ইতিহাস
আগলাবী সালতানাতের মুসলিম নৌবহর (১)
, ২৭ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৩ সাদিস , ১৩৯২ শামসী সন , ৩১ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১৫ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) ইতিহাস

আমিরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি ২৭ হিজরীতে কাতিবে ওহী সাইয়্যিদুনা হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার তত্ত্বাবধানে এবং বিশিষ্ট সেনাপতি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে কাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার মাধ্যমে সুবিশাল নৌবাহিনী গঠন করার পর মুসলমানরা যখন নৌশক্তিতে বিশ্বব্যাপী সমৃদ্ধ এবং স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেন, তখন সাগরবক্ষে প্রবল প্রতাপ ও প্রতিপত্তির সাথে একের পর এক বিজয়াভিযান পরিচালনা করতে লাগলেন। তামাম দুনিয়ার সাগর মহাসাগরে মুসলিম রণতরী দৃশ্যমান হতে থাকলো। পরবর্তীতে উমাইয়া এবং আব্বাসীয়দের ও পরবর্তী মুসলিম সালতানাতগুলোতেও শোভা পেতে থাকলো শক্তিশালী নৌবহর।
---------------
আব্বাসীয় শাসক হারুনুর রশীদের এক খোরাসানী আরব কমান্ডার ছিলেন। যার নাম ছিলো ইব্রাহিম ইবনুল আগলাব। শাসনকার্যে দক্ষতার জন্য হারুনুর রশীদ তাকে ইফ্রিকিয়ার শাসক হিসেবে নিয়োগ দেন। আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া এবং ক্রিপোলিতানিয়ার অঞ্চলসমূহ শাসন করতেন ইব্রাহিম আগলাব। পরবর্তীতে আব্বাসীয়দের অধীনেই উক্ত অঞ্চলে আগলাবী সালতানাতের গোড়াপত্তন করেন তিনি। আগলাবীগণ ১১১ বছর আফ্রিকা ও সিসিল (সাকালিয়া) শাসন করেন। এই স্বল্পকালের মধ্যেই তারা বিশাল কীর্তি স্থাপন করেন।
আগলাবী সালতানাত উত্তর আপ্রিকায় ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলভাগও শাসন করেছিলেন। তাদের রাজধানী ছিলো আফ্রিকার বিখ্যাত কায়রোয়ান নগরী। উত্তর আফ্রিকা ও সাকালিয়ার মধ্যবর্তী দ্বীপগুলো মুসলমানদের অধিকারভূক্ত থাকায় আগলাবীগণ অন্যন্য নৌশক্তি অর্জন করেছিলেন। গড়ে তুলেছিলেন দুর্জয় নৌবহর। ভূমধ্যসাগরের নৌবন্দর ও নৌ ছাউনিসমূহ আগলাগীদের নিয়ন্ত্রনে ছিলো। সবগুলো দ্বীপই তাদের অধিকারভূক্ত ছিলো।
সাকালিয়া বা সিসিলিতে নৌ অভিযান সাইয়্যিদুনা হযরত মুয়াবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আমলেই শুরু হয়েছিলো। তবে সিসিলিতে পূর্ণ ও স্থায়ী বিজয় লাভ হয় আগলাবী সালতানাতের আমলে।
আগলাবী মুসলিম শাসকরা মুসলিম নিয়ন্ত্রন কায়েম রাখার জন্য ভূমধ্যসাগরীয় অধিকাংশ দ্বীপ বিজয় করেছিলেন। সাকালিয়া ও ইটালির মধ্যবর্তী দ্বীপগুলোসহ মাসীনা সাগরেও আগলাবীদের শাসন কায়েম ছিলো। উনাদের দুর্ধর্ষ নাবিকরা ইটালীর উপকূলীয় বন্দরসমূহ বিজয় করে ইতালির অভ্যন্তরে পর্যন্ত ঢুকে গিয়েছিলেন। শুধু ইতালি নয় বরং ফ্রান্সের উপকূলেও উনারা উপনীত হন। আগলাবী আমিরদের এই সফলতার মূলে ছিলো তাদের অকুতোভয় নৌশক্তি। এজন্য ইউরোপের সমস্ত খ্রিষ্টান দেশ এবং বিশেষ করে রোমকরা আগলাবীদের নৌ আধিপত্য মেনে নেয়। (অসমাপ্ত)
সংকলনে: মুহম্মদ শাহ জালাল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রাচীন বাংলার মুসলমান মুদ্রার ইতিহাস
২০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জানা আছে কি? আজকের সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা একসময় মুসলমানদের কর দিয়ে চলতো
১৭ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মোগল সেনাপতির ডায়েরী প্রকাশ ও বিধর্মীদের প্রচারিত মিথ্যা ইতিহাস ফাঁস
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুসলিম কর্তৃক অমুসলিম-বিধর্মীদের ক্ষমতায়িত করার করুণ পরিণতি
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইতিহাস পাঠ: পবিত্র মসজিদের উপর উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের আক্রমণের ধারাবাহিকতা
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইতিহাস পুনঃপাঠ: দাঙ্গায় হিন্দু পুলিশের ভূমিকা
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শুধু স্পেন কিংবা বাগদাদ থেকে নয়, ভারতবর্ষ থেকেও মুসলমানদের লাইব্রেরীর কিতাবাদি লুট করেছিল ব্রিটিশরা
১৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৩)
০৭ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
শের আলী খান আফ্রিদী: ইতিহাসে হারিয়ে যাওয়া একজন মুসলিম বীর
০৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১২)
০১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক হিসেবে ‘কুস্তি’ লড়াইকে যেভাবে ধরে রেখেছিলো উসমানীয়রা
২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খিলাফতকালের একটি ঘটনা
২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)