চতুর্দিকস্থ দেয়াল, যে বালতি বা ডোল দিয়ে পানি উঠানো হয়েছে, সে বালতি বা ডোল এবং তার রশি (দড়ি) সবকিছুই পাক হয়ে যাবে। সমস্ত পানি উঠানোর অর্থ হলো- পানি তুলতে তুলতে যখন এরূপ হয় যে, বালতির অর্ধেক আর পূর্ণ হয় না, তখনই বুঝতে হবে কূপের সমস্ত পানি উঠানো হয়েছে।
কূপে ম বাকি অংশ পড়ুন...
পানি সম্পর্কিত মাসায়িল
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
৭. যে পানির মধ্যে কোনো পাক জিনিস পড়ায় তার রং, গন্ধ বা স্বাদ পরিবর্তন হয়ে গেছে, কিন্তু ওই জিনিস ওই পানিতে রান্না করা হয়নি, আর পানির তরলতা দূর হয়ে গাঢ়ও হয়ে যায়নি।
যেমন- বর্ষাকালে নদীর পানির সাথে বালু মিশ্রিত হয়ে থাকে বা পানির মধ্যে জাফরান পড়ে সামান্য কিছু রঙ্গিন হয়ে গেছে কিংবা সাবান বা অনুরূপ কোনো জিনিস পড়েছে। এসব পানির দ্বারা অজু-গোসল জায়িয হবে না।
৮. যদি কোনো জিনিস পানিতে দিয়ে সিদ্ধ করায় পানির রং, গন্ধ বা স্বাদ পরিবর্তন হয়ে যায়, তবে সে পানি দ্বারা অজু-গোসল জায়িয হবে না। যদি এমন কোনো জিন বাকি অংশ পড়ুন...
পানি সম্পর্কিত মাসায়িল
দুনিয়ায় বেঁচে থাকার জন্য পানি যেমনি একান্ত প্রয়োজন, ঠিক তেমনি পবিত্রতা হাছিলের জন্যও তা হচ্ছে প্রধান ও অন্যতম উপকরণ। যার মাধ্যমে মুসলমানগণ সর্বপ্রকার নাজাসাত এবং জানাবাত থেকে পবিত্রতা অর্জনকরতঃ এক আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দেগী করে থাকেন। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَيُنَزِّلُ عَلَيْكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ مَآءً لِّيُطَهِّرَكُمْ بِهٖ
অর্থ: এবং তিনি (মহান আল্লাহ পাক) তোমাদের পবিত্রতা হাছিলের জন্য আসমান থেকে পানি বর্ষণ করেন। (পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)
পানির প্রকারভেদ :
পানি প্রথম বাকি অংশ পড়ুন...
গোসলবিহীন অবস্থার হুকুম
যার উপর গোসল ফরয হয়েছে গোসলবিহীন অবস্থায় তার জন্য পবিত্র কুরআন শরীফ স্পর্শ করা, মসজিদে প্রবেশ করা হারাম। অবশ্য যদি করো মসজিদে পা রাখার একান্ত প্রয়োজন হয়, যেমন হয়তো মসজিদের হুজরা হতে বের হওয়ার পথই মসজিদের ভিতর, তাছাড়া অন্য কোনো পথ নেই, অথবা কেউ হয়তো অন্য কোথাও জায়গা না পেয়ে ঠেকাবশতঃ মসজিদে নিজের বিছানায় শুয়েছিলো, রাতে ইহতিলাম হয়ে গেছে, তখন সঙ্গে সঙ্গে তাইয়াম্মুম করে বাইরে গিয়ে গোসল করবে।
মাসয়ালা: হায়িয এবং নিফাস অবস্থায় নির্জনবাস করা হারাম।
মাসয়ালা: হায়িয ও নিফাসের অবস্থায় স্ত্রীর হাতের পানি পাক; একত্ বাকি অংশ পড়ুন...
গোসলের সুন্নত
১. অজুর ন্যায় বিসমিল্লাহ বলা।
২. নিয়ত করা। নিয়ত এই-
نَوَيْتُ الْغُسْلَ لِرَفْعِ الْـجَنَابَةِ
“নাওয়াইতুল গুছলা লি রফ্য়িল জানাবাতি। ”
অর্থ : আমি নাপাকী দূর করার জন্য গোসল করছি।
৩. দু’হাতের গিরা (কব্জি) পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা।
৪. লিঙ্গ (যোনীদ্বার) ও গুহ্যদ্বারে কোনো প্রকার নাপাকী থাকুক আর নাই থাকুক, উক্ত স্থানদ্বয় ধৌত করা।
৫. শরীরের কোনো স্থানে নাপাকী লেগে থাকলে, তা ধৌত করা।
৬. নামাযের অজুর ন্যায় অজু করা এবং মিসওয়াক করা। কেউ যদি পুকুরে অথবা কোনো পানিধারে নেমে গোসল করে, তবে সেখান থেকে উপরে উঠে পা ধৌত করা।
৭. সমস্ত শরীর তিনবার ধৌত বাকি অংশ পড়ুন...












