স্থাপত্য-নিদর্শন
সুবা বাংলার ঐতিহাসিক শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদ
এডমিন, ০৫ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২০ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) স্থাপত্য নিদর্শন

জানা যায়, মোঘল আমলে এ অঞ্চল অর্থাৎ চট্টগ্রাম যখন ইসলামাবাদ নাম নিয়ে সুবা বাংলার রাজধানী ছিলো, তখনই মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ধারণা করা হয়, ১৭৩৭ খৃ: মোঘল সুবেদার শায়েস্তা খাঁনের পৌত্র (নাতি) শেখ বাহার উল্লাহ এ মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। উনার ইন্তেকালের পর মসজিদটি শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে।
এই মসজিদ হতে মাত্র ৫০ গজ দূরেই শায়েস্তা খাঁনের রাজমহল। যা বর্তমান কোর্ট হিলে আদালত ভবন প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এখানেই সকল ধরনের বিচারকার্য সমাধান হতো। এখানেও শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদের একই অবয়বে আরো একটি মসজিদ বিদ্যমান রয়েছে।
শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদ বাংলাদেশ প্রত্মতত্ত্ব অধিদফতরের অধিভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ, মূল্যবান ও অতি সংবেদনশীল স্থাপনা। ভারতের দিল্লীর কেন্দ্রীয় মহাফেজখানা ও বৃটেনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এই মসজিদটি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ দস্তাবেজ প্রায় ১৭০ বছর ধরে সংরক্ষিত রয়েছে।
মসজিদটির আদি গড়নে প্রাধান্য পেয়েছে তিনটি গম্বুজ ও আটটি মিনার। বিভিন্ন সময়ে সংস্কারের ফলে আজও গম্বুজ ও মিনারগুলো বিদ্যমান। মূলত শুধুমাত্র পশ্চিম দিক থেকেই মসজিদটির আদি রূপ পরিলক্ষিত হয়। তিন গম্বুজের মাঝখানের গম্বুজটি তুলনামূলক বড় আকৃতির এবং দু’পাশের গম্বুজগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট।
কেন্দ্রীয় মেহরাবটি অর্ধগোলাকৃতির, যা ২০০৩ খৃ: সংস্কারের পরে এখনো একইরকম রয়েছে। বড় দরজার মধ্যবর্তী স্থানে কেন্দ্রীয় মেহরাবের দুই পাশে, অর্থাৎ ছোট দুই দরজার সামনে রয়েছে দুটি মেহরাব সাদৃশ্য ছোট অর্ধচন্দ্রাকারের মেহরাব। যা মসজিদের সৌন্দর্য আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিনটি দরজার চৌকাঠের উপরিভাগ ইটের খিলানে আবৃত। এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ পাশের জানালায় খিলান নজরে আসে।
সম্প্রতি এ মসজিদ প্রাঙ্গনে বুখারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় তোরনের আদলে একটি বৃহৎ ও দৃষ্টিনন্দন তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।
মুঘল স্থাপত্যে গড়া মূল আদি মসজিদটি কয়েকশ’ বছরের স্মৃতি বহন করে। তবে কালের বিবর্তনে মূল মসজিদ অক্ষত রেখে এটি তিনতলা বিশিষ্ট মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
-মুহম্মদ নাঈম।