স্থাপত্য
ঢাকার ঐতিহাসিক সাড়ে তিন শ’ বছরের পুরনো লালবাগ কেল্লা মসজিদ
এডমিন, ১৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৭ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২২ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) স্থাপত্য নিদর্শন

মসজিদ নির্মাণ ইতিহাস:
বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত ‘দ্য আর্কিওলজিক্যাল হেরিটেজ অব বাংলাদেশ’ বই থেকে জানা যায়, লালবাগ কেল্লা মসজিদ, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ৩য় পুত্র শাহজাদা আজম বাংলার সুবাদার থাকাকালীন এই মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন ১৬৭৮-৭৯ খৃ:। মসজিদটির আয়তন আয়তাকারে (১৯.১৯ মি: * ৯.৮৪ মি) নির্মিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট। এই ঐতিহাসিক মসজিদটি এদেশের মুঘল মসজিদের একটি আদর্শ স্থাপত্য।
কিন্তু কোন এক জরুরী কাজে পুরো দুর্গের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগেই আওরঙ্গজেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছেলেকে দিল্লিতে ডেকে পাঠান। অবশ্য তার আগেই মসজিদটির নির্মান কাজ শেষ হয়ে যায়।
মসজিদের অবস্থান ও গঠন:
পুরান ঢাকা নগরীর দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে লালবাগ কেল্লার অবস্থান। নদীটি বর্তমানে আরও দক্ষিণে সরে গিয়ে দুর্গ থেকে বেশ খানিকটা দূর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডয়েলির অঙ্কিত চিত্র থেকে (১৮০৯-১১) দেখা যায় যে, পূর্ব-পশ্চিমে আয়তাকারে বিস্তৃত দুর্গের দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিম অংশের অর্ধেকেরও বেশি নদী সংলগ্ন ছিল। মসজিদটি কেল্লার উত্তর পশ্চিমাংশে অবস্থিত।
বর্তমান অবস্থা:
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণে থাকা ঐতিহাসিক এ মসজিদটি এখনও জামে মসজিদ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কেল্লার মূল দূর্গে ঢুকতে টিকেট লাগলেও মসজিদটি সকল মুসল্লীদের জন্যই উন্মুক্ত। বিশেষ পথ তৈরি এবং লোহার সীমানা প্রাচীর দিয়ে কেল্লার মূল স্থাপনা থেকে মসজিদটিকে আলাদা রাখা হয়েছে। কেল্লায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরাও এখানে নামাজ আদায় করেন। মুসল্লীদের আরামের জন্য মসজিদটি লাগানো হয় দামী দামী বৈদ্যুতিক ফ্যান। ঝলমলে রাখতে সাধারণ বৈদ্যুতিক বাতির পাশাপাশি রয়েছে অভিজাত ঝাড়বাতিও।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে থাকলেও মসজিদটি পরিচালনা করার জন্য একটি কমিটি রয়েছে। তারাই মসজিদটির ব্যয়ভার নির্বাহ করেন।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, মসজিদটিতে সবসময়ই মুসল্লীদের ভিড় হয় তবে ভাগ্য রজনী পবিত্র শবে বরাতের রাতে এখানে উপচে পড়া ভিড় হয়। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এখানে আসেন শবে বরাতের নামাজ আদায় করতে।
-মুহম্মদ নাইম।