মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে নূরুত তাশরীফ মুবারক করিয়েছেন
, ০২ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৬ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৫ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ০৯ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
খ্বালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاِذْ اَخَذَ اللهُ مِيْثَاقَ النَّبِـيّٖنَ لَمَاۤ اٰتَيْتُكُمْ مِّنْ كِتٰبٍ وَّحِكْمَةٍ ثُـمَّ جَآءَكُمْ رَسُوْلٌ مُّصَدِّقٌ لِّـمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهٖ وَلَتَنْصُرُنَّهٗ قَالَ ءَاَقْرَرْتُـمْ وَاَخَذْتُـمْ عَلـٰى ذٰلِكُمْ اِصْرِىْ قَالُوْاۤ اَقْرَرْنَا قَالَ فَاشْهَدُوْا وَاَنَا مَعَكُمْ مِّنَ الشّٰهِدِيْنَ. فَمَنْ تَوَلّٰـى بَعْدَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓـئِكَ هُمُ الْفٰسِقُوْنَ
অর্থ: “আর যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন যে, আপনাদেরকে সম্মানিত কিতাব মুবারক এবং হিকমত মুবারক দেয়া হবে। অতঃপর আপনাদের নিকট আমার পক্ষ থেকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করবেন। তিনি আপনাদেরকে এবং আপনাদের কাছে যা কিছু রয়েছেন সমস্ত কিছুর তাছদীক্ব বা সত্যায়ন করবেন। আপনারা অবশ্যই অবশ্যই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনবেন এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিবেন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি তা স্বীকার করে নিলেন এবং এই বিষয়ে আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াদা মুবারক গ্রহণ করলেন অর্থাৎ আমার শর্ত মুবারক মেনে নিলেন? উনারা বললেন, আমরা স্বীকার করে নিলাম, মেনে নিলাম, গ্রহণ করলাম। মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সকলে সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। সুবহানাল্লাহ! এরপর যারা এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াদা মুবারক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াদা মুবারক উনার খিলাফ করবে, তারাই হচ্ছে ফাসিক্ব অর্থাৎ চরম নাফরমান, কাট্টা কাফির। ” না‘ঊযুবিল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১-৮২)
এখানে মহান আল্লহ পাক তিনি বলেছেন, ‘তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে ওয়াদা মুবারক নিয়েছেন। ’ কখন ওয়াদা মুবারক নিয়েছেন? রোজে আজলে।
তাহলে এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত যে, মহান আল্লহ পাক তিনি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নবী ও রসূল হিসেবেই সৃষ্টি মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে নূরুত তাশরীফ মুবারক করিয়েছেন। কেননা, এখানে বলা হয়েছে যে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার ওয়াদা মুবারক নিয়েছেন। ’ সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন,
هُنَالِكَ دَعَا زَكَرِيَّا رَبَّهٗ قَالَ رَبِّ هَبْ لِىْ مِنْ لَّدُنْكَ ذُرِّيَّةً طَيِّبَةً اِنَّكَ سَمِيْعُ الدُّعَآءِ. فَنَادَتْهُ الْمَلـٰـئِكَةُ وَهُوَ قَآئِمٌ يُّصَلِّىْ فِى الْمِحْرَابِ اَنَّ اللهَ يُبَشِّرُكَ بِيَحْيٰى مُصَدِّقًا بِۢكَلِمَةٍ مِّنَ اللهِ وَسَيِّدًا وَّحَصُوْرًا وَّنَبِيًّا مِّنَ الصّٰلِحِيْنَ
অর্থ: “সেখানেই (মেহরাবে) হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম তিনি উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দোয়া করলেন। তিনি বললেন, “আয় বারে এলাহী, মহান আল্লাহ পাক! আপনার তরফ থেকে আমাকে পবিত্রতম সন্তান দান করুন। নিশ্চয়ই আপনি দোয়া শ্রবণকারী। অতঃপর (হযরত যাকারিয়া আলাইহিস সালাম) তিনি মেহরাবে নামাযে দাঁড়ানো অবস্থায় উনাকে হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনারা নেদা করলেন (ডেকে বললেন) যে, ‘নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম উনার সুসংবাদ দিচ্ছেন, যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার কালিমা উনার সত্যায়নকারী, সাইয়্যিদ, দুনিয়া-বিরাগ এবং ছলিহীন নবী’। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৮-৩৯)
অতএব, মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নবী ও রসূল হিসেবেই সৃষ্টি করেছেন। তবে, উনাদের দুনিয়াবী দৃষ্টিতে বয়স মুবারক অনুযায়ী কারো ৪০ বছর বয়স মুবারক-এ, কারো ৫০ বছর বয়স মুবারক-এ, কারো ৬০ বছর বয়স মুবারক-এ, কারো ৩০ বছর বয়স মুবারক-এ অর্থাৎ একেক জনের একেক সময় অনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ পেয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়টা আরো আখাছ্ছুল খাছ বিষয়। সুবহানাল্লাহ! খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নবী-রসূল হিসেবে তো অবশ্যই; শুধু তাই নয়, উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, হাবীব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে নূরুত তাশরীফ মুবারক করিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُنْتُ اَوَّلَ النَّبِيِّيْنَ فِى الْخَلْقِ وَاٰخِرَهُمْ فِى الْبَعْثِ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- আমি সর্বপ্রথম নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসাবে নূরুত তাশরীফ মুবারক নিয়েছি। কিন্তু আমি প্রেরিত হয়েছি অর্থাৎ দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নিয়েছি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের শেষে। ” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে আবী হাতিম, তাফসীরে বাগবী, দূররে মানছুর, কানযুল উম্মাল, খাছাইছুল কুবরা, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মাওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












