উনারা ছিলেন ২৪ ঘণ্টা উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা এবং উনার যিকির ও মুহব্বত মুবারক-এ গরক্ব:

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন,

عَن حضرت الشّعبِيّ رحمة الله عليه أَن رجلا من الْأَنْصَار أَتَى رَسُول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُول الله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالله لأَنْت أحب إليَّ من نَفسِي وَوَلَدي وَأَهلي وَمَالِي وَلَوْلَا أَنِّي آتِيك فَأَرَاك لظَنَنْت أَنِّي سأموت وَبكى الْأنْصَارِيّ فَقَالَ لَهُ النَّبِي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا أبكاك فَقَالَ ذكرت أَنَّك سَتَمُوتُ وَنَمُوت فَترفع مَعَ النَّبِيين وَنحن إِذا دَخَلنَا الْجنَّة كُنَّا دُونك فَلم يُخبرهُ النَّبِي صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِشَيْء فَأنْزل الله على رَسُوله صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ {وَمن يطع الله وَالرَّسُول فَأُولَئِك مَعَ الَّذين أنعم الله عَلَيْهِم} إِلَى قَوْله {عليماً} فَقَالَ أبشر يَا أَبَا فلَان

অর্থ: “হযরত ইমাম শা’বী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে (মুরসাল সূত্রে) বর্ণিত রয়েছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট একজন হযরত আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এসে বললেন, ‘ইয়া রাসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! অবশ্যই আপনি আমার নিকট আমার নিজের জীবনের চেয়ে, আমার আল-আওলাদ, সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা, পরিবার-পরিজন এবং মাল-সম্পদের চেয়েও বেশি প্রিয়। আমার এমন অবস্থা- যতক্ষণ আমি আপনার নিকট এসে আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক-এ থাকি, ততক্ষণ আমি ইতমিনানে থাকি। আর যতক্ষণ আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছোহবত মুবারক, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র যিয়ারত মুবারক থেকে জুদা থাকি, ততক্ষণ আমার মনে হয় আপনার জুদায়ী মুবারক উনার কারণে আমি অতিশীঘ্রই ইন্তিকাল করবো। এই কথা বলে ঐ হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অঝোর ধারায় কান্না মুবারক করতে থাকলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন, কোন্ বিষয় আপনাকে কাঁদাচ্ছে? তিনি বললেন, আমি মনে করি যে, নিশ্চয়ই আপনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবেন এবং আমরাও ইন্তিকাল করবো। তখন আপনি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে সুউচ্চ স্থানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অবস্থান মুবারক করবেন। (অর্থাৎ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকেও অনেক সুউচ্চে অবস্থান মুবারক করবেন।) আর আমরা যদি সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ প্রবেশ করি, তাহলে আমরা আপনাকে ছাড়া (সেখানে) থাকবো।’ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কোনো জবাব মুবারক দিলেন না। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি নাযিল করলেন, ‘যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের আনুগত্য মুবারক করেন উনারা ক্বিয়ামতের দিন উনাদের সাথে থাকবেন যাঁদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি নেয়ামত মুবারক দান করেছেন- (হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের এবং ছিদ্দীক্ব, শহীদ ও ছালেহ্ উনাদের সাথে। উনারা কতইনা উত্তম সঙ্গী।) এটা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে ফযল-করম মুবারক। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত কিছুই সম্যক অবগত।’ সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা নিসা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৯-৭০) অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে ওমুকের পিতা! আপনি সুসংবাদ মুবারক গ্রহণ করুন।” সুবহানাল্লাহ! (আদ দুররুল মানছূর ২/৫৮৯)

তাহলে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে কতটুকু ফানা ও বাক্বা ছিলেন? তাহলে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সবাইকে উনার মাঝে কতটুকু ফানা ও বাক্বা হতে হবে? তাহলে উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল? এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া সব। সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য যে, পরবর্তী উম্মত যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে হাক্বীক্বী ফানা ও বাক্বা হতে চায়, তাহলে অবশ্যই আগে স্বীয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার মাঝে হাক্বীক্বী ফানা ও বাক্বা হতে হবে। উনার মাঝে হাক্বীক্বী ফানা-বাক্বা হতে পারলে আফসেআপ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে হাক্বীক্বী ফানা ও বাক্বা হতে পারবে। সুবহানাল্লাহ! অন্যথায় কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।

-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।