ইতিহাস
বাংলাদেশে দ্বীন ইসলাম উনার আগমন ও মুসলিম শাসনের ইতিহাস (৩)
, ২২ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) ইতিহাস
ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বাংলা বিজয় করার পর দেশ-দেশান্তর থেকে মুসলমানগণ এসে বাংলায় স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। ব্যবসা বাণিজ্য, সেনাবাহিনীতে চাকুরী ও অন্যান্য নানাবিধ উপায়ে মুসলমানরা জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। মুসলমানদের এ আগমনের গতিধারা চলতে থাকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত। ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী রহমতুল্লাহি আলাইহির বাংলা বিজয়ের পর থেকে ১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে বাংলার শেষ মুসলিম সালতানাতের পতন পর্যন্ত ৫৫৪ বছরে ১০১ জন মুসলিম শাসক বাংলা শাসন করেন।
বাংলার মুসলিম শাসনকে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
* খিলজীদের অধীনে ১২০৩-১২২৭ সাল পর্যন্ত
* দিল্লীর অধীনে ১২২৭-১৩৪১ সাল পর্যন্ত।
* ইলিয়াছ শাহী বংশের অধীনে ১৩৪২-১৪১৩ সাল পর্যন্ত।
* জালাল উদ্দিনের অধীনে ১৪১৪-১৪৪১ সাল পর্যন্ত।
* ইলিয়াছ শাহী বংশের অধীনে (দ্বিতীয় ধারা) ১৪৪২-১৪৮৭ সাল পর্যন্ত।
* হাবশী শাসনাধীন ১৪৮৭-১৪৯৩ সাল পর্যন্ত।
* হুসেনশাহী বংশের অধীনে ১৪৯৩-১৫৩৮ সাল পর্যন্ত।
* পাঠানদের অধীনে (শের শাহ ও সূর বংশ) ১৫৩৮-১৫৬৪ সাল পর্যন্ত।
* কররাণী বংশের অধীনে ১৫৬৫-১৫৮৬ সাল পর্যন্ত।
* মোঘল শাসনাধীন ১৫৭৬-১৭৫৭ সাল পর্যন্ত।
সাড়ে ৫০০ বছরের মুসলিম শাসনে যারা বাংলার মসনদে ছিলেন উনাদের মধ্যে কিছুসংখ্যক এমন ছিলেন যারা নিজ শক্তিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন এবং দিল্লীর শাসকের অনুমোদন লাভ করেছিলেন। কিছুসংখ্যক শাসক ছিলেন সম্পূর্ণ স্বাধীন। আর অবশিষ্টাংশ দিল্লীর দরবার থেকে নিয়োগপত্র লাভ করে গভর্ণর অথবা নাজিম হিসেবে বাংলা শাসন করেন।
হযরত ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বাংলা বিজয় করার পর বাংলায় আগত মুসলমানগণ এদেরকে মনেপ্রাণে মুহব্বত করেন এবং এ দেশকে স্থায়ী আবাসভূমি হিসেবে গ্রহণ করেন ও এ দেশের পূর্ব অধিবাসীদের সাথে ভালো আচরণ করেন। শাসক হিসেবে মুসলমানরা কখনই স্থানীয় জনগণের উপর কোনোরুপ অন্যায়-অবিচার করেননি। জনসাধারণও মুসলমানদের ইনসাফপূর্ণ আচরণে মুগ্ধ হয়ে উনাদের শাসন মেনে নিয়েছিলো।
বখতিয়ার খিলজী রহমতুল্লাহি আলাইহি বাংলা বিজয়ের পর আভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি মুসলমানদের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে মসজিদ ও মাদরাসা স্থাপন করেন। সে সময় উনার উদারতা দেখে অনেক অমুসলিমই দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করছিলো। এ বিষয়ে ঐতিহাসিকরা বলেন, ‘তিনি রক্তপিপাসু ছিলেন না। অকারণে হত্যা ও জনসাধারণের উপর জুলুম করতেন না। দেশে এক ধরনের জায়গীর প্রথা কায়েমের দ্বারা আভ্যন্তরীণ প্রশাসন ও সামরিক প্রধানদের সন্তুষ্ট রাখতেন।
বাংলার কতিপয় শাসন ক্ষমতায় ছিলেন-
১২০৩-৬: মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজী
১২০৬-৮: মালিক ইজ্জদ্দীন মুহম্মদ শিরীন খিলজী
১২০৮-১০: হুসামউদ্দীন ইওয়াজ
১২১০-১৩: আলী মর্দার খিলজী
১২১৩-২৭: সুলতান গিয়াস উদ্দীন
উপরোক্ত সবার শাসনই ছিলো তৎকালীন দিল্লীর শাসক সুলতান কুতুবুদ্দীন আইবেকের সময়। (অসমাপ্ত)
-মুহম্মদ শাহ জালাল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৪০)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কেমন ছিলো মোঘল সালতানাতের গোলন্দাজ এবং অশ্বারোহী বাহিনী
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পান্থনিবাস ও সরাইখানা নির্মাণে মুসলমানদের অনবদ্য অবদান
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৯)
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুসলমানদের শিক্ষা-দীক্ষার বিরোধিতায় বিধর্মী-অমুসলিমরা
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী বাংলার হিন্দু ধনিক-বণিক, বেনিয়া শ্রেণী, ব্যাংকার প্রভৃতির সাথে এক গভীর ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মুসলিম
১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইউরোপকে যেভাবে সমৃদ্ধ করেছেন আফ্রিকান মুসলমানরা
১২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গুজরাটের সুলতান মুজাফফর শাহের পরহেজগারিতা এবং ভ্রাতৃত্ববোধ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৭)
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কেমন ছিলেন ইসলামী ইতিহাসের প্রথম আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঐতিহাসিক মুসলিমবাগ ঈদগাহ-ই কি আজকের ঢাকেশ্বরী মন্দির?
২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
১২টি চন্দ্রমাসের নাম এবং নামকরণের সার্থকতা (২)
২৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












