জীবনী মুবারক
হযরত আবদুর রহমান ইবনে আবী বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
বিলাদত শরীফ: (তারিখ উল্লেখ নেই) বিছাল শরীফ: ৫৩ হিজরী (৬৭৪ খৃ:)
, ০৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৩, মে, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পরিচিতি:
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার জ্যেষ্ঠ পুত্র, ইসলাম পূর্ব নাম আবদুল কা‘বা, মতান্তরে আবদুল উয্যা। দ্বীন ইসলাম গ্রহণের পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার নাম পরিবর্তন করে আবদুর রহমান রাখেন। তিনি ও হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার মাতা ছিলেন হযরত উম্মে রূমান আলাইহাস সালাম।
ইসলাম পূর্ব ভূমিকা:
হযরত আবদুর রহমান ইব¬¬নে আবী বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি অনেক বিলম্বে দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। বদর ও উহুদের জিহাদে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। বদরের জিহাদের মাঝামাঝি পর্বে তিনি একটু সামনে এগিয়ে এসে মুসলমানদের প্রতি চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছিলেন, আমার সাথে মল্লযুদ্ধের সাহস রাখে এমন কেউ আছে কি? উনার এ চ্যালেঞ্জ শুনে উনার সম্মানিত পিতা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার চেহারা মুবারক রক্তিম আভা ধারণ করলো। তিনি উনার সাথে মল্লযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাকে নিবৃত্ত করেন। উহুদের জিহাদেও তিনি মক্কা শরীফের কুরাইশ মুশরিকদের সাথে ছিলেন। এই জিহাদে তিনি ছিলেন কুরাইশদের তীরন্দায বাহিনীর অন্যতম সদস্য। (উসুদুল গাবা)
পরবর্তীকালে একদিন হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার পিতা আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে বলেন, উহুদের ময়দানে আমি আপনাকে পেয়েও এড়িয়ে গিয়েছিলাম। জবাবে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি আপনাকে দেখলে ছেড়ে দিতাম না। (হায়াতুছ ছাহাবা)
দ্বীন ইসলাম গ্রহণ ও মদীনা শরীফে হিজরত:
হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং মদীনা শরীফে হিজরত করেন। হিজরতের পরে মদীনা শরীফে উনার পিতা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সাথে একত্রে বসবাস করতে থাকেন এবং পিতার যাবতীয় কাজ তিনিই দেখাশুনা করতে থাকেন।
একবার রাত্রিবেলা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি আছহাবে ছুফ্ফার কতিপয় লোককে দাওয়াত করলেন। তিনি হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতে যাচ্ছি, আমার ফিরে আসার পূর্বেই আপনি মেহমানদের খাইয়ে দিবেন। পিতার নির্দেশ মত হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যথাসময়ে মেহমানদের সামনে খাবার হাজির করলেন। কিন্তু উনারা বাড়ীওয়ালা মেজবানের অনুপস্থিতিতে খেতে অস্বীকার করলেন। ঘটনাক্রমে সেদিন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি দেরীতে ফিরলেন। ফিরে এসে যখন জানলেন, মেহমানরা এখনও অভুক্ত রয়েছেন, তিনি অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমি আপনাকে খাবার দিবো না। হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ভয়ে জড়সড় হয়ে বাড়ীর এক কোণে বসে ছিলেন। একটু সাহস করে তিনি বললেন, আপনি মেহমানদের একটু জিজ্ঞাসা করুন, আমি উনাদেরকে খাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম কিনা? মেহমানরা হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কথা সমর্থন করলেন। উনারাও কসম খেয়ে বললেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে খেতে দিবেন না, আমরা খাবো না। এভাবে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার রাগ প্রশমিত হয় এবং সকলে একসাথে বসে আহার করেন। হযরত আবদুর রহমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, সেদিন আমাদের খাবারে এত বরকত হয়েছিলো যে, আমরা খাচ্ছিলাম, কিন্তু তা মোটেও কমছিলো না। আমি সেই খাবার থেকে কিছু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য নিয়ে গেলাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বেশ কয়েকজন ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমসহ তা আহার করেন। (বুখারী শরীফ) (চলবে)
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












