ইসলামী স্থাপত্যর ঐতিহাসিক নিদর্শন দিল্লী শাহী জামে মসজিদ
এডমিন, ২৬ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৯ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৯ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) স্থাপত্য নিদর্শন

এই মসজিদেই শাহজাহান জুমুয়ার নামাযে খুতবা দিয়ে তার শাসনামল আনুষ্ঠানিক করেন। মসজিদটি ভারতে মুঘলদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। মসজিদটি শাহজাহানাবাদে বসবাসকারী মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল, যেখানে শ্রেণিভাগ অতিক্রম করে মানুষ একে অপরের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করতে পারত। শাহজানাবাদের মানুষ এখানে শ্রেণিভাগ ভুলে একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারত, তাই মসজিদটি তাদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ব্রিটিশ শাসনামল:
১৮০৩ খৃ:, ইংরেজরা শাহজাহানাবাদ দখল করে। সম্রাট মসজিদটির আনুষ্ঠানিক নেতা হিসেবেই থাকেন, তবে মুঘলদের ক্ষমতাকাঠামো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইংরেজরা মসজিদটির মেরামত এবং সংস্কারের কাজ নেয়।
১৮৫৭ খৃ: এর সিপাহী বিপ্লবের ফলে একটি বড় পরিবর্তন আসে। এই বিপ্লবের শহরটিতে অনেক ইংরেজ মারা যায়, যার ফলে ঔপনিবেশিক প্রতিনিধিরা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ইংরেজদের প্রতি শক্ত বিরোধিতা করা হয়। এই বিদ্রোহের কারণে মুঘল সাম্রাজ্যেরও সমাপ্তি ঘটে। ইংরেজরা ধারণা করে যে, বিপ্লবকারীরা মুসলমানদের লোক এবং দিল্লীর মসজিদগুলোর মধ্যে পরিকল্পনা করে আন্দোলন করেছে।
ইংরেজরা শহরটি পুনরায় দখলে নিলে, তারা অনেক মসজিদ ভেঙ্গে দেয়। নাউজুবিল্লাহ! আশাপাশের সকল মসজিদে মুসলমানদের সভা সেমিনার নিষিদ্ধ করে দেয়। ইংরেজরা এই মসজিদটি বাজেয়াপ্ত করে এবং মসজিদে মুসলমানদের ইবাদত বন্দেগী করতে বাধাগ্রস্ত করে। মসজিদটি কয়েকবার ভেঙ্গে ফেলার অপচেষ্টা করে ইংরেজদের কিছু কুচক্রী মহল, ইংরেজরা মসজিদটিকে শিখ এবং ইউরোপিয়ান সৈন্যদের জন্য ব্যারাক হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করে, যা মসজিদটির জন্য ছিল অপবিত্রতা। নাউজুবিল্লাহ! অনেক ঐতিহাসিক লিখেছেন যে মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত করার জন্য কুচক্রী ইংরেজ মহল এই জগন্য কাজ করেছিলো।
১৮৬২ খৃ:, ইংরেজদের কার্যক্রমের প্রতি মুসলমানদের বাড়ন্ত বিরক্তির কারণে মসজিদটি আবার মুসলমানদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। কিছু শর্ত দেওয়া হয়, যার মধ্যে ছিল- মসজিদটি শুধুমাত্র নামাজ পড়ার জন্যই ব্যবহার করতে হবে এবং মুসলমানরা যাতে করে কোন সাংঘঠনিক কাজ না করতে পারে ইংরেজরা সেটির উপর নজর রাখবে।