মুসলমান নারীর সম্মানিত পর্দা রক্ষায় যে জিহাদ সংগঠিত হয়েছিলেন
এডমিন, ০৭ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৭ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ১১ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) ইতিহাস

শুধু তাই নয়, জাহিলি যুগে মানুষ এতটাই নিচে নেমে গিয়েছিল যে তারা তাদের নারীদের দিয়ে অবৈধ কাজ করাতো। তাদের উত্তরাধিকার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করত। এমনকি স্বীয় সম্পদে তাদের মালিকানা ছিল না, উপার্জন করে আনলেও স্বামীরা লুট করে নিত।
কিন্তু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম তিনি আগমন করে এসব বর্বরতাকে নিশ্চিন্ন করেছেন। সম্মানিত দ্বীন ইসলাম নারীদের অধিকারকে এতটাই গুরুত্ব দেন যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ইতিহাসে নারীর সম্ভ্রম ও পর্দা রক্ষায় রক্তক্ষয়ী জিহাদ পর্যন্ত সংঘঠিত হয়েছে। যে জিহাদটি সংঘটিত হয়েছিল ‘বনু কাইনুকা’ নামের একটি গোত্রের সঙ্গে।
বনু কাইনুকা ছিল ইহুদিদের তিনটি গোত্রের মধ্যে সর্বাধিক হিংসুটে একটি গোত্র। তারা সবাই পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে অবস্থান করত এবং তাদের মহল্লাটি তাদের নামেই কথিত ছিল। পেশার দিকে থেকে তারা ছিল স্বর্ণকার, কর্মকার ও পাত্র নির্মাতা।
আবু আওন থেকে ইবনে হিশাম বর্ণনা করেছেন, একদিন জনৈকা মুসলিম মহিলা তিনি বনুু কাইনুকা গোত্রের মহল্লায় গিয়েছিলেন নিত্যপণ্য ক্রয় করার উদ্দেশ্যে। সে সময় তিনি সেখানে স্বর্ণের দোকান দেখতে পেয়ে সেখানে দাড়ালেন। উদ্দেশ্য ছিলো তিনি স্বর্ণালঙ্কার খরীদ করবেন। কিন্তু সেই দোকানের মালিক ছিলো এক ইহুদী। মুসলমান পর্দানশীল মহিলাকে দেখতে পেয়েই সেই ইহুদী শয়তান কুটকৌশলে মুসলমান মহিলা উনার পর্দায় আঘাত করার দুঃসাহস দেখানো চেষ্টা করলো। তখন মুসলমান মহিলা তিনি চিৎকার করে সাহায্য চাইতে লাগলেন। তা শুনে একজন ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দ্রুত সেখানে ছুটে গেলেন এবং এক পর্যায়ে সেই ইহুদীদের সাথে লড়াই শুরু করলেন। এক পর্যায়ে সেই কুখ্যাত ইহুদীকে তিনি হত্যা করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দিলেন। এ অবস্থা দেখে বনু কাইনুকার কুখ্যাত ইহুদী বাসিন্দারা একত্রে সেই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে আক্রমন করে অত্যন্ত নির্মমভাবে শহীদ করলো। নাউযুবিল্লাহ!
এরপর শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করা ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পরিবারবর্গ ইহুদিদের বিরুদ্ধে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারকে অভিযোগ পেশ করলেন। পুরো ঘটনাটি অবগত হয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খুবই জালালী শান মুবারক প্রকাশ করলেন। এর আগে এই গোত্রের অনেক অপরাধ ক্ষমা করা হয়েছিলো।
কিন্তু এবার তিনি পবিত্র মদীনা শরীফ উনার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বশীল আবু লুবাবাহ ইবনে আব্দুল মুনজির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ওপর অর্পণ করে স্বয়ং সাইয়্যিদুনা হযরত হামযাহ আলাইহিস সালাম উনার হাত মুবারকে জিহাদের পতাকা প্রদান করে সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে বনু কাইনুকা গোত্রের দিকে তাশরীফ মুবারক নেন। ইহুদিরা তা দেখামাত্র দুর্গের মধ্যে আত্মগোপন করে দুর্গের দ্বারগুলো ভালোভাবে বন্ধ করে দেয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কঠিনভাবে তাদের দুর্গ অবরোধ করার নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন। ১৫ দিন পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত থাকে। তারপর ইহুদীরা ভয় পেয়ে আত্মসমর্পন করে এবং তারা বলে যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদের ব্যাপারে যে ফায়সালাই দেবেন তাই তারা মেনে নিবে। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বনু কাইনুকার সবাইকে বন্দি করার নির্দেশ দেন।