নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে অবমাননাকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (১৯)
, ২৪ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২০ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৪ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
উবাই ইবনে খলফ:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে তার বিদ্বেষের মাত্রা কতটুকু ছিলো তা অনুভব করা যায় নিন্মোক্ত ঘটনা থেকে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে অবস্থান মুবারককালে সে উনাকে দেখা মাত্রই গর্বভরে বলতো, আমার কাছে ‘আওদ’ নামক একটি ঘোড়া রয়েছে। তাকে আমি প্রতিদিন তিন সা তথা সাড়ে সাত কিলোগ্রাম খাবার খাওয়াচ্ছি। সেই ঘোড়ার পিঠে বসেই একদিন আমি আপনাকে শহীদ করবো। নাঊযুবিল্লাহ! জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলতেন, ‘উল্টাও তো হতে পারে। ইনশাআল্লাহ আমিই তোমাকে হত্যা করবো।
পবিত্র উহুদ যুদ্ধের কথা। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উহুদের ময়দানে পৌঁছলেন। অভিশপ্ত উবাই ইবনে খলফ এ কথা বলে সামনে আসলো যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোথায়? হয়ত আমি থাকবো, নতুবা তিনি থাকবেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা কি তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়বো? তিনি বললেন, না; তাকে আসতে দিন। ঠিকই দুর্বৃত্তটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট চলে আসলো। তার হাবভাব দেখে বুঝা যাচ্ছে, সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে শহীদ করেই ছাড়বে। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত হারিছ বিন সামার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছ থেকে ছোট একটি বর্শা নিলেন। এর পরপরই মালউনটার দিকে এগিয়ে গেলেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উবাই ইবনে খলফের একেবারে মুখোমুখি গিয়ে দাঁড়ালেন। তার মাথায় ছিলো শিরস্ত্রাণ আর গায়ে বর্ম। এই দুটির মধ্যখানে গলার কাছাকাছি সামান্য একটু জায়গা খালি ছিলো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সেই খালি জায়গা লক্ষ্য করে উনার নূরুল মাগফিরাত অর্থাৎ হাত মুবারকে থাকা বর্শাটি ছুড়ে মারলেন। বর্শাটি নির্দিষ্ট স্থানেই আঘাত করলো। নরাধমটা তার ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়েও পড়লো না। নিজেকে কিছুটা সামলে নিলো। অবস্থা বেগতিক দেখে তার মিত্রদের কাছে ফিরে গেলো। বর্শার আঘাতে তার গলার কাছে সামান্য পরিমাণ চটে গিয়েছিলো বটে, কিন্তু রক্ত বের হয়নি। আঘাতটাও ছিলো মামুলি। তবুও সে চিৎকার করে বলতে লাগলো- মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে হত্যা করে ফেলেছেন।
লোকেরা তাকে বললো, কি সব বাজে বকছো? তোমার আঘাত তো তেমন গুরুতর নয়। গলায় সামান্য আঁচড় লাগার মতো দেখা যাচ্ছে। সে জবাব দিলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফে আমাকে বলেছিলেন- আমিই তোমাকে হত্যা করবো। কাজেই মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ, আমার প্রাণ চলে যাবে। তিনি যদি আমাকে সামান্য নূরুল বারাকাত অর্থাৎ থুথু মুবারকও নিক্ষেপ করতেন, তবুও আমার প্রাণ বেরিয়ে যেতো। সে গাভীর মতো চিৎকার করে বলতে লাগলো, সেই মহান সত্তা মুবারক উনার ক্বসম, যাঁর কুদরতী হাত মুবারকে আমার প্রাণ। আমি যে যন্ত্রনা অনুভব করছি, সেই যন্ত্রনা যদি যুল-মাজাজের অধিবাসীরা অনুভব করতো, তাহলে তারা সবাই মারা যেতো।
অবশেষে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুশমন মালউন উবাই ইবনে খলফ পবিত্র মক্কা শরীফে ফেরার পথে ‘সারিফ’ নামক স্থানে দুনিয়া ছেড়ে চিরস্থায়ী আযাব-গযবে নিপতিত হয়। (অসমাপ্ত)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












