মুসলিম জাহানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক স্থপতি “মিমার সিনান”
, ২৮ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২০ হাদি ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ২০ এপ্রিল, ২০২৩ খ্রি:, ৭ বৈশাখ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) স্থাপত্য নিদর্শন
ইস্তাম্বুলের ‘শেহজাদে মসজিদ কমপ্লেক্সে’ই মিমার সিনান পাশার প্রথম বড় কাজ ছিল। এই মসজিদটি সুলাতান সুলাইমানের আদেশে তার পুত্র মুহম্মদ, যিনি ২২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন, তার স্মরণে নির্মিত হয়। মসজিদের সাথে একটি মাদরাসা, লজিং হাউজ, এবং আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল যারা তাদের জন্য রান্নাঘরও নির্মাণ করেন। জানা যায়, এই স্থাপনাটি মিমার সিনান পাশাকে মোটেও সন্তুষ্ট করতে পারেননি। এটিকে উনার এক আনাড়ী কাজ বলে গণ্য করতেন। যদিও এটি অত্যান্ত আকর্ষণীয় ছিল। কিন্তু মিমার সিনান নিজেকে এমনভাবে তৈরী করেছিলেন যে, অল্পতে উনার কখনোই সন্তুষ্ট থাকতে পারেননি। উনার সর্বদা নিজেকে তো বটেই এমনকি সুলতানের প্রত্যশাকেও ছাড়িয়ে যেতে চাইতেন। তিনি ছিলেন একজন অনন্যসাধারণ উদ্যমী নির্মাতা, উনার প্রতিটি কাজে জড়িয়ে থাকতো অনেক আবেগ, ও পরিকল্পনা। যা তাকে পরবর্তীতে আরো অসাধারণ কিছু কাজ করতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। হাজিয়া সোফিয়া ছিল মিমার সিনান পাশার কাজের অন্যতম উৎস এবং প্রেরণা।
মিমার সিনান পাশার যোগ্যতার স্তরঃ
এ সময় মিমার সিনান পাশা কাজে আরও সুদক্ষ হয়ে ওঠেন। এই স্তরে তার অন্যতম সেরা কাজ ছিল ইস্তাম্বুলের ঐতিহাসিক ‘সুলাইমানিয়া মসজিদ কমপ্লেক্স’ নির্মাণ। অপরূপ সুন্দর ও বিশ্ববিখ্যাত এই মসজিদটি নির্মাণের জন্য সুলতান সুলাইমান নিজেই স্থান বাছাই করেন। ইস্তাম্বুলের বায়জিদ অঞ্চলের অনিন্দ্যসুন্দর ‘বসফরাস’ প্রণালির কোলঘেঁষা একটি ছোট্ট টিলার ওপর গড়ে উঠেছে মসজিদটির অবকাঠামো। ইতিহাসগ্রন্থে রয়েছে, নির্মাণকাজ আরম্ভ করার আগে মিমার সিনান পাশার সুলতানের কাছে মসজিদের যাবতীয় নকশা-রেখাচিত্র, ভাবনা ও পরিকল্পনার চিত্ররূপ পেশ করেন। চিত্রে শিল্পী মিমার সিনান পাশার দক্ষতা, মুনশিয়ানা ও চিন্তা-পরিকল্পনার সৌকর্য দেখে সুলতান খুবই আপ্লুত হন এবং তাঁর পরিকল্পনার সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে নিজের ধনভা-ার থেকে নির্মাণকাজের সব খরচ অবাধে পূরণ করার আদেশ দেন। সুলতান সুলাইমান চেয়েছিলেন এই মসজিদ ইস্তাম্বুলের আকাশমন্ডলিকে সমৃদ্ধ করুক। ১৫৫০ খৃ: মিমার সিনান পাশা সুলতানের উপস্থিতিতে এই ভবনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। সুলতান এই প্রকল্প নির্মাণকালে গভীর আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। মিমার সিনানও এই সুযোগ হাতছাড়া করতে একদম নারাজ ছিলেন। উনার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য নির্মাণ করতে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিলেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণে মুসলমানদের অবদান
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মালয়েশিয়ার ঐতিহাসিক মসজিদ “মসজিদ নেগারা”
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে মসজিদ থেকে গভীর রাতে ভেসে আসতো যিকিরের আওয়াজ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা (৩৮)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদ হযরত শাহ মখদুম রুপোশ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাজার শরীফ
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৬)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৫)
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৪)
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (৩)
০৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (২)
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
স্থাপত্যশৈলীর অনন্য স্থাপনা মানিকগঞ্জের ‘ওয়াসি মহল’
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বয়নশিল্প নিদর্শনে মুসলমানগণ (১)
২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












