সর্বাবস্থায় ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয; এমনকি পবিত্র নামাযে থাকাকালীন সময়েও
, ১৩ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৭ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৫ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২০ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
يٰاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْـبُـوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন তোমাদেরকে আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে।” (পবিত্র সূরা আনফাল শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)
এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত ঈমানদার, মু’মিন-মুসলমানদের জন্য সর্বাবস্থায় ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া ফরয করে দিয়েছেন। এমনকি পবিত্র নামাযে থাকাকালীন সময়েও পবিত্র নামায ছেড়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া ফরয। সুবহানাল্লাহ!
যেমন এ বিষয়ে মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ سَعِـيْدِ بْنِ الْمُعَلّٰى رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ كُنْتُ اُصَلِّـىْ فَمَرَّ بِـىْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَدَعَانِـىْ فَـلَمْ اٰتِهٖ حَتّٰـى صَلَّيْتُ ثُـمَّ اَتَـيْـتُهٗ فَـقَالَ مَا مَنَـعَكَ اَنْ تَـأْتِـىَ اَلَـمْ يَـقُلِ اللهُ (يٰاَيُّـهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِيْـبُـوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ)
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ ইবনে মু‘আল্লা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার পবিত্র নামায আদায় করছিলাম। এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে ডাকলেন। কিন্তু আমি পবিত্র নামায শেষ না করা পর্যন্ত উনার খিদমত মুবারক-এ যাইনি। তারপর (পবিত্র নামায শেষ করে) উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ গেলাম, তিনি আমাকে বললেন, আমার নিকট আসতে আপনাকে কিসে বাধা দিলো? মহান আল্লাহ পাক তিনি কি ইরশাদ মুবারক করেননি- ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে’।” (বুখারী শরীফ হাদীছ শরীফ নং ৪৬৪৭, মুসনাদে আহমদ ৩/৪৫০, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ৭/২৫৫ ইত্যাদি)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْـرَةَ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ قَالَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلـٰى حَضْرَتْ اُبَـىِّ بْنِ كَعْبٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ وَهُوَ يُصَلِّـىْ فَـقَالَ يَا حَضْرَتْ اُبَـىُّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ فَالْتَـفَتَ فَـلَمْ يُـجِبْهُ ثُـمَّ صَلّٰى حَضْرَتْ اُبَـىٌّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ فَخَفَّفَ ثُـمَّ انْصَرَفَ اِلـٰى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَـقَالَ اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ وَعَلَيْكَ قَالَ مَا مَنَعَكَ اَىْ اُبَـىُّ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰى عَنْهُ اِذْ دَعَوْتُكَ اَنْ تُـجِيْـبَـنِـىْ قَالَ اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كُنْتُ فِـى الصَّلـٰوةِ قَالَ اَفَـلَسْتَ تَـجِدُ فِـيْمَا اَوْحَى اللهُ اِلَـىَّ اَنِ اسْتَجِيْـبُـوْا لِلّٰهِ وَلِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُـحْيِـيْكُمْ قَالَ بَـلـٰى اَىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا اَعُوْدُ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তখন হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি পবিত্র নামাযরত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে ডাকলেন। হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বিষয়টা লক্ষ্য করলেন কিন্তু কোনো জবাব দিলেন না। এরপর হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সংক্ষেপে পবিত্র নামায শেষ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে বললেন, আস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ওয়া আলাইকা অর্থাৎ আপনার উপরও সালাম! হে হযরত উবাই ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! যখন আমি আপনাকে ডাকলাম তখন কোন বিষয় আপনাকে আমার সম্মানিত আহ্বান মুবারক-এ সাড়া দিতে নিষেধ করলো? তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি নামাযে ছিলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি কি এটা পাননি মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার প্রতি সম্মানিত ওহী মুবারক করেছেন যে, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন তোমাদেরকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, তখন অবশ্যই তোমরা উনাদের সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দিবে, যা তোমাদেরকে জীবন দান করে।’ তিনি বললেন, হ্যাঁ অবশ্যই পেয়েছি; ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আর কখনোই এই কাজের পুনরাবৃত্তি করবো না অর্থাৎ যখনই আপনি আমাকে সম্মানিত আহবান মুবারক করবেন, আমি পবিত্র নামাযরত অবস্থায় থাকলেও আপনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ অবশ্যই সাড়া দিবো।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ ২/৪১২, মুসনাদুছ ছাহাবাহ ফিল কুতুবিত তিস‘আহ ৬/১১১) (অসমাপ্ত)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মাওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












