স্থাপত্য-নিদর্শন
ভারতের জান্নাতবাদে ঐতিহাসিক জাহানীয়া মসজিদ
এডমিন, ২৭ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১২ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৭ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন

প্রসঙ্গত, ভারতে অবস্থিত জান্নাতবাদ বর্তমানে গৌড় নামে পরিচিত। মুসলমানরা যখন এই অঞ্চল শাসন করেছেন তখন এই অঞ্চলের নাম ছিলো জান্নাতবাদ। তখন বাংলার রাজধানী ছিলো জান্নাতবাদেই।
এই ঐতিহাসিক মসজিদটি চিশতিয়া তরিক্বার বিশিষ্ট বুযুর্গ সূফী শায়েখ আঁখি সিরাজউদ্দীন উছমান আওদাহী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র মাজার শরীফ এর কিছুটা দক্ষিণে অবস্থিত, জান্নাতবাদ সাগর দিঘির উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। জান্নাতবাদের ঐতিহাসিক জাহানীয়া মসজিদটি ইটের তৈরি। মসজিদের বাইরের দিকের পরিমাপ ১৭.৫ মি.দ্ধ ১২.৮ মি. এবং ভেতরের দিকের পরিমাপ ১২.২০ মি.দ্ধ ৮ মি.। মসজিদের অভ্যন্তরীণ অংশ দুটি লাইনে বিভক্ত, যার প্রতিটি লাইনে তিনটি বর্গাকার গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের পূর্বদিকে তিনটি প্রবেশপথ এবং কোণগুলিতে অষ্টভুজাকৃতি মিনার রয়েছে, মিনারের উপরের অংশটি সূচের ডগার মতো ছোট করে নির্মান করা হয়েছিলো। মিনারের উপরের মোল্ডিং করা বাঁকা কার্নিস অনেকটা বাংলা কুঁড়েঘরের মতো দেখতে। বারান্দাহীন এই ঐতিহাসিক মসজিদে মোট গম্বুজের সংখ্যা ৮ টি।
মসজিদের দেয়াল ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সমান্তরাল করে নির্মাণ করা হয়েছে। দেয়ালে অবস্থিত দরজায় যে নকশা করা হয়েছে তা সু-শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা হয়েছে, এগুলিকে উপরের দিকে লম্বা প্যাঁচানো রশির নকশা দ্বারা বিভক্ত করা হয়েছে। সুস্পষ্টভাবে এরূপ নকশা প্রথম চিকা ভবন নামে পরিচিত নাসিরুদ্দীন মাহমুদ শাহ এর মাজারে ও দাখিল দরওয়াজা বা জান্নাতবাদের প্রধান প্রবেশপথের দরজার কোণার বুরুজগুলিতে এবং পুরাপুরিভাবে কদম রসূল মসজিদে দেখা যায়। ভারতের জান্নাতবাদের এই ঐতিহাসিক জাহানীয়া মসজিদটি ও কদম রসূল মসজিদটি স্থাপত্যর এক নান্দনিক ইতিহাস ধারণ করে আছে। এই ঐতিহাসিক মসজিদ দুটির বৈশিষ্ট্যে জান্নাতবাদের অন্যান্য স্থাপত্য নিদর্শন থেকে আলাদা।
সূত্র: মসজিদ দেশ-দেশান্তরে, বাংলাপিডিয়া।