ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (১৪)
, ১৪ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৬ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১৫ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ২৮ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) স্থাপত্য নিদর্শন
শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রিষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিষ্টীয় ব্রিটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিশর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য “
Confession of British Spy and British enmity against Islam” গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে অনুবাদ প্রকাশ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
তার মুতা বিবাহের তৃতীয় দিনে ‘শরাব হারাম নয়’ এ বিষয়ে নজদের মুহম্মদের সাথে খুব লম্বা একটা বিতর্ক হয়ে গেলো। যদিও সে অনেক আয়াত শরীফ এবং হাদীছ শরীফের উদ্বৃতি দিলো যাতে প্রমাণ হয় শরাব পান করা হারাম কিন্তু সবগুলোই খ-ন করলাম এবং পরিশেষে বললাম, ‘এটা সত্য যে ইয়াজিদ, উমাইয়া এবং আব্বাসীয় কথিত খলীফারা শরাব পান করেছেন। ’ তারা সবাই ভুল করেছেন আর শুধু আপনিই সঠিক তাতো নয়?
নিঃসন্দেহে তারা আপনার চাইতে বেশী কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ জানতেন। তারা কুরআন ও সুন্নাহ্র আলোকেই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে, শরাব পান করা মাকরূহ, হারাম নয়। যদিও ইহুদী ও খ্রিস্টানদের কিতাবে লেখা আছে শরাব পান করা মুবাহ্। সব ধর্মইতো আল্লাহ পাক উনার আদেশ।
বস্তুত: এমন বর্ণনাও আছে যে, এ সংক্রান্ত আয়াত শরীফ নাযিল হবার আগ পর্যন্ত হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি শরাব পান করেছেন। (যদিও তথ্যটি সঠিক নয়) শরাব হারাম হলে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিশ্চয়ই উনাকে ছেড়ে দিতেন না। যেহেতু তিনি কোন শাস্তি পাননি, ধরে নেয়া যেতে পারে শরাব হারাম নয়।
[সত্য হচ্ছে, শরাব হারাম হওয়ার আগ পর্যন্ত হযরত উমর আলাইহিস সালাম যদিও তা কিছু পান করে থাকেন না কেন কিন্তু শরাব নিষিদ্ধ হওয়ার পর আর কোনদিনই শরাব পান করেননি। উল্লেখ্য, ওহী নাযিল হওয়ার পূর্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাহাকেও কোন বিষয় আদেশ-নিষেধ করতেন না। পরবর্তীতে যদিও কয়েকজন উমাইয়া এবং আব্বাসীয় খলীফা শরাব পান করেও থাকে তাতে এটা প্রমাণিত হয় না যে, এলকোহল সহযোগে পানীয় গ্রহণ করা মাকরূহ্ বরং এটাই প্রমাণ করে যে, তারা ছিলো এ ব্যাপারে গুণাহ্গার। কেননা তারা হারাম কাজ করেছিলো। হেমপার কর্তৃক উদ্ধৃত আয়াত শরীফ এবং অন্যান্য আয়াত শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, শরাব পান করা হারাম।
“রিয়াদ-উন-নাসিহীন” কিতাবে বলা হয়েছে, প্রথমদিকে শরাব পান করার ব্যাপারে আদেশ বা নিষেধ কোনটাই ছিলো না। কিন্তু পরবর্তীতে সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ২১৯নং আয়াত শরীফ নাযিল হলে সেখানে মাদকাসক্ত অবস্থায় নামাযের নিকটবর্তী হতে নিষেধাজ্ঞা আসে। পরিশেষে, সূরা মায়েদা শরীফ উনার ৯৩নং আয়াত শরীফের মাধ্যমে শরাবকে একেবারে হারাম করে দেয়া হয়। হাদীছ শরীফেও নিম্নরূপ বলা হয়েছে, ‘যা বেশী পরিমাণ গ্রহণ করলে নেশাগ্রস্ত করবে তা অল্প পরিমাণ গ্রহণ করাও হারাম। শরাব পান করা নিকৃষ্ট পর্যায়ের গুনাহ্। আর যারা শরাব পান করে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করো না। তাদের জানাযায় যেও না। তাদের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করো না। শরাব পান করা মূর্তিপুজার সমতুল্য। যারা শরাব পান করে, বিক্রি করে এবং সরবরাহ করে তাদের উপর আল্লাহ পাক উনার লা’নত। ] - গ্রন্থকার।
ভাষান্তর : আবুল বাশার।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণে মুসলমানদের অবদান
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক মসজিদ “মসজিদ নেগারা”
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে মসজিদ থেকে গভীর রাতে ভেসে আসতো যিকিরের আওয়াজ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৮)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৬)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৫)
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৪)
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৩)
০৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্থাপত্যশৈলীর অনন্য স্থাপনা মানিকগঞ্জের ‘ওয়াসি মহল’
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (১)
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












