সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে সংক্ষেপে বা ইশারা-ইঙ্গিতে পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখা নাজায়িয, চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
, ১১ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৫ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৩ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১৮ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
সংক্ষেপে পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখার কারণে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সতর্কীকরণ:
আল ক্বওলুল বদী’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে-
عن حضرت إبراهيم النسفي رحمة الله عليه قال رأيت النبي صلى الله عليه وسلم- في المنام كأنه منقبض مني فمددت يدي إليه ثم قبلتا يده وقلت يا رسول الله صلى الله عليه وسلم أنا من اصحاب الحديث ومن أهل السنة وأنا غريب فتبسم رسول الله صلى الله عليه وسلم- وقال إذا صليت علي لم لا تسلم فصرت بعد ذلك إذا كتبت صلى الله عليه كتبت وسلم
অর্থ: “হযরত ইবরাহীম নাসাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত রয়েছে। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখলাম। মনে হচ্ছিলো তিনি আমার থেকে কিছুটা সংযত হয়ে আছেন। (কিছুটা অসন্তুষ্ট। আমি বিষয়টা বুঝতে পেরে) আমার দুই হাত উনার দিকে বাড়িয়ে দিলাম। অতঃপর উনার মহাসম্মানিত নূরুল মাগফিরাত মুবারকে বুছা দিয়ে বললাম- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি হাদীছ শরীফ সংরক্ষনকারী, আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার অনুসারী এবং আমি অত্যন্ত গরীব! এটা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মুচকি হাসি মুবারক দিয়ে বললেন, তুমি যখন আমার প্রতি দুরূদ শরীফ পাঠ করো তখন সালাম দাও না কেন? এরপর থেকে আমি যখনই ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি’ লিখতাম সাথে ‘ওয়া সাল্লাম’ও লিখতাম। ” সুবহানাল্লাহ! (আল ক্বওলুল বদী’ ২৫০ নং পৃষ্ঠা)
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- ‘যারা আমার প্রতি পবিত্র দরূদ শরীফ পাঠ করেন আমি তাদের দরূদ শরীফ শুনতে পাই এবং আমি তাদেরকে জানি ও চিনি। ’
একইভাবে যারা পবিত্র দুরূদ শরীফ লেখে বা বাদ দেয় তাদেরকেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চিনেন ও জানেন। যা উপরোক্ত ওয়াক্বেয়াসমূহ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায়।
উপসংহার:
এখন ফিকিরের বিষয় হচ্ছে- কারো লেখার সময় সবকিছু লেখার জায়গা হচ্ছে, সময় হচ্ছে, কালি হচ্ছে। কিন্তু শুধুমাত্র নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক উনার পর সম্মানিত দুরূদ শরীফ লেখার সময় হচ্ছে না, জায়গা হচ্ছে না, কালি হচ্ছে না। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ উনাকে সমস্ত কিছু থেকে বেশি মুহব্বত না করলে কেউ ঈমানদারই হতে পারে না। সেখানে যদি একটু কাগজ, সময় আর কালির চেয়ে বেশি মুহব্বত না করা হয়, উনাকে বেশি প্রাধান্য না দেয়া হয় তাহলে কিভাবে নিজেকে ঈমানদার দাবি করা যাবে? মুহব্বতকারী দাবি করা যাবে?
সেই হাশরের ময়দানে যেই মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাফায়াত মুবারক ব্যতীত কোনো জিন-ইনসান জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তিনিতো হাযির-নাযির, তিনি যদি সেই কঠিন হাশরের ময়দানে জিজ্ঞেস করেন, তোমার সবকিছু লেখার সময় হলো, জায়গা হলো, কালি হলো। কিন্তু আমার সম্মানিত নাম মুবারক উনার সাথে পবিত্র দুরূদ শরীফ ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ লেখার সময় হলো না, জায়গা হলো না, কালি হলো না? তুমি কিভাবে আমার শাফায়াত মুবারক লাভ করতে পারো? তখন কি কোনো জাওয়াব থাকবে? থাকবে না।
তাই প্রত্যেক মুসলমান-ঈমানদারদের জন্য দায়িত্ব হচ্ছে- যখনই লেখার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নাম মুবারক আসবেন, তখনই অত্যন্ত মুহব্বতের সাথে স্পষ্টভাবে ‘ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ এই সম্মানিত দুরূদ শরীফ লেখা।
একইভাবে হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের শানে আলাইহিস সালাম বাক্য মুবারক, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের শানে রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শানে রহমতুল্লাহি আলাইহি ইত্যাদি বাক্যসমূহও সংকেতে না লিখে পুরোটাই লিখতে হবে। এটাই আদব। এর বিপরীত করা বেয়াদবী। আর বেয়াদব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত মুবারক থেকে বঞ্চিত। নাঊযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে সমস্ত প্রকার বেয়াদবী থেকে হিফাযত করুন। আমীন!
(সমাপ্ত)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মাওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












