মালিকুত তামাম, ক্বাসিমুন নিআম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাতহ মুবারক উনার বরকত ও ফযীলত (৬)
, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
আরো একখানা ওয়াক্বেয়া মুবারক:
একবার হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অল্প সংখ্যক সৈন্য নিয়ে শাম দেশে জাবালা ইবনে আয়হাম গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য গমন করলেন। কিন্তু ভুলক্রমে টুপি মুবারক (যেই টুপি মুবারক উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক সেলাই করা ছিলো) ঘরে রেখে যান। উভয় দল মুখোমুখি হওয়ার পর রোমদের প্রধান কর্মকর্তা মারা যায়। তখন জাবালা সকল সৈন্যদের নির্দেশ দেয় যে, মুসলমানদের উপর এক সঙ্গে প্রচন্ড আক্রমণ চালাও। আক্রমণের মুখে মুসলমানদের অবস্থা কিছুটা স্পর্শকাতর হয়ে যায়। হযরত রাফে’ ইবনে আমর তাঈ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে বললেন, মনে হচ্ছে আজ আমাদের জীবনের শেষ মুহূর্ত, আমরা শাহাদাতের পেয়ালা পান করতে যাচ্ছি। হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। কারণ আমি আজ ঐ টুপি মুবারক ভুলক্রমে ঘরে রেখে এসেছি যার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক রয়েছেন।
এদিকে অবস্থা ছিল এই, আর ওদিকে সে রাত্রিতেই মুসলিম সেনা প্রধান হযরত আবূ উবায়দা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্ন মুবারক দেখলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে আদেশ মুবারক করলেন, এই সময় আপনারা ঘুমিয়ে আছেন? হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাহায্যার্থে এগিয়ে যান। কাফিররা উনাদেরকে ঘিরে ফেলেছে।
হযরত আবূ উবায়দা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি তখনই ঘুম থেকে জেগে উঠলেন এবং সৈন্যবাহিনীর মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, এক মুহূর্তও বিলম্ব না করে সকলেই তৈরী হয়ে যান। অতঃপর তিনি যতো দ্রুত সম্ভব তৈরী হয়ে মুসলিম সৈন্যদেরকে নিয়ে রওয়ানা হলেন। পথিমধ্যে উনারা একজন আরোহী দেখতে পেলেন, যিনি ঘোড়ায় চড়ে উনাদের আগে যাচ্ছিলেন। তিনি দ্রুতগতি সম্পন্ন কয়েকজন অশ্বারোহীকে আদেশ দিলেন যে, ঐ আরোহীর অবস্থা জেনে নেয়ার জন্য। উনারা যখন ঐ আরোহীর নিকটবর্তী হলেন তখন ডাক দিয়ে বললেন, হে আরোহী! একটু থামুন। ডাক শুনতে পেয়েই তিনি থেমে গেলেন। উনারা জানতে পারলেন যে, তিনি হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিতা আহলিয়া হযরত উম্মে তামীম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। হযরত আবূ উবায়দা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনাকে সফরের কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তখন তিনি বললেন, হে সম্মানিত আমীর! যখন রাত্রে আমি শুনলাম আপনি মুসলিম সৈন্যবাহিনীর মধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে, হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে শত্রুরা ঘিরে ফেলেছে, সত্বর তৈরী হয়ে যান। তখন আমি ভাবছিলাম যে, তিনি কখনো পরাভূত হবেন না। কারণ উনার সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক রয়েছেন। কিন্তু যখনই ঘরে আমার দৃষ্টি উনার টুপি মুবারকের উপর পড়লো যার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক ছিলেন, খুবই আফসোস হলো এবং তখনই আমি (উক্ত টুপি মুবারক নিয়ে) রওয়ানা হলাম যাতে এই টুপি মুবারক উনার কাছে পৌঁছিয়ে দিতে পারি। হযরত আবূ উবায়দা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক আপনাকে বরকত দান করুন। অতঃপর তিনিও উনাদের সাথে সৈন্যদের অন্তর্গত হয়ে গেলেন।
হযরত রাফে’ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু যিনি হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সাথে ছিলেন। তিনি বলেন, অবস্থা এতই স্পর্শকাতর ছিলো যে, আমরা আমাদের জীবন থেকে সম্পূর্ণরূপে নিরাশ হয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি মুবারক শোনা গেলো। হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি লক্ষ্য করছেন এ আওয়াজ কোন দিক থেকে আসছে! যখন রূমী সৈন্যদের প্রতি উনার দৃষ্টি পড়ল তখন দেখলেন যে, কতিপয় আরোহী তাদের পিছনে ধাওয়া করছে এবং তারা উৎকণ্ঠিত হয়ে পালিয়ে আসছে। হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার ঘোড়া হাকিয়ে জনৈক আরোহীর নিকট পৌঁছলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, হে আরোহী। আপনি কে? উত্তর আসলো আমি আপনার আহলিয়া হযরত উম্মে তামীম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা। আপনার সেই বরকতময় টুপি মুবারক নিয়ে এসেছি, যার বরকতে আপনি শত্রুদের উপর বিজয় লাভ করে থাকেন। আপনি এই কারণেই তা ভুলে ফেলে এসেছেন যে, এই বিপদ আপনাদের উপর অবশ্যম্ভাবী ছিলো। অতঃপর তিনি ঐ টুপি মুবারক প্রদান করলেন এবং হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার মাথা মুবারকে পরে নিলেন।
বর্ণনাকারী ক্বসম করে বলেন, হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি ঐ সম্মানিত টুপি মুবারক মাথায় দিয়ে যখন কাফিরদের প্রতি আক্রমণ শুরু করলেন, তখন সাথে সাথে কাফির সৈন্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলো এবং মুসলমানগণ বিজয় লাভ করলেন। ’ সুবহানাল্লাহ! (যিকরে জামীল)
উপরোক্ত ওয়াক্বেয়া মুবারকসমূহ উনাদের থেকে সুস্পষ্টভাবেই বুঝা যাচ্ছে যে, হযরত খালিদ বিন ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এই আক্বীদাই পোষণ করতেন, উনার সমস্ত বিজয়ের মূলেই ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফাত্হ মুবারক। যেটা উনার সম্মানিতা আহলিয়া তিনিও জানতেন এবং দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতেন। যার কারণে তিনি অতিসত্ত্বর সেই টুপি মুবারক নিয়ে রওয়ানা দিয়েছিলেন। বাস্তবে ঘটেছিলোও তাই। সুবহানাল্লাহ!
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর আহলু বাইতি রসূলল্লিাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়মি মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্ললি আলামীন মামদূহ র্মুশদি ক্ববিলা সাইয়্যদিুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহসি সালাম উনার মহাসম্মানতি ও মহাপবত্রি নূরুস সালাম মুবারক-এ মহাসম্মানতি ও মহাপবত্রি কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে র্বণতি اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ (১)
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৭ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৬ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আহলু বাইতি রসূলল্লিাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়মি মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্ললি আলামীন মামদূহ র্মুশদি ক্ববিলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি র্অথাৎ উনারা দু’জন ছাড়া সবার মহাসম্মানিত শায়েখ আলাইহিস সালাম
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত; আর উনাকে পাওয়ার কারণে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক (২)
১৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য আক্বীক্বাহ্ মুবারক করা খাছ সুন্নত মুবারক (৩৫)
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত; আর উনাকে পাওয়ার কারণে ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক (১)
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুখোশধারী মুনাফিক্ব (১)
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক- করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে অবমাননাকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৬)
১২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)