পবিত্র যাকাত-ফিতরা আদায়ের হুকুম আহকাম ও মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক-১
, ২৩ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ২০ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার পাঁচটি স্তম্ভের তৃতীয় স্তম্ভ হচ্ছে পবিত্র যাকাত। পবিত্র যাকাত আর্থিক ইবাদত সমূহের মধ্যে অন্যতম ইবাদত।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
بُنِيَ الإِسْلامُ عَلَى خَمْسٍ شَهَادَةِ أَنْ لا إِلَهَ إِلا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ وَإِقَامِ الصَّلاةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالْحَجِّ وَصَوْمِ رَمَضَانَ.
অর্থ: সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ভিত্তি পাঁচটি যথা- (১) সাক্ষ্য দেয়া যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (২) নামায কায়িম করা (৩) যাকাত আদায় করা (৪) হজ্জ পালন করা (৫) এবং পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস উনার রোযা রাখা।”(বুখারী শরীফ)
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ৫টি স্তম্ভের মধ্যে ৩য় বা মধ্যবর্তী স্তম্ভ যাকাত যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাকাত ছাড়া সম্মানিত দ্বীন ইসলাম নামক ঘর প্রতিষ্ঠিত করা ও টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। একটি খুঁটি না থাকলে ঘর সেদিকে কাত হয়ে যায়। আর মাঝখানের খুঁটি যদি না থাকে তাহলে ঘর ধ্বসে পড়বে। কাজেই প্রত্যেক ধনী মুসলমানের উপর পবিত্র যাকাত আদায় করা ফরয।
সম্পদের যাকাত: নিত্য প্রয়োজনীয় সম্পদ বাদে নিছাব পরিমাণ মাল অর্থাৎ এ বছর ৬৭,৩৩৭ টাকার সম্পদ যদি কারো মালিকানায় পূর্ণ এক বৎসর থাকে, তাহলে উক্ত সম্পদের শতকরা ২.৫ ভাগ যাকাত হিসেবে আদায় করতে হবে।
ফসলের যাকাত বা উশর: উশর শব্দটি এসেছে ‘আশরাতুন’ শব্দ থেকে। কৃষিজাত পণ্য, ফল ও ফসলের পবিত্র যাকাতকে উশর বলে। উশর আদায়ের নির্দিষ্ট কোন সময় ও নিছাব নেই। যতবারই ফল বা ফসল উৎপন্ন হবে ততবারই উশর দিতে হবে, কম-বেশি যাই হোক।
সম্মানিত হানাফী মাযহাব মতে পবিত্র উশর উনার কোন নিছাব নেই। বিনা পরিশ্রমে যমীন থেকে উৎপাদিত ফল-ফসলাদির ১০ ভাগের ১ ভাগ বা তার সমমূল্য প্রদান করতে হবে। যেমন: বাড়ীর আঙ্গিনায় একটি আম গাছে কোন পরিশ্রম ছাড়াই বছরের পর বছর আম হয়। এক্ষেত্রে, ১০০ টি আম হলে উশর দিতে হবে ১০টি আম বা তার সমমূল্য। আর পরিশ্রম করে ফল-ফসলাদি ফলানো হলে তখন ২০ ভাগের ১ ভাগ বা তার সমমূল্য প্রদান করতে হবে। যেমন: ধান, গম ইত্যাদির ক্ষেত্রে। যদি কোন জমিতে ১০০ মণ ধান হয় তবে উশর দিতে হবে ৫ মণ বা তার সমমূল্য।
যিনি ফল-ফসলাদি লাভ করবেন তিনিই উশর দিবেন। বিনা পরিশ্রমে হলে ১০ ভাগের ১ ভাগ। আর পরিশ্রম করে হলে ২০ ভাগের ১ ভাগ। যখন ফল-ফসলাদি তোলা হবে তখনই উশর বা নিছফে উশর দিতে হবে এবং যতবার ফল-ফসলাদি তোলা হবে ততবারই তার উশর (১০ ভাগের ১ ভাগ) বা নিছফে উশর (২০ ভাগের ১ ভাগ) দিতে হবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَآتُوا حَقَّهُ يَوْمَ حَصَادِهِ.
অর্থ: তোমরা ফসল কাটার সময় তার হক (উশর) আদায় করো। (পবিত্র সূরা আনাম শরীফ :১৪৬)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












