স্থাপত্য:
মুঘল আমলের নিরাপত্তা নিদর্শন হাজীগঞ্জ দুর্গ
, ০৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন

চিত্র ১: মুঘল আমলের নিদর্শন হাজীগঞ্জ দূর্গ তোরণ।
হাজীগঞ্জ দুর্গ মুঘল আমলে নির্মিত একটি পানি দুর্গ। এটি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার হাজীগঞ্জ এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত। এটি খিজিরপুর দুর্গ নামেও পরিচিত। ঢাকা শহরের প্রতিরক্ষার জন্য সপ্তদশ শতকের আগে-পরে যে তিনটি পানি দুর্গকে নিয়ে ত্রিভুজ পানি দুর্গ বা ট্রায়াঙ্গল অব ওয়াটার ফোর্ট গড়ে তোলা হয়েছিল তারই একটি হলো এই হাজীগঞ্জ দুর্গ। মুঘল সুবাদার ইসলাম খান ঢাকায় মুঘল রাজধানী স্থাপনের অব্যাবহিত পরে নদীপথে মগ ও পর্তুগিজ নৌদস্যূদের আক্রমণ প্রতিহত করার উদ্দেশে দুর্গটি নির্মাণ করেন। দুর্গটি রাজধানী ঢাকা থেকে ১৪.৬৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সপ্তদশ শতকের পূর্বে ঢাকাকে রক্ষা করতে গড়ে ওঠা তিন ত্রিভুজ পানি দুর্গের অপর দুটির একটি হলো সোনাকান্দা দুর্গ, যা বন্দর এলাকার ব্রহ্মপুত্র ও শীতলক্ষ্যা নদীর সঙ্গমস্থলের কিনারে এবং অপরটি ইদ্রাকপুর দুর্গ, যা মুন্সীগঞ্জ জেলায় অবস্থিত।
চতুর্ভুজাকৃতির এই দুর্গের পঞ্চভুজি বেষ্টন-প্রাচীরে রয়েছে বন্দুক ঢুকিয়ে গুলি চালানোর উপযোগী ফোকর এবং চারকোণে গোলাকার বুরুজ। প্রাচীরের চার দিকে অভ্যন্তর ভাগে দেয়ালের ভিত থেকে ১.২২ মিটার উঁচুতে রয়েছে চলাচলের পথ এবং এর দেয়ালেও আছে গুলি চালানোর উপযোগী ফোকর। চারকোণের প্রতিটি বুরুজের অভ্যন্তর ভাগে দুর্গ প্রাচীরের শীর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত সিঁড়ি এবং এর বহির্গত অংশে রয়েছে বন্দুকে গুলি চালানোর প্রশস্ততর ফোকর। দুর্গের চতুর্ভুজাকৃতির অঙ্গনের এক কোণে রয়েছে ইটের তৈরি একটি সুউচ্চ চৌকা স্তম্ভ। এটি সম্ভবত একটি পর্যবেক্ষণ বুরুজ। এই স্তম্ভের অবস্থান থেকেই দুর্গটিকে সমসাময়িক অপরাপর পানিদুর্গের সমগোত্রীয় বলে ধরে নেয়া যায়। কামান বসানোর উপযোগী উঁচু স্থানের অবস্থান দুর্গটির একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
নদীর দিকে দুর্গের একমাত্র প্রবেশপথ থেকে বোঝা যায়, শুধু নদীপথেই দুর্গের সাথে যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল। ফটকটির আয়াতাকার কাঠামোতে রয়েছে পঞ্চভুজি প্রবেশপথ। প্রবেশপথের দুইপাশে রয়েছে খোদাই করা আয়তাকার খিলান এবং এর শীর্ষভাগ পদ্মফুলের অলঙ্করণ শোভিত। দুর্গের অভ্যন্তরে অপর কোনো নির্মাণ কাঠামো না থাকায় প্রতীয়মান হয় যে, বর্ষা মওসুমে যখন নৌদস্যুদের আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিত কেবল তখনই দুর্গটিতে সৈন্য মোতায়েন করা হতো এবং সৈন্যরা সেখানে তাঁবুতে আশ্রয় নিত।
-মুহম্মদ নাঈম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (৪)
১৮ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (৩)
১০ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র (২)
০৩ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানদের শিল্পকলার এক অনন্য নিদর্শন ইসলামী মৃৎপাত্র
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দিল্লীর কুতুব মিনার গড়ে উঠেছিলো যে ঐতিহাসিক মসজিদকে ঘিরে
০৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমানদের শাসনামলে কাঠ শিল্প
২৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মসজিদের নগরী ঢাকার ঐতিহাসিক ৪টি মসজিদ
২৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঐতিহ্যবাহী গোর-এ-শহীদ ঈদগাহ ময়দান
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক বদর আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরগাহ (২)
১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
চট্টগ্রামে ঐতিহাসিক বদর আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরগাহ (১)
০৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
২০০ বছরের প্রাণ ৪০০ মণ আম!
০১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বন্দরের ঐতিহাসিক নিদর্শন বাবা সালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
৩০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)