নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত নাম মুবারক লেখার সময় পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার বেমেছাল ফযীলত মুবারক (৩)
, ২৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৪ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৮ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার কারণে বিশেষ নিয়ামত লাভ:
এ প্রসঙ্গে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي الْحَسَنِ الْمَيْمُوْنِيْ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ رَأَيْتُ الشَّيْخَ أَبَا عَلِي اَلْحَسَنَ بْنَ عُيَيْنَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِي الْمَنَامِ بَعْدَ مَوْتِهِ وَكَأَنَّ عَلَى أَصَابِعِ يَدَيْهِ شَيْئًا مَكْتُوْبًا بِلَوْنِ الذَّهَبِ أَوْ بِلَوْنِ الْزَعْفَرَانِ فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَالِكَ وَقُلْتُ يَا أُسْتَاذُ أَرَى عَلَى أَصَابِعِكَ شَيْئًا مَلِيْحًا مَكْتُوْبًا مَا هُوَ قَالَ يَا بُنَيَّ هَذَا لِكِتَابَتِيْ لَحَدِيْثِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيْ حَدِيْثِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “হযরত আবুল হাসান মাইমূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার সম্মানিত শায়খ আবূ আলী হাসান ইবনে উয়াইনাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উনার বিছাল শরীফের পর স্বপ্নে দেখলাম। উনার দুই হাতের আঙ্গুলসমূহে সোনালী অথবা জাফরানী রঙ্গের কিছু একটা লেখা রয়েছে। তাই আমি উনার নিকট এই বিষয়ে জানতে চাইলাম। আমি বললাম, হে আমার সম্মানিত উস্তাদ! আমি আপনার আঙ্গুলসমূহে অত্যন্ত চমৎকার লাবন্যময় কিছু একটা লেখা দেখতে পাচ্ছি। এটা কি? তিনি বললেন, হে প্রিয় বৎস! এটা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত হাদীছ শরীফ লেখার জন্য। অর্থাৎ পবিত্র হাদীছ শরীফ লেখার সময় পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার কারণে আমাকে এই সম্মান, মর্যাদা দেয়া হয়েছে। ” সুবহানাল্লাহ! (জালাউল আফহাম ৪১১ নং পৃষ্ঠা, আল ক্বওলুল বদী’ ২৪৮ নং পৃষ্ঠা)
অধিক পরিমানে পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার কারণে ক্ষমাপ্রাপ্ত হওয়া:
এ প্রসঙ্গে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ حَمْزَةَ السَّهْمِيْ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ سَمِعْتُ أَبَا مُحَمَّدِ الْمُنِيْرِيْ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَقُوْلُ رَأَيْتُهُ يَعْنِيْ حَضْرَتْ أَحْمَدَ بْنَ مُوْسَى بْنَ عِيْسَى الْجُرْجَانِيَّ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فِي النَّوْمِ بَعْدَ وِفَاتِهِ فَقُلْتُ مَا فَعَلَ اللهُ بِكَ قَالَ غَفَرَ لِيْ بِكَثْرَةِ كُتُبِيِّ الْحَدِيْثِ وَالصَّلَاةُ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “হযরত হামযা আস সাহমী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন,) আমি আবূ মুহম্মদ আল মনীরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বলতে শুনেছি। আমি হযরত আহমদ ইবনে মূসা ইবনে ঈসা জুরজানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে উনার বিছাল শরীফের পর স্বপ্নে দেখে বললাম, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার সাথে কেমন ব্যবহার করেছেন? তিনি বললেন, আমি অনেক হাদীছ শরীফ এবং সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অধিক পরিমাণে পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। ” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববাক্বতুশ শাফিয়িয়্যাহ আল কুবরা ১/১৮০)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِيْ سُلَيْمَانَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ أَوْ حَضْرَتْ عُمَرَ بْنِ أَبِيْ سُلَيْمَانَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَالْأَوَّلُ قَالَ رَأَيْتُ أَبِيْ فِي النَّوْمِ فَقُلْتُ يَا أَبِيْ مَا فَعَلَ اللهُ بِكَ قَالَ غَفَرَ لِيْ قُلْتُ بِمَاذَا قَالَ بِكِتَابَتِي الصَّلَاةِ عَلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيْ كُلِّ حَدِيْثٍ
অর্থ: “হযরত মুহম্মদ ইবনে আবী সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি অথবা হযরত উমর ইবনে আবী সুলাইমান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার সম্মানিত পিতা উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞেস করলাম, হে আমার সম্মানিত পিতা মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার সাথে কেমন ব্যবহার করেছেন? তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। আমি বললাম, কি কারণে ক্ষমা করা হয়েছে? তিনি বললেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ লেখার সময় প্রত্যেক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার কারণে আমাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ক্বওলুল বদী’ ২৫০ নং পৃষ্ঠা)
কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ سُفْيَانَ بْنِ عُيَيْنَةَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ أَيْضًا قَالَ كَانَ لِيْ أَخٌ مُوَاخٌ فِيَّ فَمَاتَ فَرَأَيْتُهُ فِي النَّوْمِ فَقُلْتُ مَا فَعَلَ اللهُ بِكَ قَالَ غَفَرَ لِيْ قُلْتُ بِمَاذَا قَالَ كُنْتُ أَكْتُبُ الْحَدِيْثَ فَإِذَا جَاءَ ذِكْرُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَتَبْتُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَبْتَغِيْ بِذَالِكَ الثَّوَابَ فَغَفَرَ لِيْ بِذَالِكَ
অর্থ: “হযরত সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে আরো বর্ণিত রয়েছে। তিনি বলেন, আমার একজন ভাই ছিলেন যিনি সর্বদা আমার সাথে ভ্রাতৃসুলভ আচরণ করতেন। তিনি যখন ইন্তেকাল করেন তখন আমি উনাকে স্বপ্নে দেখে জিজ্ঞেস করলাম, মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার সাথে কেমন ব্যবহার করেছেন? তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। তখন আমি বললাম, কি কারণে আপনাকে ক্ষমা করা হয়েছে? তিনি বললেন, আমি (জীবদ্দশায়) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ লিখতাম। লেখার সময়) যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক আসতেন। তখন আমি ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ এই পবিত্র দুরূদ শরীফ লিখতাম। এটা লেখার দ্বারা আমি ছাওয়াব কামনা করতাম। আর এ কারণেই আমাকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ক্বওলুল বদী’ ২৪৮ নং পৃষ্ঠা)
কাজেই সকলের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক শুনে অত্যন্ত মুহব্বতের সাথে প্রতিবারই পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করা। একইভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক লেখার সময়ও অত্যন্ত আদব ও মুহব্বতের সাথে পবিত্র দুরূদ শরীফ ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ লিখা। (সমাপ্ত)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মাওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












