ইউরোপের ঐতিহাসিক গাজী হুসরেভ-বেগ মসজিদ
, ২রা শাবান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৫ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৯ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) স্থাপত্য নিদর্শন
(৩য় পর্ব)
মসজিদ স্থাপত্যঃ
মসজিদটি বহু-গম্বুজ বিশিষ্ট ও স্থান সংকুলানের যৌগিক নকশার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। এর নকশা ও নির্মাণশৈলী ধ্রুপদী উসমানীয় স্থাপত্যকলার (কখনও কখনও আদি ইস্তাম্বুলীয় নকশা হিসাবে পরিচিত) প্রাথমিক যুগের প্রতিনিধিত্ব করে। মসজিদের নামাজ আদায়ের মূলঘর বা নামাজকক্ষটি আয়তাকার। এই ঘরের চারদিকে উঁচু দেয়াল রয়েছে। এই চার দেয়ালের উপরে পেন্ডেন্টিভ বা ঝুলন্ত দেয়ালের উপরে মূল গম্বুজ স্থাপিত হয়েছে, যা এই মসজিদের কেন্দ্রীয় কাঠামো। মসজিদের ক্বিবলার দিকটি অতিরিক্ত আয়তাকার জায়গার সাহায্যে প্রসারিত এবং দুটি উচ্চ মুকার্ন অলংকরণ বসানো আধা গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত। মসজিদের মুখ্যস্থান হিসেবে চিহ্নিত, ক্বিবলার জন্য বর্ধিত অংশে মিহরাব, মিম্বর, ইমাম সাহেবের বসার স্থান এবং একটি বিশাল খিলান রয়েছে। নমাজ আদায়ের মূলকক্ষের বাম এবং ডানদিকে, কিবলা পাশ থেকে দূরে তেতিমা নামক অপেক্ষাকৃত কম আয়তনের ফাঁকা স্থান রয়েছে। প্রতি তেতিমার উপরে একটি করে মোট দুটি ছোট গম্বুজ রয়েছে।
মসজিদটিকে বাইরে থেকে দেখলে প্রধান গম্বুজের আধিপত্য দৃশ্যমান হয়। গম্বুজের পাশে আজান প্রচারের জন্য একটি সুউচ্চ মিনার রয়েছে। মসজিদের প্রবেশপথের দুইপাশে প্রবেশদ্বারে চারটি প্রশস্ত কলামসহ ছাউনি দেয়া বারান্দা রয়েছে। বারান্দার উপর ছোট ছোট গম্বুজ রয়েছে, এর মধ্যে শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় গম্বুজটি অন্য গম্বুজগুলির তুলনায় অপেক্ষাকৃত বড় করে তৈরী করা হয়েছে। প্রবেশদ্বার ও কলামগুলির ভিত্তি সমূহ বিভিন্ন মুকার্ন অলংকরণে সজ্জিত রয়েছে।
মসজিদ সংস্কার এবং পুনর্নিমাণঃ
বিগত শতাব্দির শেষভাগে বসনিয়ার যুদ্ধে সার্বিয় খৃষ্টান দখলদার বাহিনী অত্যান্ত ন্যক্কারজনক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে বেছে বেছে বসনিয়া-হারজেগোভিনায় অবস্থিত ঐতিহাসিক ইসলামী স্থাপনাসমূহের ওপর ব্যাপক হামলা চালায়। বলা বাহুল্য যে রাজধানী সারায়েভোর 'বেগ মসজিদ' ছিল তাদের আক্রোশের মূল লক্ষ্যস্থল, তাই এ মসজিদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে সার্বিয় বাহিনী। ট্যাংকের গোলায় বেগ মসজিদসহ সারায়েভোর অন্যান্য ইসলামী স্থাপনার প্রায় আশি ভাগ স্থাপনা ভেঙ্গে দেয়া হয়। যুদ্ধপরবর্তী এই ঐতিহাসিক মসজিদ পুন:নির্মাণে বিভিন্ন দেশের অনুদানে এবং তাদের আর্থিক সহায়তায় পূর্বের নকশানুযায়ী ১৯৯৬ খৃ: বেগ মসজিদের ক্ষতিগ্রস্ত কাঠামো পূণঃনির্মাণ করা হয়।
বিগত বারো বছর পূর্বে অর্থাৎ ২০০০ খৃ: গাজী হুসরেব বেগ মসজিদের সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে আরো কিছু সংস্কার করা হয়। এবং সেই সময় বসনিয়া হারজেগোভিনার বিখ্যাত ক্যলিগ্রাফার জনাব হাযিম নুমানাজিক পুরনো ক্যালিগ্রাফিগুলোর সংস্কার করেন। গাজী হুসরেব বেগ মসজিদ পৃথিবীর সর্ব প্রথম মসজিদ যেখানে ১৮৯৮ খৃ: বৈদুতিক সংযোগ স্থাপন করা হয়। চলবে.....
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খেজুরের পাতায় লিখা পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
অনন্য নিদর্শন সভ্যতার স্বর্ণযুগে গ্রন্থবাঁধাই (৫)
২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অনন্য নিদর্শন সভ্যতার স্বর্ণযুগে গ্রন্থবাঁধাই (৪)
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অনন্য স্থাপত্যের নজির বাংলাদেশে: মসজিদে নববী শরীফ উনার হুবহু নকশায় রাজারবাগ শরীফে সুন্নতী জামে মসজিদ নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হয়েছিল সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ মহাসম্মানিত ১২ই শরীফে
১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
অনন্য নিদর্শন সভ্যতার স্বর্ণযুগে গ্রন্থবাঁধাই (৩)
০১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন খাগড়াছড়ির সবচেয়ে পুরনো ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদ
১৭ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অনন্য নিদর্শন সভ্যতার স্বর্ণযুগে গ্রন্থবাঁধাই (২)
১৩ আগস্ট, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন ঐতিহাসিক চন্দনপুরা তাজ মসজিদ (২)
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
স্থাপত্যশৈলীর অন্যতম নিদর্শন ঐতিহাসিক চন্দনপুরা তাজ মসজিদ (১)
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মসজিদ (৫)
০৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছাহাবী সাইয়্যিদুনা হযরত আমর ইবনুল আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মসজিদ (৪)
২৯ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাবা আদম শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ ও মসজিদ
২৭ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)