সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অবমাননাকারীদের প্রতি বিখ্যাত কয়েকজন খলীফা উনাদের ফায়ছালা
, ০১ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৮ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি জানতে পারলেন যে, বনু হানিফার এক মসজিদে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র রিসালাত মুবারক অস্বীকারকারী ও মুসাইলামাতুল কায্যাবের নুবুওয়াতের প্রবক্তা রয়েছে। খবর পেয়ে হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তাদেরকে গ্রেফতার করে আনতে দ্রুত পুলিশ বাহিনী প্রেরণ করলেন। পুলিশ বাহিনী তাদেরকে পাকড়াও করে নিয়ে এলেন। হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার দরবারে তাদেরকে উপস্থিত করা হলে তারা তওবা করলো। এতে হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাদেরকে ছেড়ে দিলেন। কিন্তু তাদের মধ্যে হতে আব্দুল্লাহ ইবনে নাওয়াহা নামক এক ব্যক্তিকে ক্ষমা করলেন না। বরং তার ব্যাপারে ক্বতলের হুকুম দিলেন। বিচার বিভাগীয় লোকজন হতবাক হয়ে জানতে চাইলেন, তার ব্যাপারে ফায়ছালা ভিন্নরূপ হওয়ার কি কারণ? হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, মুসায়লামা নামক মিথ্যা নবী দাবীদার তার দু’জন লোককে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দরবারে প্রেরণ করলো, আমি তখন ঐ মজলিসে ছিলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি সাক্ষী দাও যে, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল? প্রতিত্তোরে তারা বললো, আপনি কি এ ব্যাপারে সাক্ষী দেন যে, মুসায়লামা মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল? তাদের থেকে অপ্রীতিকর কথা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, যদি দূতকে কোনো কারণবশতঃ ক্বতল করা যেতো তাহলে আমি তোমাদের ব্যাপারে কতলের আদেশ জারী করতাম।
হে মানুষেরা! আব্দুল্লাহ ইবনে নাওয়াহা হলো ঐ দুই ব্যক্তির একজন। যারা সম্মানিত নুবুওওয়াত নিয়ে তামাশা করেছিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে বেয়াদবী করেছিল। আজ সে দূত হয়ে এখানে আসেনি, তাই তার বেয়াদবীর শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদ- দেয়া হয়েছে।
খলীফা হযরত উমর ইবনুল আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফায়ছালা:
ক্বাযী ইয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লিখেছেন, ন্যায়পরায়ণ খলীফা হযরত উমর ইবনে আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার নিযুক্ত কূফার গভর্নরের এক পত্রের জাওয়াবে লিখেছেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে বেয়াদবী ও গালমন্দকারীদের একমাত্র শাস্তি হচ্ছে ক্বতল বা মৃত্যুদ-। এছাড়া অন্য কাউকে গালি দেয়ার কারণে ক্বতল করা বা মৃত্যুদ- দেয়া যাবে না।
খলীফা হারুনুর রশীদের জিজ্ঞাসার জাওয়াব:
আব্বাসীয় খলীফা হারুনুর রশীদ হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছে পত্রের মাধ্যমে জানতে চাইলেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে কুটক্তিকারীদের শাস্তি কি? ইরাকের ইসলামী স্কলারগণতো নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে অবমাননাকারীদের শাস্তি নির্ধারণ করেছেন। তাদের মতামত হলো- এ শ্রেণীর লোকদেরকে বেত্রাঘাত করতে হবে। এ বিষয়ে আপনার ফায়ছালা বা ফতওয়া কি?
হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি শাসক হারুনুর রশীদের জিজ্ঞাসার বিষয়বস্তু দেখে রাগান্বিত হয়ে লিখলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে যারা কটুক্তি করে, এরা তো মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত নয়। এমন লোকদেরকে ক্বতল করা ওয়াজিব। পক্ষান্তরে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে যারা গালমন্দ করে, অপবাদ দেয়, তাদের শাস্তি হলো বেত্রাঘাত। (আশ শিফা শরীফ- ২/৩৮৭)
খলীফা মূসা বিন মাহদির জিজ্ঞাসার জবাব:
আব্বাসীয় খলীফা মূসা বিন মাহদীর শাসনামলে এক ব্যক্তি কুরাইশ বংশের নামে অশালীন মন্তব্য করলো এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে বেয়াদবীমূলক আচরণ করলো। এ সংবাদ খলীফা মূসা বিন মাহদীর দরবার পর্যন্ত পৌঁছলো। সংবাদ পেয়ে খলীফা দ্রুত তাকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিলেন। খলীফার নির্দেশ পেয়ে দ্রুত তাকে গ্রেফতার করে রাজদরবারে নিয়ে আসা হলো। খলীফা বিশিষ্ট উলামা ও ফুক্বাহাগণকে রাজ দরবারে ডাকলেন।
পরামর্শ ও ফতওয়া চাইলেন উক্ত অপরাধীর ব্যাপারে। সমস্ত উলামা একমত যে, তাকে ক্বতল করা আবশ্যক। খলীফা ব্যথিত হয়ে বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে মন্দ বলা তো পরের বিষয় বরং তার উক্ত শাস্তি কুরাইশ বংশ নিয়ে কটুক্তি করার জন্যই যথেষ্ট। কেননা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কুরাইশ বংশের ছিলেন। তার কত বড় সাহস, সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে সে অপ্রীতিকর মন্তব্য করেছে। অতঃপর তিনি আদেশ করলেন, এক্ষুনি তার গর্দান উড়িয়ে দাও। আদেশ অনুযায়ী তৎক্ষনাত তাকে ক্বতল করা হয়।
অতএব, সকল যুগেরই মুসলমান শাসক, আমীর-উমরাহ, প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর জন্য কর্তব্য হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ও উনার সম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে কটুক্তিকারী, অবমাননাকারী, ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশকারীদের মৃত্যুদ- প্রদান করা। যারা এ শাস্তি কার্যকরি করবে, এটাই তাদের জন্য নাজাত পাওয়ার ও জান্নাতে যাওয়ার সবচেয়ে বড় উসীলা হবে। সুবহানাল্লাহ!
-মুফতী আহমদ আবূ সাফওয়ান
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজ বরকতপূর্ণ সুমহান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৫শে শাওওয়াল শরীফ-
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ এমন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আমল মুবারক যেই আমল মুবারক উনাকে হাজার কুফরীও মেটাতে পারে না (৬)
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উম্মু সুলত্বাননি নাছীর আলাইহসি সালাম সাইয়্যদিাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্ববিলা আলাইহাস সালাম উনার বমেছোল নসিবত মুবারক প্রকাশ
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ এমন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আমল মুবারক যেই আমল মুবারক উনাকে হাজার কুফরীও মেটাতে পারে না (৫)
০৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাদিসাহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ
০৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২২শে শাওওয়াল শরীফ-
০৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত নাক্বীবাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার আযীমুশ শান মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবতে আযীম শরীফ
০৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ এমন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আমল মুবারক যেই আমল মুবারক উনাকে হাজার কুফরীও মেটাতে পারে না (৪)
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক সম্পর্কে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উপলক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক, গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া উম্মতদের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আল খ্বমিসাহ্ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মাসাকীন আলাইহাস সালাম উনার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি মুবারক
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)