ফতওয়া:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৪)
, ১৬ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১২ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১১ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২৮ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন,
عَنْ اِمَامِ الْاَوَّلِ سَيِّدِنَا حَضْرَتْ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّ يَهُوْدِيَّةً كَانَتْ تَشْتُمُ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَتَقَعُ فِيْهِ فَخَنَقَهَا رَجُلٌ حَتّٰى مَاتَتْ فَاَبْطَلَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَمَهَا
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন,) নিশ্চয়ই এক ইহুদী মহিলা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালাগালি করতো, না’ঊযুবিল্লাহ! এবং উনার সম্পর্কে মন্দ কথা বলতো। না’ঊযুবিল্লাহ! একদিন একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি ঐ ইহুদী মহিলাকে গলা টিপে হত্যা করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ ইহুদী মহিলার রক্তের দাবী বাতিল বলে ঘোষণা মুবারক করেন। অর্থাৎ ঐ ইহুদী মহিলার শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদন্ড, সেটাই তাকে এই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দিয়েছেন। কাজেই, এজন্য এই ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে কোন রক্তপণ দিতে হবে না। তিনি যা করেছেন সঠিকই করেছেন। এজন্য উনাকে কোনো রকম দোষারোপ করা তো যাবেই না; বরং উক্ত আমলের জন্য উনার প্রশংসা করতে হবে।” সুবহানাল্লাহ! (আবূ দাঊদ শরীফ, আস সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী ৯/২০০, মা’রিফাতুছ ছাহাবা লিল বাইহাক্বী ১৩/৩২১, আল আহাদীছুল মুখতারাহ্ লিল মাক্বদিসী ২/১৬৯, যাদুল মা‘আদ ৫/৫৪, খ্বাছাইছুল কুবারা ২/৩৮০, নাইলুল আওত্বার ৭/২২২, যখীরতুল উক্ববা ৩২/২৫, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৯/২১২, আহকামু আহলিয যিম্মাহ্ ৩/১৩৯৮ ইত্যাদি)
এ কারণে হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম ফতওয়া দিয়েছেন,
اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَنَقِّصَ لَهٗ كَافِرٌ وَالْوَعِيْدُ جَارٍ عَلَيْهِ بِعَذَابِ اللهِ لَهٗ وَحُكْمُهٗ عِنْدَ الْاُمَّةِ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِـىْ كُفْرِهٖ وَعَذَابِهٖ كَفَرَ
অর্থ: “সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা এই বিষয়ে ইজমা’ করেছেন যে, নিঃসন্দেহে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী, উনার মর্যাদাহননকারী, মানহানিকারী ব্যক্তি কাফির এবং তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। তার ব্যাপারে সমস্ত উম্মত উনাদের ফয়সালা হলো, তাকে শরঈ শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি এ ধরণের লোকদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে এবং শাস্তিযোগ্য হওয়ার বিষয়ে (অর্থাৎ তার একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়ার বিষয়ে) সন্দেহ পোষণ করবে, সেও কাফির হবে (এবং তাকেও শরঈ শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদন্ড দিতে হবে)।” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ১২০ নং পৃষ্ঠা, নিহায়াতুস সুওয়াল ২৬১ নং পৃষ্ঠা)
অতএব, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত শরীয়ত উনার ফতওয়া হচ্ছেন- ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যারা মানহানি করবে, তাদের একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদন্ড। তারা নামধারী ইমাম হোক, খতীব হোক, মুফতী হোক, মুহাদ্দিছ হোক, মুফাসসির হোক, ইসলামী চিন্তাবিদ হোক অর্থাৎ তারা মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। অর্থাৎ তারা যেই হোক না কেন। তাদের তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাদেরকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদন্ড।’ সুবহানাল্লাহ!
আর যেই সমস্ত দ্বীনদার আশিকে রসূলগণ এ সমস্ত মানহানিকর বক্তব্য শুনে বা মানহানিকর লেখা পড়ে বরদাশত করতে না পেরে তাদেরকে শরঈ শাস্তি দিবে অর্থাৎ ক্বতল করবে, তারা শরীয়ত উনার ফতওয়া মুতাবেক অপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত হবে না। তারা বেকসুর খালাছ পাবে। আর যেই আশেকে রসূল উক্ত গোস্তাখে রসূল এর বক্তব্য শুনে বরদাশত করতে না পেরে ঐ কুলাঙ্গারকে আঘাত করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।’ সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে উনি অপরাধী নন। এদেশের সরকার, আদালত ও প্রশাসনের উচিত উক্ত আশিকে রসূল উনার এই ঈমানী হিম্মতের যথাযথ মূল্যায়ন করা এবং উনার পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ও উনাকে বেকসুর খালাছ প্রদান করা এবং তার পাশাপাশি কথিত ইমাম নামধারী ঐ গোস্তাখে রসূল ও কুলাঙ্গারকে গ্রেফতার করে হাজতে প্রবেশ করানো ও তার শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রদান করা। আর জনগণের ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে উক্ত কাজে পূর্ণ সমর্থন করা এবং সার্বিক সহযোগিতা করা।
অতএব, কথিত ইমাম নামধারী ঐ গোস্তাখে রসূল ও কুলাঙ্গার যেহেতু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানি করেছে, তাই তার একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদন্ড।
(পূর্বপ্রকাশিতের পর)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












