আলোচনায় বা লেখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইসমে যাত বা নাম মুবারক বারবার বলা ও লেখা সম্পূর্ণ আদবের খিলাফ
, ২৩ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৯ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৩ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
(২য় পর্বের পর)
‘তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
يَقُوْلُ لَا تَسُمُّوْهُ اِذَا دَعَوْتُمُوْهُ يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا تَقُوْلُوْا يَا اِبْنَ عَبْدِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلكِنْ شَرَّفُوْهُ فَقُوْلُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا نَبِىَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করবে তখন উনার সম্মানিত নাম মুবারক ধরে এভাবে ইয়া মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলে সম্বোধন করবে না। এমনকি এভাবেও বলবে না- ইয়া ইবনা আব্দিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বরং তোমরা অত্যন্ত শরাফত ও সম্মানের সাথে বলবে, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইয়া নাবিইয়াল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!” (তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম ৮/২৬৫৫)
‘তাফসীরে ত্ববারানী’ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
اَىْ اُدْعُوْهُ بِالْخُضُوْعِ وَالتَّعْظِيْمِ وَقُوْلُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَا نَبِىَّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ لِيْنٍ وَتَوَاضُعٍ وخَفْضِ صَوْتٍ وَلَا تَقُوْلُوْا يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَلَا يَا اَبَا القَاسِمِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَمَا يَدْعُوْ بَعْضُهُمْ بَعْضًا بِاِسْمِه
অর্থ: “অর্থাৎ তোমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত বিনয় ও তা’যীমের সাথে সম্বোধন মুবারক করো। তোমরা অত্যন্ত নমনীয়তা ও বিনয়ের সাথে কন্ঠস্বর নিচু করে বলবে, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইয়া নাবিইয়াল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আর উনার সম্মানিত নাম মুবারক ধরে এভাবে ইয়া মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! অথবা ইয়া আবাল ক্বাসিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বলে সম্বোধন করবে না। যেমনিভাবে তোমরা একে অপরকে নাম ধরে সম্বোধন করে থাকো। ” (তাফসীরুল কুরআনীল আযীম লিত ত্ববারানী)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
نَهَاهُمُ اللهُ اَنْ يُّنَادُوْهُ كَمَا يُنَادِىْ بَعْضُهُمْ بَعْضًا وَاَمَرَهُمْ اَنْ يُّشَرِّفُوْهُ وَاَنْ يُّعَظِّمُوْهُ وَيَدْعُوْهُ اِذَا دَعَوْهُ بِاِسْمِ النُّبُوَّةِ
অর্থ: “তারা পরস্পর একে অপরকে যেভাবে সম্বোধন করে মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সেভাবে সম্বোধন করতে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি মু’মিনদেরকে আদেশ মুবারক করেছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে অত্যন্ত শরাফত ও তা’যীম মুবারক এবং সম্মান মুবারক উনার সাথে সম্বোধন মুবারক করার জন্য। এবং তারা যখন উনাকে সম্বোধন করবে তখন উনার সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক উনার নামে অর্থাৎ ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইয়া নাবিইয়াল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বলে সম্বোধন করতে আদেশ মুবারক করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (তা’যীমু ক্বদরিছ ছলাত ২/৬৬৪)
মূল কথা হচ্ছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার সময় উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করা যাবে না। বরং উনার মহাসম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারা সম্বোধন করতে হবে।
এক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের আমল মুবারক দেখলে বিষয়টা আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জমীনে অবস্থান মুবারককালীন সময়তো রয়েছেই। যখন তিনি দুনিয়া থেকে পর্দা মুবারক করেছেন, সাক্ষাত মুবারকে চলে গেছেন তখনও উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করেননি। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন, সেখানে কিন্তু কখনোই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করেননি।
উনারা এভাবে বর্ণনা করেছেন-
১.قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
২.قَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
৩.سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ
৪.سَمِعْتُ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ
উনারা কিন্তু বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কখনোই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক ধরে সম্বোধন করেননি। লেখার ক্ষেত্রেও না, বলার ক্ষেত্রেও না।
তাহলে পরবর্তী উম্মত কিভাবে কথা বলার সময়, লেখার সময় বারবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক নিতে পারে? আর এটা কিভাবে আদব হতে পারে? এটা কখনোই আদব হবে না। বরং চরম পর্যায়ের বেয়াদবী হবে, ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












