স্থাপত্য-নিদর্শন
অনন্য নিদর্শন সভ্যতার স্বর্ণযুগে গ্রন্থবাঁধাই (২)
, ০৭ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৫ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ১৩ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৯ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) স্থাপত্য নিদর্শন
এতে প্রমাণিত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি মানব জীবন পরিচালনার জন্য পড়ালেখা অব্যাহত রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। কারণ পড়ালেখা জ্ঞান অর্জনের প্রধান বাহন হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইলম বা জ্ঞান অর্জনকে প্রতিটি মুসলমানের জন্য প্রধান কর্তব্য হিসেবে গণ্য করেছেন। তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে মানব জাতির জন্য মুয়াল্লিম বা সম্মানিত শিক্ষক (শিক্ষকদের শিক্ষক) হিসেবে প্রেরিত হয়েছেন। তাই প্রত্যেক মানব জাতির জন্য জ্ঞান অর্জন যেমন কর্তব্যের মধ্যে পড়ে তেমনি লেখাপড়াকে প্রাধান্য দিয়ে তা অর্জন করা প্রয়োজন বলে গণ্য হয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সময়ে পবিত্র ওহী মুবারক অবতীর্ণ হওয়া প্রবহমান থাকায় পবিত্রতম কিতাব কালামুল্লাহ শরীফে লিখে একত্রিত করা সম্ভব ছিল না। সে কারণে তিনি দুনিয়া থেকে সম্মানিত পর্দা মুবারক করার পর পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রথম খলীফা সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার খিলাফতকালে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার পরামর্শক্রমে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহের মাধ্যমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রধান ওহী লেখক হযরত যায়েদ বিন সাবিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নেতৃত্বে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ লিখিত হয়ে গ্রন্থাকারে সংরক্ষিত হয়। সেক্ষেত্রে বলা যায় যে, পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে লিখিত গ্রন্থের একটি প্রথম ও বাস্তব উদাহরণ। সম্ভবত পেপেরী জাতীয় কাগজ লেখার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে কালামুল্লাহ শরীফ উনার এই অনুলিপিতে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র দিদার মুবারক এ গমন বা পবিত্র বিছালী শান মুবারক উনার এক শতাব্দীর মধ্যে তদানীন্তন বিশ্বের প্রায় অর্ধগোলার্ধে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিজয় সম্প্রসারিত হয়েছিল। জ্ঞানের আলোকবর্তিকা বিশ্ববাসীকে উদ্ভাসিত করে তুলেছিল। প্রচুর গ্রন্থরাজি রচিত হয়েছিল এবং মুসলমানদের বিজিত অঞ্চলসমূহে অসংখ্য লাইব্রেরি ও গ্রন্থাগার স্থাপিত হয়েছিল। গ্রন্থের পরিমিতি, আকার, পৃষ্ঠাবিন্যাস, কভারডিজাইন, অলঙ্করণ ও বাঁধাইশৈলী প্রভৃতি বিষয়ের সমন্বয়ে বুক বাইন্ডিং বা গ্রন্থবাঁধাই একটি নয়নাভিরাম শিল্প হিসেবে ইসলামি জগতে বিকাশ লাভ করেছিলো। কোনো গ্রন্থের লিপি মাধুর্য ও চিত্র-অলঙ্করণের ঔজ্জ্বল্য বিনাশ ও ক্ষয়রোধের প্রধান ভূমিকা পালন করতে হয় বাঁধাই শিল্পীর। গ্রন্থের ভিতরের অংশের চেয়ে বেশি নজর দিতে হয় তার প্রচ্ছদ, কভার বা আবরণ-পৃষ্ঠা ও ফ্লাপ বা সার্বিক মোড়ক ও আচ্ছাদনের ওপর। কোনো গ্রন্থের বাঁধাই অলঙ্কৃত ও নজর কাড়ানো নাহলে এবং মজবুত ও টেকসই উপকরণ দিয়ে গ্রন্থীযুক্ত নাহলে তা যেমন দর্শক ও ক্রেতাদেরকে আকৃষ্ট করতে পারে না তেমনি তথ্যসমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও বাজারজাতের ক্ষেত্রে সাড়া জাগাতে পারে না। চলবে...
সম্পাদনায় -মুহম্মদ নাইম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণে মুসলমানদের অবদান
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক মসজিদ “মসজিদ নেগারা”
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে মসজিদ থেকে গভীর রাতে ভেসে আসতো যিকিরের আওয়াজ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৮)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৬)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৫)
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৪)
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৩)
০৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্থাপত্যশৈলীর অনন্য স্থাপনা মানিকগঞ্জের ‘ওয়াসি মহল’
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (১)
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












