হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কিত একটি মশহুর ঘটনা
এডমিন, ০৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২১ ছালিছ, ১৩৯১ শামসী সন , ২০ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ ভাদ্র শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) ইতিহাস
হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম তিনি সবকিছু শুনে তরতীব অনুযায়ী উনার রায় মুবারক দিলেন। ছাগলের মালিককে জরিমানা করা হলো এবং এর ক্ষতিপূরণ হিসেবে ছাগলের পাল শস্যক্ষেত্রের মালিককে দেয়া হলো। ক্ষতিপূরণ পেয়ে ফসলের মালিক সন্তুষ্ট হয়ে চলে গেলো।
কিন্তু ছাগলের মালিক সব ছাগল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেলো। তাই সে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছিলো। এখন তার উপায় কী হবে? পরিবার-পরিজন নিয়ে কিভাবে সে চলবে? এমন সময় সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম। তিনি লোকটির কান্নাকাটি দেখে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলেন।
ছাগলের মালিক সব ঘটনা উনাকে খুলে বললো। সব শুনে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি এক কাজ করুন। আপনি আবার উনার দরবার শরীফে যান এবং উনাকে রায়টি পুনরায় বিবেচনার অনুরোধ করুন। ’
লোকটি হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার পরামর্শ মতো আবার হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম উনার দরবার শরীফে গেলো এবং ক্ষতিপূরণের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার জন্য আরজি জানালো।
হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম তিনি লোকটির আরজি শুনে কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন। এরপর তিনি লোকটির উদ্দেশ্যে বললেন, বিচারটি পুনরায় বিবেচনার জন্য কে তোমাকে পরামর্শ দিয়েছেন?
লোকটি কালবিলম্ব না করে জবাব দিলো, আপনার মহাসম্মানিত আওলাদ হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে এ পরামর্শ মুবারক দিয়েছেন।
হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম তিনি সবই বুঝতে পারলেন। এবার তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনাকে ডেকে পাঠালেন এবং রায়ের বিষয়টি পুনরায় বিবেচনা করে আরো উত্তম রায় দেয়ার দায়িত্ব প্রদান করলেন।
হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম তিনি দায়িত্ব পেয়ে রায় ঘোষণা করলেন। তিনি বললেন, ‘ফসলের ক্ষতিপূরণ হিসেবে শস্যক্ষেত্রের মালিক ছাগলের পাল পাবে এই শর্তে যে, সে ছাগলের দুধ খেতে পারবে এবং পশমও বিক্রি করতে পারবে। তবে তার ক্ষেতে আবার যখন আগের মতো ফসল হবে তখন ছাগলগুলো ছাগলের মালিককে ফেরত দিতে হবে। ’
বিচারের রায় শুনে দরবারে উপস্থিত সবাই হতবাক। কারণ রায়টি সবদিক বিবেচনায় অত্যন্ত উত্তম একটি রায় ছিলো এবং এই রায়ে ক্ষতিগ্রস্ত শস্যক্ষেতের মালিক ও ছাগল পালের মালিক উভয়ে মহাখুশি। তাই তারা সানন্দে হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালাম উনার রায় মুবারক মেনে নিলো।
মহাসম্মানিত আওলাদ উনার এই রায়ে হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম তিনিও অত্যন্ত খুশি হলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করলেন।
-মুহম্মদ শাহজালাল।