(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
এখানে মুরীদ বা সালিকের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু আদব বর্ণনা করা হলো। বাকী আরো অনেক কিছু রয়েছে যা শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারক উনার মাঝে এসে শিখে নিতে হবে।
১। সালিক বা মুরীদ সর্বদাই নিজ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করবে।
২। মনকে সকল দিক থেকে সরিয়ে শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার দিকে নিয়োজিত রাখবে। যথাসম্ভব মাল ও জান দিয়ে উনার খিদমত করবে।
৩। শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার হুকুম ছাড়া উনার সামনে ফরয ও সুন্নত ব্যতীত কোনো নফল আমল করব বাকি অংশ পড়ুন...
অতএব বুঝা গেলো যে, পবিত্র ক্বলবী যিকির ব্যতীত শয়তান ও শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা যেমন অসম্ভব তদ্রুপ শরীয়ত উনার খিলাফ কাজ থেকে বেঁচে থাকাও অসম্ভব।
তাই অন্তর পরিশুদ্ধ করতে হলে বা শয়তানী ওয়াসওয়াসা থেকে বাঁচতে হলে পবিত্র ক্বলবী যিকির করতে হবে। কারণ পবিত্র ক্বলবী যিকিরই সার্বক্ষণিক বা দায়িমী যিকির উনার একমাত্র মাধ্যম।
যেমন দায়িমী বা পবিত্র ক্বলবী যিকির সম্পর্কে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاذْكُر رَّبَّكَ فِىْ نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَّخِيْفَةً وَّدُوْنَ الْـجَهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَا বাকি অংশ পড়ুন...
উল্লেখ্য যে, ইলমে তাছাওউফ বা তরীক্বতের সব কিতাবেই তিন প্রকার সম্মানিত নিসবত মুবারক হাছিলের কথা বলা হয়। (এক) ফানা ফিশ শায়েখ, (দুই) ফানা ফির রসূল, (তিন) ফানা ফিল্লাহ।
কাজেই, সালিক বা মুরীদের জন্য ফরজ হচ্ছে, সম্মানিত শায়েখ উনার প্রতি সর্বোচ্চ বিশুদ্ধ আক্বীদাহ এবং সর্বোত্তম হুসনে যন মুবারক পোষণ করা অর্থাৎ নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরেই সম্মানিত শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনাকে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে করা। তবেই তার পক্ষে অতি সহজে সম্মানিত নি‘য়ামত মুবারক হাছিল করে মঞ্জিলে মাক্বছূদে পৌঁছ বাকি অংশ পড়ুন...
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلشَّيْطَانُ جَاثِـمٌ عَلٰى قَلْبِ ابْنِ اٰدَمَ فَاِذَا ذَكَرَ اللهَ خَنَسَ وَاِذَا غفَلَ وَسْوَسَ
অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, শয়তান আদম সন্তানের ক্বলবে আসন পেতে বসে থাকে। যখন সে পবিত্র যিকির করে, তখন শয়তান পালিয়ে যায়। আর যখন সে পবিত্র যিকির থেকে গাফিল হয়, বাকি অংশ পড়ুন...
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يَهْدِ اللهُ فَهُوَ الْمُهْتَدِ وَمَنْ يُضْلِلْ فَلَنْ تَـجِدَ لَهٗ وَلِيًّا مُرْشِدًا
অর্থ: খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যাঁকে হিদায়াত দান করেন, সেই হিদায়াত লাভ করে। সুবহানাল্লাহ! আর যে ব্যক্তি গোমরাহীর মধ্যে দৃঢ় থাকে, সে কখনো ওলীয়ে মুর্শিদ বা কামিল শায়েখ উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক লাভ করতে পারে না। না‘ঊযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা কাহ্ফ : আয়াত শরীফ ১৭)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى বাকি অংশ পড়ুন...
মূলত অন্তর পরিশুদ্ধ করা ও হুযূরী ক্বলব হাছিল করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে পবিত্র “ক্বলবী যিকির”। অর্থাৎ পবিত্র ইলমে তাছাওউফ তথা মুহলিকাত ও মুনজিয়াত সম্পর্কিত পবিত্র ইলম অর্জন করার সাথে সাথে ক্বলবী যিকির করতে হবে, তবেই অন্তর পরিশুদ্ধ হবে ও হুযূরী ক্বলব অর্জিত হবে এবং নামাযসহ সকল ইবাদত-বন্দিগী শুদ্ধভাবে বা পবিত্র ইখলাছ উনার সাথে আদায় করা সম্ভব হবে। যার ফলে ইমাম-মুজতাহিদ, আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা পবিত্র ক্বলবী যিকির করাকে ফরয বলেছেন।
এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পবিত্র কালাম পাক উনার বাকি অংশ পড়ুন...
