আরবের লিপিশিল্প: আরবি লিপিশিল্পে ব্যবহৃত উপকরণ, কলাকৌশল ও বৈশিষ্ট্য
, ২১শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ৩০শে মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) স্থাপত্য নিদর্শন
মানসম্পন্ন ক্যালিগ্রাফি করতে হলে এর কলাকৌশল ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ভালভাবে জানতে হয়। উমাইয়া শাসন আমল থেকে ব্যাপকভাবে ক্যালিগ্রাফি বিষয়ে শিক্ষার শুরু হয়। ক্যালিগ্রাফি হচ্ছে উস্তাদ নির্ভর শিল্প। এজন্য যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা এ বিষয়টিতে দক্ষতা ও আগ্রহ বোধ করত। তারা উস্তাদ ক্যালিগ্রাফারগণের কাছ থেকে বিশেষ পাঠ গ্রহণ করত।
ক্যালিগ্রাফির কলাকৌশল প্রধানতঃ মুখে মুখে এবং হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া হতো। এ সম্পর্কে আলী মাশহাদীর বিখ্যাত পত্রমালয় বর্ণিত আছে যে, একজন ওস্তাদ তোমাকে কিভাবে শেখাবেন? ভাল লেখা তোমার অনুপস্তিতিতে শোখানো যাবে না। যদি লেখার সরঞ্জামাদি ও তুমি অনুপস্তিত থাকো। তবে ভাল লেখা সম্পর্কে তোমার কোন ধারণাই জন্মাবে না। এটা জানা কথা যে, লেখার কলা-কৌশল হচ্ছে রহস্যাবৃত এবং ধারাবাহিক। কঠোর প্ররিশ্রম ও অধ্যাবসায় ছাড়া কখনো ক্যালিগ্রাফির খুটি নাটি জানা সম্ভব নয়। ক্যালিগ্রাফির কিছু কিছু কলাকৌশল ইচ্ছাকৃত গোপন রাখা হত জনগণের কাছ থেকে যেন কলাকৌশলগুলো মহামূল্য রতœরাজি।
ক্যালিগ্রাফার আলদাহ্হা এর অভ্যাস ছিল তিনি কলমের নীব কাটার সময় আড়ালে চলে যেতেন, যার করণে তার নীব কাটার কৌশল সম্পর্কে কেউ জানতে পারতোনা। ইবনে আল-বাওয়াব কলমের নীব কাটার কলাকৌশল সম্পর্কে বলেছেন, তোমরা আমার কাছে এ কলাকৌশল সম্পর্কে জানতে চেওনা। কেননা এটা আমি সযতেœ লুকিয়ে রাখি।
এজন্য গুরুত্বপূর্ণ সব ক্যালিগ্রাফির কলাকৌশল পুরুষ থেকে পুরুষে ওস্তাদের মাধ্যমে মুখে মুখে ও হাতে কলমে চলে এসেছে। কয়েকজন ওস্তাদ ক্যালিগ্রাফার কিছু কিছু কলাকৌশল বাদ দিয়েছেন। কলাকৌশল সম্প্রসারিত না হওয়ার পরেও ক্যালিগ্রাফি চমৎকার ও যথাযথ হয়েছে। এটা কিভাবে সম্ভব! গবেষণায় দেখা গেছে যে, আরবি লিপিকলা প্রথমিকভাবে নিয়মনীতির সংশ্রবে খুব অল্পই চলছে। বরং মনের জোরাওয়ালা ভালো হাতের লেখা লোকের সংখ্যাই তখন বেশি ছিল। আর চমৎকার কলা-কৌশল সম্পর্কে বলা হয়, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজাহু আলাইহিস সালাম যেমন দেখিয়েছেন- ‘কিভবে ভালো হাতের লেখা হবে! তিনি ইরশাদ মুবারক করেন তোমরা কলমের জিলফা (যেখান থেকে কলমের মাথার দিকে কাটা হয়) প্রসারিত কর এবং মোটা থেকে তির্যকভাবে মাথার দিকে ক্রমে ক্রমে চিক করে কেটে যাও। যাতে সঠিক সমানুপাত ও খাড়া আলিফ হয়।
বিভিন্ন লিপির জন্য একই রকম কলমের ব্যবহার রীতিসিদ্ধ নয়। সহজভাবে বলতে গেলে, একটি কলমে সব রকমের স্টাইলে লেখা সম্ভব নয়। এজন্য প্রত্যেক প্রকারের লেখার জন্য ভিন্ন ভিন্ন কলম প্রস্তুত করতে হয় (আর এমনটাই করতেন মুসলিম ক্যালিগ্রাফারগণ)। কলম কাটার জন্য বিশেষ ধরণের ছুরিও রয়েছে। ছুরিটি অবশ্যই তিক্ষœ ধার হতে হবে। এ ছাড়া ছুরির ব্লেডটি খুব বেশি লম্বা বা খাটো হতে পারবে না। আবার অনেক চওড়া বা খুব চিকনও হতে পারবে না বরং কলমের নীবের ভেতরে থেকে মাথা পর্যন্ত কাটতে বিশেষভাবে নির্মিত ছুরি ব্যবহার করতে হয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অনন্য নিদর্শন সভ্যতার স্বর্ণযুগে গ্রন্থবাঁধাই (৩)
০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন খাগড়াছড়ির সবচেয়ে পুরনো ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদ
১৭ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অনন্য নিদর্শন সভ্যতার স্বর্ণযুগে গ্রন্থবাঁধাই (২)
১৩ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন ঐতিহাসিক চন্দনপুরা তাজ মসজিদ (২)
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন ঐতিহাসিক চন্দনপুরা তাজ মসজিদ (১)
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মসজিদ (৫)
০৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মসজিদ (৪)
২৯ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাবা আদম শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ ও মসজিদ
২৭ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইউরোপে মুসলিম সভ্যতার অন্যন্য এক নিদর্শন “বিবি-হায়েবাত মসজিদ”
২৪ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র মসজিদে কুবা শরীফ
২৩ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মসজিদ (৩)
১২ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মসজিদ (২)
০৫ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)