মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার তরমুজ
, ০৩ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৪ ছানী ‘আশার, ১৩৯০ শামসী সন , ২৪ মে, ২০২৩ খ্রি:, ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম

عن حَضْرَتْ أُمّ الْمُؤْمِنِينَ الثَّالِثَة الصَّدِّيقَة عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ الْبِطِّيخَ بِالرُّطَبِ فَيَقُولُ نَكْسِرُ حَرَّ هَذَا بِبَرْدِ هَذَا وَبَرْدَ هَذَا بِحَرِّ هَذَا.
অর্থ : “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাজা খেজুর দিয়ে তরমুজ মহাসম্মানিত আহার মুবারক করতেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করতেন, এর ঠা-া ওটার গরম কমাবে, এবং এর গরম ওটার ঠা-া কমিয়ে দিবে।” (আবূ দাউদ শরীফ : কিতাবুত ত্বয়ামাহ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৩৮৩৬)
তরমুজ সন্তান ধারণে সহায়ক:
তরমুজের অসাধারণ গুণাগুণ সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “তোমাদের মধ্যে এমন কোন মহিলা নেই যে সন্তান ধারণ করা অবস্থায় তরমুজ খেয়েছে অথচ সন্তান জন্মদানে ব্যর্থ হয়েছে, এটি নবজাতকের মুখ-অবয়ব ও চরিত্রের জন্য উত্তম।”
তরমুজের রাসায়নিক উপাদান : তরমুজে প্রায় ৯২% পানি আছে। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তরমুজে রয়েছে ৯২ থেকে ৯৫ গ্রাম পানি, আঁশ ০.২ গ্রাম, আমিষ ০.৫ গ্রাম, চর্বি ০.২ গ্রাম, ক্যালোরি ১৫ থেকে ১৬ মিলিগ্রাম। এছাড়াও তরমুজে ক্যালসিয়াম রয়েছে ১০ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৯ মিলিগ্রাম, কার্বহাইড্রেট ৩.৫ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.২ গ্রাম, ফসফরাস ১২ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন ০.২ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ও ভিটামিন বি। তরমুজের বিশেষ কয়েক ধরনের অ্যামাইনো এসিডও পাওয়া যায়।
তরমুজের উপকারিতা :
১. পানি শূণ্যতা নিবারণ করে : তরমুজে যেহেতু প্রায় ৯২% পানি। তাই নিদারুণ গরমের মধ্যে তরমুজ খেলে সহজেই পানির তৃষ্ণা মিটানো যায়, ফলে পানি শূণ্যতা নিবারণ করা যায়।
২. মূত্রবর্ধক এবং কিডনি ও লিভার সুস্থ রাখে : তরমুজে রয়েছে প্রচুর পানীয় উপাদান যা প্র¯্রাবের জ্বালা কমায়। এছাড়াও তরমুজ প্র¯্রাবের প্রবাহ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা একটি প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিও কমায়। ডাবের পানির যে গুণাগুণ, তরমুজেও রয়েছে সেই গুণাগুণ। এটি কিডনি ও মুত্রথলিকে বর্জ্যমুক্ত করে।
৩. চোখ সুস্থ রাখে : তরমুজের লাল রঙ বিটা ক্যারোটিনের একটি চমৎকার উৎস যা চোখের রেটিনা সুরক্ষায় অত্যন্ত উপকারী। আর তাই নিয়মিত তরমুজ খেলে চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি পায় এবং চোখের ছানি পড়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। বিটা ক্যারোটিন রাতকানা প্রতিরোধেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
৪. ত্বকের উপকার করে : তরমুজের সমৃদ্ধ ভিটামিন এ দেহের ত্বককে ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে। নিয়মিত তরমুজ খেলে ত্বকের হারিয়ে যাওয়া লাবণ্য ফিরে আসে। ত্বক উজ্জ্বল হয় ও সুস্থ থাকে। ত্বকের মেচতা দূর করতে সহায়ক। লাইকোপিনসহ বিভিন্ন উপাদানে সমৃদ্ধ তরমুজ খাওয়ার অভ্যাসে বার্ধক্য দেরিতে আসে। ত্বকে সহজে ভাঁজ বা বলিরেখা পড়ে না।
৫. হৃদযন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে : তরমুজ ভাসডিলেশন এর মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ উন্নত করে ও কার্ডিওভাসকুলার এর সাথে সম্পর্কিত ফাংশনসমূহ উন্নত করে ফলে হৃদযন্ত্রে সঠিকভাবে রক্তপ্রবাহ হতে সাহায্য করে। এতে হৃদযন্ত্রে ব্লক হওয়ার প্রবণতা অনেকটা হ্রাস পায়। তরমুজে আরও আছে পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও তরমুজের বিচিতে রয়েছে আর্গিনাইন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড। যার কাজ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ । করোনারি হার্ট ডিজিজের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এটা একটা জরুরী উপাদান।
৬. ওজন কমাতে সহায়তা করে : তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে এমাইনো এসিড যা শরীরের কোলেস্টরেল ও চর্বি কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। এছাড়া তরমুজে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট যা শরীরের জমে থাকা কোলেষ্টরেল কমাতে সহায়তা করে। এছাড়াও তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং খুব অল্প পরিমাণে ক্যালরি। আর তাই পেট ভরে তরমুজ খেলেও সেই অনুযায়ী ওজন বাড়ে না ।
৭. হাড় মজবুত করে : তরমুজ লাইকোপিনো নামক লাল উপাদান যাতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম। তাই তরমুজ হাড় গঠন ও মজবুত করতে অত্যন্ত সহায়ক। তরমুজ পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ফল তাই হাড়ের ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং হাড়ের জোড়া/সন্ধি মজবুত করে।
৮. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে : তরমুজে লাইকোপেন নামের এক ধরনের খাদ্য উপাদান রয়েছে, যা অস্ত্রের ক্যান্সার ও প্রোষ্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও নিয়মিত তরমুজ খেলে ফুসফুসের ক্যান্সার ও ব্রেষ্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।
৯. প্রজনন শক্তি বৃদ্ধি করে : টেক্সাস এ অ্যান্ড এম ইউনিভার্সিটির গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা যৌনশক্তির দিক থেকে দুর্বল তাদের জন্য তরমুজ প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে। একটি তরমুজে প্রচুর পরিমাণে সিট্রোলিন নামের অ্যামাইনো এসিড থাকে যা ভায়াগ্রার বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
উটের গোশ্ত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী চামড়ার মশক
১৯ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যমযমের পানি পান করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব ও বেমেছাল উপকারিতা
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নতী খাবার ছারীদ
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন খাঁটি মধুসহ সকল সুন্নতী সামগ্রী
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
রুটি-গোশত ও রুটি-খেজুর একত্রে খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘হাইস’
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্য “রুটি”
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার “হারীসাহ
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খরগোশের গোশত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সেলাইবিহীন সুন্নতী ইযার বা লুঙ্গি
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)