তিউনেশিয়ার আল জয়তুন মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় (পর্ব-১)
, ০২ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২২ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ২১ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) স্থাপত্য নিদর্শন
মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় ৭৯ হিজরী মোতাবেক ৭০৩ খৃ: তে। আব্বাসীয় শাসক আল নাসের লি-দ্বীনীল্লাহর নির্দেশে আমীর ফাতহুল্লাহ এই মসজিদ নির্মাণ করেন। ঐতিহাসিকদের ভিন্ন মত অনুযায়ী আমীর হাসসান ইবনে নোমান ৭৯ হিজরী সালে এই মসজিদ নির্মাণ করেন। এবং হিজরী ১১৬ মোতাবেক ৭৩৬ খৃ: উবাইদুল্লাহ ইবনে হাবহার জামে জয়তুন পূণঃনির্মাণ করেন।
মসজিদটির আয়তন ৫০০০ (পাঁচ হাজার) বর্গ মিটার। মসজিদের মিনারের সংখ্যা ১টি এবং মিনারের উচ্চতা ৪৩ মিটার বা ১৪১ ফিট। এই ঐতিহাসিক মসজিদটিতে গম্বুজ সংখ্যা ৪টি এবং এর উচ্চতা ১৪ মিটার।
আল জয়তুন হিজরী প্রথম শতকে নির্মিত বিশ্বের প্রাচীনতম মসজিদ সমূহের অন্যতম এবং মুসলিম বিশ্বের সর্বপ্রথম প্রাতিষ্ঠানিক পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়ায় নির্মিত দ্বিতীয় মসজিদ জামে আল জয়তুন, ঐতিহাসিক জামে আল কাইরুয়ানের কিছুকাল পরেই এই মসজিদ ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়। ঐতিহাসিকদের নির্ভরযোগ্য বর্ণনানুযায়ী তিউনিশিয়ার তৎকালীন মুসলিম শাসক আমীর হাসসান ইবনে নোমান ৭৯ হিজরী সালে এ মসজিদ নির্মাণ করেন, এবং তৎপরবর্তী ১১৬ হিজরী মোতাবেক ৭৩৬ খৃ: আমীর উবায়দুল্লাহ বিন হাবহার এ মসজিদ প্রায় দ্বিগুণ আয়তনে সম্প্রসারিত করেন এবং পূর্ণাঙ্গ জামে মসজিদে রূপান্তরিত করেন। অন্য এক ঐতিহাসিক বর্ণনা মতে আব্বাসীয় শাসক আল নাসের লিদ্বীনিল্লাহর নির্দেশে আমীর ফাতহুল্লাহ্ ৭০৩ খৃ: জামে আল জয়তুন নির্মাণ করেন। বিশ্বের প্রাচীনতম ও মুসলিম বিশ্বের সর্বপ্রথম প্রাতিষ্ঠানিক পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আল জয়তুন মসজিদেই প্রতিষ্ঠা করা হয়। এদিক থেকে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে এই মসজিদের ভূমিকা ও গুরুত্ব অপরিসীম জামে আল জয়তুনের নামকরণ যেমনিভাবে এই ঐতিহাসিক ও প্রাচীন মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে ঐতিহাসিকদের মতভেদ আছে, ঠিক তেমনি এর নামকরণের ক্ষেত্রেও ভিন্নমত রয়েছে তন্মধ্যে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মত হচ্ছে এই যে, “জামে আল জয়তুন' নামকরণের মূল প্রেক্ষাপট এই ছিল যে, তিউনিশিয়া বিজয়ী মুসলিম সৈন্যবাহিনীর প্রধান জেনারেল হাসান ইবনে নোমান মসজিদ নির্মাণের জন্যে যে স্থানটি নির্বাচন করেন, সে স্থানে বিশাল একটি যাইতুন বৃক্ষ ছিল, বিধায় এ মসজিদ 'জামে আল জয়তুন' নামে প্রসিদ্ধি লাভ করে ।
বিশ্বের প্রাচীনতম প্রাতিষ্ঠানিক পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
৭৯ হিজরীতে মসজিদ নির্মাণের পরের বছর এ মসজিদ প্রাঙ্গনে প্রতিষ্ঠা করা হয় মুসলিম বিশ্বের সর্বপ্রথম পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। তৎকালীন আফ্রিকা মহাদেশ ও আরব বিশ্বসহ সমগ্র ইউরোপে এটিই ছিল একমাত্র পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। আধুনিক জ্ঞান- বিজ্ঞানের সকল শাখাসহ পবিত্র কুরআন শরীফ-সুন্নাহ শরীফ ও ইসলামী আইন শাস্ত্রের উচ্চতর শিক্ষা গবেষণা ও থিসিস রচনাসহ স্নাতক সম্মান এবং পি.এইচ.ডি ডিগ্রি প্রদান করা হতো এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
শুধুমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে তৎকালীন তিউনিস হয়ে উঠেছিল সমগ্র আফ্রিকার রাজধানী। হিজরী দ্বিতীয় শতাব্দি থেকে পরবর্তী এক বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে গবেষণালব্ধ থিসিস বা পা-ুলিপির সংখ্যা দাড়ায় প্রায় পনের হাজার এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় সোয়া লক্ষ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তাজ-উল-মসজিদ ভারতের সর্ববৃহৎ মসজিদ
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র মসজিদে জুমুয়াহ
২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইসলামী স্থাপত্য দূর্গ “কসর আল-খারানা”
০১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নওগাঁয় ২০০ বছরের পুরোনো মসজিদের সন্ধান
০৩ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খুলনার ঐতিহাসিক মসজিদকুড় মসজিদ (২)
১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খুলনার ঐতিহাসিক মসজিদকুড় মসজিদ (১)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সীতাকুন্ডের পৌঁনে পাঁচশো বছরের ঐতিহাসিক হাম্মাদিয়া মসজিদ
২৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক বিবি বেগনি মসজিদ
০৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঐতিহ্যবাহী সিংদহ আউলিয়া জামে মসজিদ
০৩ জানুয়ারি, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাগেরহাটের রণবিজয়পুরে ঐতিহাসিক এক গম্বুজ মসজিদ
২৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক নয়-গম্বুজ মসজিদ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক চুনাখোলা মসজিদ
১২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)