ঐতিহাসিক রোয়াইলবাড়ি দুর্গ
, ৩০ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২১ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ২১ মে, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন
ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত নেত্রকোণা জেলা। বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চলের ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক এলাকা। এই জেলার ইতিহাস প্রাচীন ঐতিহ্যে ভরপুর। নেত্রকোণা জেলায় বেশ কিছু প্রাচীন স্থাপত্য রয়েছে। সেসব স্থাপত্যগুলো অধিকাংশরই এখন কিছু কিছু অংশ টিকে আছে। তবে কিছু স্থাপত্য এখনো ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। তেমনই একটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য ‘রোয়াইলবাড়ি দুর্গ’। স্থানীয় অভিমতে এটি ‘কোটবাড়ী দুর্গ’ নামেও পরিচিত।
রোয়াইলবাড়ি দুর্গ এমনই একটি প্রতœতাত্ত্বিক স্থান। এটি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলাধীন রোয়াইলবাড়ি-আমতলা ইউনিয়ন পরিষদের অন্তর্গত গ্রাম ও মৌজা রোয়াইলবাড়িতে অবস্থিত। ঢাকা-কেন্দুয়া বিআরটিসি বাস রুটের সাঈদপুর বাস স্টপে নেমে সেখান থেকে সাইকেল রিকশায় সেখানে যাওয়া যায়। নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা সদর হতে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে রোয়াইলবাড়ি। নান্দাইল চৌরাস্তা থেকে প্রায় ১৮ কিমি দক্ষিণ পূর্বে নান্দাইল-কেন্দুয়া পাকা সড়কের ওপর অবস্থিত সাহিতপুর বাজার। সাহিতপুর বাজার থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে এবং ১৮ বাড়ি রেলস্টেশন থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর পূর্বে রোয়াইলবাড়ি দুর্গ অবস্থিত। ভৌগোলিক অবস্থান উত্তর ২৪ ৩৭'০১.৪" উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০ ৪৭'.০৬" পূর্ব দ্রাঘিমাংশ।
আয়তাকারে নির্মিত এ দুর্গের আয়তন ৫৩৩.২৩ মিটার (উত্তর-দক্ষিণ) ৩২৭.৫৭ মিটার (পূর্ব-পশ্চিম)। এ দুর্গের পশ্চিমে রয়েছে বর্তমানে মৃতপ্রায় বেতাই নদী যা পরিখারূপে ছিল। এ নদী থেকে পরিখা কেটে দুর্গের উত্তর ও দক্ষিণ দিক সুরক্ষিত করা হয়েছে। দুর্গের পূর্ব দিকে ছিল দুটি বিশাল আকারের দীঘি। দীঘি থেকে কিছু পূর্বে ছিল পরিখা। বেতাই নদী থেকে সেই পরিখাতে পানি সরবরাহ করা হতো। দীঘি দুটির মাঝখানে দুর্গে প্রবেশের জন্য একটি প্রবেশ পথ ছিল বলে ধারণা করা হয় যা বর্তমানে বিলীন। দুর্গের পরিখা সংলগ্ন ছিল একটি মাটির প্রাচীর। মাটির প্রাচীর ও পরিখাবেষ্টিত এই দুর্গের ভেতরে উত্তর দক্ষিণে দীঘি ও ইটের প্রাচীরবেষ্টিত একটি অভ্যন্তরীণ দুর্গ ছিল। দুর্গের উত্তর পশ্চিম কোণে রয়েছে বুরুজ ঢিবি। বুরুজ থেকে বেশ দক্ষিণে একটি ছোট পুকুর দেখা যায়। বিপদের সময় এ পুকুরের পানি ব্যবহার করা হত বলে মনে হয়। দুর্গের দক্ষিণে পনের গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে।
মসজিদের ৩০ মিটার উত্তরে একটি প্রাচীন কবরস্থান আছে। এটি স্থানীয়ভাবে নিয়ামত বিবির মাজার ও ডেঙ্গুমিয়ার কবর নামে পরিচিত। বাংলায় মুসলিম সালতানাতের যুগের শুরুতে বাংলায় মুসলিম কর্তৃত্ব ছিল তিস্তা এবং করতোয়া নদীর উত্তর-পূর্ব এবং পশ্চিম ভাগ ও গঙ্গার উত্তর ভাগ। যদিও দক্ষিণ, পূর্ব অঞ্চলে বিস্তার করেছিল কিন্তু তা বলবনি যুগের পূর্ব পর্যন্ত স্থায়ী হয়নি। ১২৫৭ খৃ: তে রোয়াইলবাড়ি ছিল ব্রহ্মপুত্রের পূর্ব ভাগ অর্থাৎ পূর্ব ময়মনসিংহ এবং তা ত্রয়োদশ শতক পর্যন্ত ছিল। ময়মনসিংহের ইতিহাস ও ময়মনসিংহের বিবরণ গ্রন্থে মজিদ জালাল, ঈসা খাঁ নাসিরুজিয়াল পরগনা, রোয়াইল বাড়ি জয় করেছিলেন এবং এটা ছিল দেয়ালঘেরা আবাসভূমি। মুসলিম যুগের শুরুতে রোয়াইল বাড়ি দুর্গটি সৈন্যবাহিনী এবং পদাতিক বাহিনীর আউটপোস্ট বা স্টেশন ছিল বলে ধারণা করা হয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তাজ-উল-মসজিদ ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র মসজিদে জুমুয়াহ
২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইসলামী স্থাপত্য দূর্গ “কসর আল-খারানা”
০১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নওগাঁয় ২০০ বছরের পুরোনো মসজিদের সন্ধান
০৩ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খুলনার ঐতিহাসিক মসজিদকুড় মসজিদ (২)
১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খুলনার ঐতিহাসিক মসজিদকুড় মসজিদ (১)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সীতাকুন্ডের পৌঁনে পাঁচশো বছরের ঐতিহাসিক হাম্মাদিয়া মসজিদ
২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক বিবি বেগনি মসজিদ
০৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঐতিহ্যবাহী সিংদহ আউলিয়া জামে মসজিদ
০৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাগেরহাটের রণবিজয়পুরে ঐতিহাসিক এক গম্বুজ মসজিদ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক নয়-গম্বুজ মসজিদ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক চুনাখোলা মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)