মুসলিম স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন খাগড়াছড়ির সবচেয়ে পুরনো ঐতিহাসিক শাহী জামে মসজিদ
এডমিন, ১৪ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ৩১ আগস্ট, ২০২৩ খ্রি:, ১৭ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) স্থাপত্য নিদর্শন

এই ঐতিহাসিক মসজিদটি প্রতিষ্ঠার সময় খাগড়াছড়ি ছোট একটি বাজার ছিল। তখন খাগড়াছড়ি ছিল রামগড় নিয়ন্ত্রণাধীন একটি গ্রাম। যে গ্রামের বাজারে মুসলিম ব্যবসায়ীদের প্রতিষ্ঠান ছিল। তাদের আদিনিবাস ছিল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান এলাকা। তারা রাঙামাটি, মহালছড়ি হয়ে চেঙ্গী নদী দিয়ে নৌকা নিয়ে খাগড়াছড়ি আসতেন এবং বাণিজ্য করতেন। ওই ব্যবসায়ীদের একজন ছিলেন আমছু মিয়া, আরেকজন লাল মিয়া। দু’জনের নেতৃত্বে আরও অনেকের সহযোগিতায় খাগড়াছড়ি জেলার চেংগী নদীর পাড়ে কাঠ ও শন দিয়ে বানানো হয় মসজিদটি। পরে টিনশেড ঘর থেকে বিল্ডিং ও এখন তিনতলা হয়েছে মসজিদটি। এখন মসজিদটির আয়তন প্রায় দশ হাজার বর্গফুট। টিনশেড বিল্ডিং থাকা অবস্থায় মসজিদটি বেশ কয়েকবার সংস্কার হয়।
শুরুর দিকে ৩০-৪০ জন নিয়ে জামাত হতো। এখন খাগড়াছড়ি জামে মসজিদটিতে একসঙ্গে নামায আদায় করতে পারেন প্রায় পাঁচ হাজার মুসল্লি।
মসজিদটির কারুকাজ দেখে কারও ধারণা এটি ইরানের মসজিদগুলোর আদলে বানানো। এর বাইরের দিকের আয়তন উত্তর-দক্ষিণে ৯৫ ফুট এবং পূর্ব-পশ্চিমে ১০০ ফুট। নামায কক্ষটি বর্গাকার। মিনারে রয়েছে সুদৃশ্য কারুকাজ। মোট তিনটি গম্বুজ আছে। ভেতরে আছে বেশ কয়েকটি ঝাড়বাতি ও দেয়ালে মনোমুগ্ধকর নকশা।
এই ঐতিহাসিক মসজিদে ইটের সঙ্গে পাথরের ব্যবহারও করা হয়েছে। দেয়ালের মাঝে পাথরের স্তম্ভ, ইটের গাঁথুনি চোখে পড়ার মতো। পূর্ব-দক্ষিণে আছে ওযুখানা ও ইস্তিঞ্জাখানা।
খাগড়াছড়ি কেন্দ্রীয় শাহী জামে মসজিদ একটি দর্শনীয় স্থান। সুউচ্চ এ মিনার দূর থেকে দেখলেই চেনা পথিক বুঝতে পারবেন যে তিনি খাগড়াছড়ি শহরে চলে এসেছেন। মসজিদটি মুসলিমদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অংশ। জায়গাটিও নয়নাভিরাম। এখানে যে কেউ গেলেই মন ভালো হয়ে যায়।
সম্পাদনায় : মুহম্মদ নাঈম।