মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে নূরুত তাশরীফ মুবারক করিয়েছেন (৩)
, ০৪ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৮ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৭ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ১১ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,
عَنْ حَضْرَتْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ نَقْشُ خَاتِمِ حَضْرَتْ سُلَيْمَانَ بْنِ دَاوٗدَ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ: “হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত সুলাইমান ইবনে দাঊদ আলাইহিমাস সালাম উনার সম্মানিত আংটি মুবারক-এ নক্বশা করে লিখা ছিলেন- لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’। ” সুবহানাল্লাহ! (ফাওয়াইদ, আস সীরাতুল হালাবিয়্যাহ্ ১/৩২০, তাফসীরে কুরতুবী ১৫/২০০, খছায়িছুল কুবরা ১/১২, ‘উয়ূনুল আছার ১/৯৫)
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন, হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি যখন হযরত রানী বিলক্বীস আলাইহাস সালাম উনার নিকট চিঠি পাঠালেন সম্মানিত ঈমান গ্রহণ করার জন্য, তখন হযরত রানী বিলক্বীস আলাইহাস সালাম তিনি উনার অনেক সেনাপতি এবং সৈন্য-সামন্তসহ হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ এসে সম্মানিত ঈমান গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উনাদের দুজনের মধ্যে বিশেষ কথোপকথন মুবারক হয়। এক পর্যায়ে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি বলেন,
وَيْحَكِ يَا حَضْرَتْ بِلْقِيْسُ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَفْنَيْتِ شَبَابَكِ فِىْ عِبَادَةِ الشَّمْسِ مِنْ دُوْنِ اللهِ قَالَتْ يَا نَبِىَّ اللهِ دَعْ مَا مَضٰى فَالْاٰنَ قَدْ دَخَلْتُ فِىْ دِيْنِكَ وَقُلْتُ بِـمَقَالَتِكَ وَشَهِدْتُّ بِشَهَادَتِكَ غَيْرَ اَنِّىْ اَرٰى خَاتِمَكَ مَنْقُوْشًا بِلَا حَفْرٍ وَلَا كِتَابَةٍ فَمَا الَّذِىْ عَلٰى خَاتِمِكَ قَالَ حَضْرَتْ سُلَيْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ لَآ اِلـٰهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَتْ حَضْرَتْ بِلْقِيْسُ عَلَيْهَا السَّلَامُ مَنْ سَيِّدُنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ حَضْرَتْ سُلَيْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّدُنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ فِىْ اٰخِرِ الزَّمَانِ قَالَتْ حَضْرَتْ بِلْقِيْسُ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَلِمَ صَارَ اِسْمُهٗ عَلٰى خَاتِمِكَ دُوْنَ اِسْمِكَ فَقَالَ لِاَنَّهٗ اَكْرَمُ عَلَى اللهِ مِنِّىْ وَلَنْ يَّنْفَعَكِ الْاِيْمَانُ وَلَنْ يَّقْبَلَ اللهُ مِنْكِ صَرْفًا وَّلَا عَدْلًا حَتّٰى تُؤْمِنِىْ بِسَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاٰمَنَتْ حَضْرَتْ بِلْقِيْسُ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَمَنْ مَّعَهَا بِنَبِيِّنَا سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ قَبْلِ اَنْ يُّوْلَدَ بِدَهْرٍ طَوِيْلٍ
অর্থ: “হে হযরত রানী বিলক্বীস আলাইহাস সালাম! আপনার জন্য আফসোস! আপনি আপনার যৌবনকালটা (জীবনের মূল সময়টা) মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দেগী না করে সূর্যের উপাসনা করে কাটিয়েছেন। ’ হযরত রানী বিলক্বীস আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ‘হে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নবী-রসূল আলাইহিস সালাম! যেটা অতীত হয়ে গেছে, সেটার জন্য আমি লজ্জিত এবং তাওবা-ইস্তিগফার করছি। এখন তো আমি আপনার সম্মানিত দ্বীন গ্রহণ করেছি, আপনার নছীহত মুবারক অনুযায়ী কথা বলছি এবং আপনার সাক্ষ্য অনুযায়ী সাক্ষ্য দিয়েছি অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান এনেছি। তবে আমি আপনার সম্মানিত আংটি মুবারক উনার মধ্যে অত্যন্ত সুন্দর নক্বশাকৃত একটি বিষয় দেখতে পাচ্ছি- যা খোদাই করাও নয়, লিখিতও নয়। আপনার সম্মানিত আংটি মুবারক উনার মধ্যে যেই নক্বশা মুবারক, এটা মূলত কী? হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, (এটা হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ-)لَآ اِلـٰهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনার সম্মানিত নক্বশা মুবারক। হযরত রানী বিলক্বীস আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ‘সাইয়্যিদুনা মাওলানা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কে?’ হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘তিনি আখিরী যামানায় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নিবেন। ’ হযরত রানী বিলক্বীস আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ‘তাহলে আপনার সম্মানিত আংটি মুবারক উনার মধ্যে আপনার সম্মানিত নাম মুবারক না হয়ে উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় নাম মুবারক হলেন কেন?’ তখন হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ‘কারণ তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আমার চেয়ে অনেক সম্মানিত। আর ঈমান আপনাকে কস্মিনকালেও ফায়দা দিবে না এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনার ফরয, ওয়াজিব, সুন্নত ও নফলসহ যত প্রকার ইবাদত-বন্দেগী রয়েছেন, সমস্ত প্রকার ইবাদত-বন্দেগী এবং তাওবা-ইস্তিগফার কোনো কিছুই কস্মিনকালেও ক্ববূল করবেন না; যতক্ষণ পর্যন্ত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি আপনি সম্মানিত ঈমান না আনবেন। ’ অতঃপর হযরত রানী বিলক্বীস আলাইহাস সালাম তিনি এবং উনার সাথে যাঁরা ছিলেন সকলেই আমাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী-রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত তাশরীফ মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক) প্রকাশের অনেক পূর্বেই উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান আনেন। ” সুবহানাল্লাহ! (দারজুদ দুরার ফী তাফসীরিল আয়ি ওয়াস সুওয়ার ৩/১৩৪০-১৩৪১)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মাওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












