নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক লেখার সময় পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার বেমেছাল ফযীলত মুবারক (২)
, ২৭ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৩ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৭ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত ফযীলত মুবারক:
অপর বর্ণনায় রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ فِيْ كِتَابٍ لَمْ تَزَلِ الصَّلَاةُ جَارِيَةً لَهُ مَادَامَ اِسْمِيْ فِيْ ذَالِكَ الْكِتَابِ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কিতাবে আমার প্রতি পবিত্র দুরূদ শরীফ লিখবে। যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ কিতাবে আমার সম্মানিত নাম মুবারক থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ জারী থাকবে। অর্থাৎ ঐ ব্যক্তি দায়িমীভাবে পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করার ফযীলত লাভ করবে। ” সুবহানাল্লাহ! (আত তারগীব ওয়াত তারহীব ২/৩৩১, আল ক্বওলুল বাদী’ ২৪৮ নং পৃষ্ঠা, ত্ববাক্বাতুশ শাফিয়িয়্যাহ ১/১৮০ ইত্যাদি)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ يَجِيْءُ أَصْحَابُ الْحَدِيْثِ مَعَهُمُ الْمَحَابِرَ فَيَقُوْلُ اللهُ لَهُمْ أَنْتُمْ أَصْحَابُ الْحَدِيْثِ طَالَ مَا كُنْتُمْ تَكْتُبُوْنَ الصَّلَاةَ عَلَى نَبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْطَلِقُوْا إِلَى الْجَنَّةِ
অর্থ: “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যখন ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে তখন মুহাদ্দিছগণ দোয়াতসহ সেখানে উপস্থিত হবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে বলবেন, আপনারা আছহাবে হাদীছ অর্থাৎ হাদীছ শরীফ সংরক্ষণ করেছেন, তাতে দীর্ঘ সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র দুরূদ শরীফ লিখেছেন। কাজেই আপনারা দ্রুত জান্নাতে প্রবেশ করুন। ” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববারানী, আল ক্বওলুল বাদী’ ২৪৮ নং পৃষ্ঠা)
পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার বেমেছাল ফযীলত মুবারক সম্পর্কিত অনেক ওয়াকেয়া মুবারক সংঘটিত হয়েছে। সেখান থেকে নিম্নে কয়েকখানা ওয়াকেয়া উল্লেখ করা হলো-
পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার কারণে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের নামাযে ইমামতী করার দায়িত্ব লাভ:
কিতাবে একটি মশহূর ওয়াক্বেয়াহ বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ جَعْفَرَ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ رَأَيْتُ حَضْرَتْ اَبَا زُرْعَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِي الْمَنَامِ وَهُوَ فِي السَّمَاءِ يُصَلِّيْ بِالْمَلَائِكَةِ فَقُلْتُ لَهُ بِمَ نِلْتَ هَذَا فَقَالَ كَتَبْتُ بِيَدِيْ أَلْفَ أَلْفَ حَدِيْثٍ إِذَا ذَكَرْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَدْ قَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ صَلَّى عَلَيَّ مَرَّةً صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ عَشْرًا
অর্থ: “হযরত জা’ফর ইবনে আব্দুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (হযরত আবূ যুরআ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিছাল শরীফের পর) আমি উনাকে স্বপ্নে দেখলাম। তিনি আসমানে হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকেসহ নামায আদায় করছেন। অর্থাৎ নামাযে উনাদের ইমামতী করছেন। আমি উনাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনি কিভাবে এই ফযীলত হাছিল করলেন? তিনি বললেন, আমি আমার নিজ হাতে ১০ লক্ষ হাদীছ শরীফ লিখেছি। যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নাম মুবারক উল্লেখ করতাম, তখন অত্যন্ত মুহব্বতের সাথে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ লিখতাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, যে ব্যক্তি আমার উপর ১ বার পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তার উপর দশটি রহমত মুবারক বর্ষণ করবেন। অর্থাৎ উনার সম্মানিত নাম মুবারক উনার সাথে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ লেখার কারণেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সন্তুষ্ট হয়ে আমাকে এই মাক্বাম মুবারক হাদিয়া করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ক্বওলুল বদী’ ২৫০ নং পৃষ্ঠা)
বিছাল শরীফের পর সবুজ পোশাক পরিহিত অবস্থায় অত্যন্ত শান-শওকতে ঘুরে বেড়ানো:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ أيْضًا قَالَ حَدَّثَنَا خَلْفٌ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ صَاحِبُ الْخَلْقَانِ قَالَ كَانَ لِيْ صَدِيْقٌ يَطْلُبُ مَعِى الْحَدِيْثَ فَمَاتَ فَرَأَيْتُهُ فِي الْمَنَامِ وَعَلَيْهِ ثِيَابٌ خضر جد وَيُجَوِّلُ فِيْهَا فَقُلْتُ لَهُ اَلَسْتَ كُنْتَ تَطْلُبُ مَعِي الْحَدِيْثَ فَمَا هَذَا الَّذِيْ أَرَى فَقَالَ كُنْتُ أَكْتُبُ مَعَكُمُ الْحَدِيْثَ فَلَا يَمُرُّ بِيْ حَدِيْثٌ فِيْهِ ذِكْرَ النَبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَّا كَتَبْتُ فِيْ أَسْفَلِهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَافَأَنِّيْ بِهَذَا الَّذِيْ تَرَى عَلَيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “হযরত সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে আরো বর্ণিত রয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের নিকট খলকান কিতাবের লিখক হযরত খল্ফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। হযরত খল্ফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমার একজন বন্ধু ছিলেন, যিনি আমার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ সংগ্রহ করতেন। তিনি ইন্তেকাল করার পর আমি স্বপ্নে উনাকে দেখতে পাই, তিনি সবুজ পোশাক পরিহিত অবস্থায় অত্যন্ত শান-শওকতে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমি উনাকে বললাম, আপনি না আমার সাথে মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ সংগ্রহ করতেন? আমি আপনার এটা কি অবস্থা দেখতে পাচ্ছি? (এতো মর্যাদা কিসের কারণে?)। তখন তিনি বললেন, আমি আপনার সাথে মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ লিপিবদ্ধ করতাম। এমন কোনো মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ আমাকে অতিক্রম করতেন না, যেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক থাকতেন কিন্তু আমি মহাসম্মানিত নাম মুবারক উনার পরে পবিত্র দুরূদ শরীফ ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ না লিখতাম। এই পবিত্র দুরূদ শরীফ লিখার কারণেই আমাকে এই প্রতিদান, মর্যাদা দেয়া হয়েছে। আপনি যেটা দেখতে পাচ্ছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ক্বওলুল বদী’ ২৪৮ নং পৃষ্ঠা) (অসমাপ্ত)
-০-
হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












