তা’বীয ও ঝাড় ফুঁক সম্পর্কে শরয়ী ফায়সালা (৩)
, ১৯ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ২৬ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ১২ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ফক্বীহুল উম্মত হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আহলিয়া (স্ত্রী) হযরত যয়নব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বলেন, একজন ইহুদী বৃদ্ধা মহিলা আমাদের নিকট আসতো। চর্ম প্রদাহে (চামড়া লাল হওয়া, চুলকানো ও ব্যথা রোগে) ঝাড়, ফুঁক করতো। আমাদের একটি লম্বা পায়া বিশিষ্ট চৌকি ছিল। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উচু স্বরে গলা খাকর বা কাশি দিয়ে বাড়ীতে প্রবেশ করতেন।
তিনি একদিন বাড়ীতে প্রবেশ করলেন। উনার গলার আওয়াজ শুনে উক্ত বৃদ্ধা মহিলা আড়াল হলেন।
فَجَاءَ فَجَلَسَ إِلَى جَانِبِي فَمَسَّنِي فَوَجَدَ مَسَّ خَيْطٍ فَقَالَ : مَا هٰذَا ؟ فَقُلْتُ : رُقًى لِي فِيهِ مِنَ الْحُمْرَةِ فَجَذَبَهُ وَقَطَعَهُ فَرَمَى بِهِ
অর্থ: আর তিনি এসে আমার পাশে বসলেন। তারপর আমাকে স্পর্শ করলেন। আর আমার গলায় একগাছি সুতার পরশ পেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ইহা কি? আমি বললাম, চর্ম প্রদাহের জন্য সুতা পড়া বেঁধেছি। তিনি সেটা আমার গলা থেকে টেনে ছিঁড়ে ফেলে দিলেন।
وَقَالَ لَقَدْ أَصْبَحَ آلُ عَبْدِ اللَّهِ أَغْنِيَاءَ عَنِ الشِّرْكِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ـ يَقُولُ " إِنَّ الرُّقَى وَالتَّمَائِمَ وَالتِّوَلَةَ شِرْكٌ
অর্থ: আর বললেন, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সম্মানিত পরিবার শিরকমুক্ত হলো। আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি “মন্ত্র, তামীমাহ বা রক্ষাকবচ” এবং আহাল বা স্বামীকে আকৃষ্ট করার মন্ত্র পড়া শিরক এর অন্তর্ভুক্ত।
فَقُلْتُ فَإِنِّي خَرَجْتُ يَوْمًا فَأَبْصَرَنِي فُلَانٌ فَدَمَعَتْ عَيْنِي الَّتِي تَلِيهِ فَإِذَا رَقَيْتُهَا سَكَنَتْ دَمْعَتُهَا وَإِذَا تَرَكْتُهَا دَمَعَتْ
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত যয়নব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেন, আমি বললাম, আমি একদিন বাইরে বের হলাম। তখন অমুক ব্যক্তি আমাকে দেখে ফেললো। আমার যে চোখের দৃষ্টি তার উপর পড়লে তা দিয়ে পানি ঝরতে লাগলো। আমি মন্ত্র পড়ে ফু দিলে পানি ঝরা বন্ধ হয়। আর মন্ত্র পড়া বন্ধ করলে পানি ঝরা শুরু হয়। সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন,
ذَاكِ الشَّيْطَانُ إِذَا أَطَعْتِيْهِ تَرَكَكِ وَإِذَا عَصَيْتِيْهِ طَعَنَ بِإِصْبَعِهِ فِي عَيْنِكِ وَلَكِنْ لَوْ فَعَلْتِ كَمَا فَعَلَ رَسُوْلُ اللَّهِ ـ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ـ كَانَ خَيْرًا لَكِ وَأَجْدَرَ أَنْ تَشْفِيْنَ تَنْضَحِيْنَ فِي عَيْنِكِ الْمَاءَ وَتَقُولِيْنَ " أَذْهِبِ الْبَاسْ رَبَّ النَّاسْ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا " .
অর্থ: এটা শয়তানের কাজ। আপনি (মন্ত্র পড়ে) শয়তানের আনুগত্য করলে সে আপনাকে রেহাই দেয়। আর মন্ত্র না পড়লে সে তার আঙ্গুল দ্বারা আপনার চোখে খোচা মারে। তবে আপনি যদি তাই করতেন যা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি করেছেন। তবে তা আপনার জন্য আর আরোগ্য লাভের অধিক সহায়ক হতো, উপকারী হতো। আপনি নি¤েœাক্ত দোয়া পড়ে পানিতে ফুঁক দিয়ে তা চোখে ছিটিয়ে দিন। দোয়া হচ্ছে-
أَذْهِبْ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لَا شِفَاءَ إِلَّا شِفَاؤُكَ شِفَاءً لَا يُغَادِرُ سَقَمًا.
উচ্চারণ: (আযহিবিল বাস রব্বান নাস, ইশফি আনতাশ শাফী, লা শিফাআ ইল্লা শিফাউকা শিফাআন, লা ইউগাদিরু সাক্বামান)
অর্থ: সকল মানুষের হে মহান রব তায়ালা! দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিন। আরোগ্য দান করুন। আপনিই আরোগ্য দানকারী। আপনার আরোগ্য ছাড়া আরাগ্য লাভ করা যায় না। এমনভাবে আরোগ্য দান করুন, যেকোন রোগেরই চিহ্ন না থাকে। (ইবনে মাজাহ শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মূর্তি, প্রতিমা, ভাস্কর্য, ম্যানিকিন ও ছবি নাজায়িয ও হারাম
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত আব্বাদ ইবনে বিশর ইবনে ওয়াকাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৩)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা কবীরা গুনাহ ও অসন্তুষ্টির কারণ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সর্বক্ষেত্রে ফায়সালাকারী হিসেবে মেনে নেয়াই ঈমানদারের পরিচয়
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কদমবুছী করা খাছ সুন্নত মুবারক
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আব্বাদ ইবনে বিশর ইবনে ওয়াকাশ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর (২)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বেপর্দা সর্বপ্রকার অনিষ্ট ও ফিতনা-ফাসাদের মূল
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে মুসলমান যে বিজাতীয় সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য রাখবে, তাদের সাথেই তার হাশর নশর হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