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
উল্লিখিত পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ পবিত্র যিকির উনাকে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের নৈকট্য মুবারক লাভের ও অন্তর পরিশুদ্ধ করার মাধ্যম বলার সাথে সাথে সমস্ত আমল এমনকি দান-ছদকা ও জিহাদের চেয়েও বেশি গুরুত্ব ও ফযীলত দেয়া হয়েছে।
তাই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দাকে সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়িমীভাবে ও অধিক পরিমাণে পবিত্র ক্বলবি যিকির করার নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশা বাকি অংশ পড়ুন...
বিছাল শরীফ:
হযরত গাউছুল আ’যম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মুরীদ মু’তাক্বিদগণ ফিরে এসে জিজ্ঞেস করলেন। হে গাউছুল আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি কি কারণে আপনার এই অবস্থা এবং ইস্তিঞ্জা মুবারকের এই হাল? তখন গাউছুল আ’যম শায়েখ সাইয়্যিদ মুহীউদ্দিন হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার একটা পবিত্র আয়াত শরীফ। যেটা তিলাওয়াত করার কারণে আমার ভিতরের কলিজা-গুর্দা সব চূর্ণ-বিচূর্ণ ও তছনছ হয়ে গিয়েছে। যেগুলো ইস্তিঞ্জা মুবারকের রাস্তা দিয়ে রক্ত আকারে বের হয়ে যাচ্ছে।
উনারা জিজ্ঞাসা করলেন, কোন সে পবিত্র আয়া বাকি অংশ পড়ুন...
সম্মানিত তাছাউফ উনার পুরাটাই আদব উনার অন্তর্ভুক্ত। মুরিদের আদব হচ্ছে হযরত শায়খ আলাইহিস সালাম উনার প্রতি পরিপূর্ণ হুসনে যন রাখা, উনাকে যথাযথ তা’যীম-তাকরীম করার সাথে সাথে উনার সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকেও শায়খ আলাইহিস সালাম উনার ন্যায় সম্মান করা।
কেননা, উনার আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মান করার মাধ্যমে শায়খ আলাইহিস সালাম সন্তুষ্টি-রেযামন্দি মুবারক সহজেই লাভ করা সম্ভব হয়। আর শায়েখ আলাইহিস সালাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করতে পারলে মুরীদ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ বাকি অংশ পড়ুন...
বিছাল শরীফ:
وصال (বিছাল) অর্থ মিলিত হওয়া, সাক্ষাত করা। হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা মারা যান না। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
ان اولياء الله لا يموتون بل ينتقلون من دار الفناء الى دار البقاء
অর্থ: নিশ্চয়ই আউলিয়ায়ে কিরাম উনারা মৃত্যুবরণ করেন না। বরং উনারা অস্থায়ী আবাস থেকে স্থায়ী আবাসের দিকে ফিরে যান। মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ উনাদের সাথে দায়িমী ও হাক্বীক্বী সাক্ষাত মুবারকে মিলিত হন। এজন্য উনাদের ইন্তিকালকে বিছাল শরীফ বলা হয়।
আর হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের তা’যীম বা সম্মানার্থে বাকি অংশ পড়ুন...
(পূর্বে প্রকাশিতের পর)
পবিত্র যিকির বেশি করলে কতটুকু কামিয়াবী সে প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِنِ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ اَىُّ الْعِبَادِ اَفْضَلُ وَاَرْفَعُ دَرَجَةً عِنْدَ اللهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ اَلذَّاكِرُوْنَ اللهَ كَثِيْرًا وَّالذّٰكِرَاتِ قِيْلَ يَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمِنَ الْغَازِىِ فِى سَبِيْلِ اللهِ قَالَ لَوْضَرَبَ بِسَيْفِهٖ فِى الْكُفَّارِ وَالْـمُشْرِكِيْنَ حَتّٰى َينْكَسِرَ وَيَـخْتَضِبَ دَمًا فَاِنَّ الذَّاكِرَ لِلّٰهِ اَفْضَلُ مِنْهُ دَرَجَةً.
অর্থ : হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্ল বাকি অংশ পড়ুন...












