মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করাই ছিলো ব্রিটিশ খ্রিস্টানদের টার্গেট
, ২০ মে, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) ইতিহাস

বলা হয়ে থাকে, ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদ-’। কথাটি কাফির-মুশরিকরা যতোটা বুঝতে পারে, মুসলমানরা তার কিয়দংশও বুঝতে পারে না। যে কারণে ব্রিটিশরা ভারতবর্ষের মুসলমানদের মেরুদা-স্বরূপ যে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থা, তাকে ধ্বংস করে দিয়েছিলো। এর ফলেই ব্রিটিশরা ১৯০ বছর তাদের শাসন জারি রাখতে পেরেছিলো এবং এখন পর্যন্ত মুসলমানদের মনমগজ থেকে ব্রিটিশদের গোলামী যায়নি তাদের শিক্ষাব্যবস্থা জারি থাকার কারণে।
ভারতবর্ষে মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে মূল ষড়যন্ত্রকারী ছিলো দু’জন, খ্রিস্টান মিশনারী মেকলে এবং কথিত ‘রাজা’ রামমোহন রায়। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২রা ফেব্রুয়ারিতে মেকলে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যে বক্তব্যটি প্রদান করেছিলো তা হলো-
“I have travelled across the length and breadth of India and I have not seen one person who is a beggar, who is a thief. Such wealth I have seen in the country, such high moral values, people of such caliber, that I do not think we would conquer this country, unless we break the very backbone of this nation, which is her spiritual and cultural heritage, and therefore, I propose that we replace her old and ancient education system, her culture, for if the Indians think that all that is foreign and english is good and greater than their own, they will lose their self esteem, their native culture and they will become what we want them, a truly dominated nation.অর্থ: আমি ভারতবর্ষের প্রতিটি আনাচে-কানাচে ভ্রমণ করেছি এবং আমি কোনো ভিক্ষুক কিংবা চোরের দেখা পাইনি। এত প্রাচুর্য আমি এই দেশে দেখেছি, এতো উচ্চ নৈতিকতা, এতো আত্মসম্মানবোধ আমি ভারতবর্ষের মুসলমানদের মাঝে দেখেছি যে, আমার ভয় হয়, আমরা ব্রিটিশরা কখনোই ভারতবর্ষকে কব্জা করতে পারবো না। যদি না আমরা এই জাতির মেরুদ- ভেঙে দেই, যে মেরুদ- হচ্ছে মুসলমানদের আধ্যাত্মিকতা তথা ইলমে তাছাউফ ও ইসলামী তাহযীব-তামাদ্দুনের ঐতিহ্যবাহী ধারা।
সুতরাং পাদ্রী মেকলে প্রস্তাব করছি যে, ভারতীয় মুসলমানদের সুপ্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাব্যবস্থা, উনাদের তাহযীব-তামাদ্দুনকে বিজাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা ও সংস্কৃতি দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা হোক। যদি মুসলমানদের মনে এটি ঢুকিয়ে দেয়া যায় যে, বিজাতীয় ও ব্রিটিশ সমস্ত কিছুই মুসলমানদের নিজেদের স্বকীয় যা কিছু আছে তার তুলনায় উত্তম, সেক্ষেত্রে মুসলমানরা তাদের আত্মসম্মানবোধ ও নিজস্ব সংস্কৃতি হারিয়ে ফেলবে এবং মুসলমানরা পরিণত হবে সেরকম একটি জাতিতে যা আমরা ব্রিটিশরা চাই, একটি সত্যিকারের পদানত জাতিতে। ” নাউযুবিল্লাহ!
বাহ্যিক দাসত্ব যতোটা না ভয়ানক, তার তুলনায় অনেক বেশি ভয়ানক হলো মানসিক দাসত্ব। ব্রিটিশরা যেভাবে একবার মুসলমানদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ভারতবর্ষকে পরাধীন করতে সক্ষম হয়েছিলো, ঠিক সেভাবেই বর্তমানে পাঠ্যসূচী প্রণয়ন করা হয়েছে। নাউযুবিল্লাহ!
সেই ব্রিটিশ আমলে আমাদের কোন অভিভাবক ছিলো না, কিন্তু এখন যামানার একজন মহান মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি তাশরীফ মুবারক রেখেছেন এই ভয়ানক পরিণতি থেকে মুসলমানদের উদ্ধার করার লক্ষ্যে। তিনি এই কুফরী শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাজদীদ মুবারক করছেন। নতুন শিক্ষাসূচী তৈরী করছেন। যা সম্পূর্ণ ইসলামী শরীয়তের আলোকে প্রণয়ন করা হচ্ছে। যা শিখলে সহজেই একজন শিক্ষার্থী ছোটবেলা থেকেই তার যিনি মূল ক্বিবলা, কুল মাখলুকাতের যিনি নবী ও রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে জানতে পারবে। উনার মুহব্বত মুবারক অন্তরে ধারণ করতে পারবে। হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পরিচিতি মুবারক সম্পর্কে ধারণা লাভ করবে। ইসলামী শরীয়তের হুকুম-আহকাম সম্পর্কে সম্যক অবগত হবে। আক্বীদা বিশুদ্ধ হবে। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ এই তাজদীদী শিক্ষাসূচী অনুযায়ী পাঠদান করলে সহজেই একজন ব্যক্তি হাক্বীক্বী ঈমানদার হতে পারবে।
কাজেই মুসলমানদের উচিত হলো, ব্রিটিশ বেনিয়া, কাফির, মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের কুফরী শিক্ষাসূচী পরিহার করা, বর্জন করা বিপরীতে ইসলামী শিক্ষাসূচী প্রণয়ন করা।
-গোলাম মুর্শিদ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইতিহাস থেকে প্রমাণিত: মানুষের গোশত খাওয়ার মত ঘৃণ্য কাজও ইহুদী-খ্রিস্টানদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য
২২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সিলেট বিজয়ী সাইয়্যিদ হযরত নাসির উদ্দিন সিপাহসালার রহমতুল্লাহি আলাইহি
১৮ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (২৩)
১৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কুরবানীবিরোধী ও মুসলিম বিদ্বেষী জালিম শাসক গৌরগোবিন্দের করুণ পরিণতি
০৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
উসমানীয় সালতানাতে যেভাবে পবিত্র কুরবানী উনার ঈদ বিশেষভাবে উদযাপন করা হতো
০৪ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইসলামী বিশ্বকোষের আলোকে বালাকোট শহরের স্থাপত্য ও বালাকোট যুদ্ধের ইতিহাস (৪)
০৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাংলার মুসলিম কৃষকদের উপর হিন্দু জমি দখলদারদের জুলুমের ইতিহাস (পর্ব ১৪)
০২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ইসলামী বিশ্বকোষের আলোকে বালাকোট শহরের স্থাপত্য ও বালাকোট যুদ্ধের ইতিহাস (৩)
০১ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (২২)
৩১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: অভিশপ্ত ইহুদী মনস্তত্ব বিশ্লেষণ
৩০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলার মুসলিম কৃষকদের উপর হিন্দু জমি দখলদারদের জুলুমের ইতিহাস (পর্ব ১৩)
২৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বাংলার মুসলিম কৃষকদের উপর হিন্দু জমি দখলদারদের জুলুমের ইতিহাস (পর্ব ১২)
২৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)