সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (১৭)
হযরত কাতাদাহ্ বিন নু’মান আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার একটি ঈমানদীপ্ত ঘটনা
, ১৯ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০২ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০১ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
উহূদের জিহাদ প্রসঙ্গে তিনি বর্ণনা করেন- সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোন এক সৌভাগ্যবান ব্যক্তি একটি তীর হাদিয়া করেছিলেন। উহূদের জিহাদের সময় তিনি তীর মুবারকটি আমার হাতে দিয়েছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখেই আমি সেটি দুশমনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছিলাম। যার ফলে তীর মুবারকটির একদিক ভেঙ্গে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখে আমি দুশমনদের বিরুদ্ধে ব্যারিকেড স্বরূপ অবস্থান নেই। সেসময় অনবরত দুশমনদের নিক্ষিপ্ত তীর আমার মুখম-লে এসে বিধতে লাগলো। এ অবস্থায়ও আমি সেখান থেকে বিন্দুমাত্র সরে পড়িনি। বরং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখে কোন তীর আসতে দেখলেই আমি আমার মুখ এবং মাথা এগিয়ে দিতাম। যাতে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জিসিম মুবারক কোনমতেই তীরবিদ্ধ হতে না পারে। আমার তীর যেহেতু পূর্বেই ভেঙ্গে পড়েছিল তাই আমি কোন তীর নিক্ষেপ করতে পারছিলাম না। এ সময় দুশমনের একটি তীর সরাসরি আমার চোখে এসে বিদ্ধ হলো। এতে আমার একটি চোখ ভিতর থেকে বের হয়ে গালের উপর এসে ঝুলে পড়লো। তখন কেউ কেউ বের হয়ে পড়া চক্ষুটি কেটে ফেলে দিতে চেয়েছিল। অনেকে বললেন না! না! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে না জানিয়ে কিছু করা যাবেনা।
অতঃপর আমি যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট আমার চোখটি হাতে ধরে দেখালাম, আমার এ অবস্থা দেখে সাথে সাথে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত অশ্রু মুবারক গড়িয়ে পড়লো। রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখন আমার জন্য বারে ইলাহী তায়ালা উনার দরবারে দুয়া মুবারক করলেন এই বলে- “আয় মহান আল্লাহ পাক! কাতাদাহ্ আপনার সম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য নিজের চেহারাকে যখম করেছেন, আপনি উনার চেহারা আর চক্ষু ভাল করে দিন এবং চোখের দৃষ্টি শক্তি আগের চেয়ে বৃদ্ধি করে দিন।”
এরপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও চোখটি কেটে ফেলতে নিষেধ করলেন এবং পবিত্র নূরুল মাগফিরাত বা হাত মুবারক দিয়ে চোখটি আমার কোটরে বসিয়ে দিলেন। সাথে সাথে চোখটি এমনভাবে সংস্থাপিত হয়ে গেল যাতে বুঝার কোন উপায় রইলো না আমার কোন চোখটি দুশমনের আঘাতে বেরিয়ে পড়েছিল। এমনকি ঐ চোখের দৃষ্টি শক্তি পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি প্রখর হয়ে গেল। (সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
ঈমানদীপ্ত ইবরত:
চতুর্দিক হতে দুশমনদের তীর দ্বারা আক্রান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা আবার চক্ষু বিদীর্ণ হয়ে উপড়ে পড়া এরপরও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইশকে দৃঢ়চিত্তে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা একমাত্র ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের পক্ষেই সম্ভব; যা হযরত কাতাদাহ বিন নু’মান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার বর্ণিত ঈমানদীপ্ত ঘটনায় জাহির হয়েছে। এতে একইসাথে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাতের অপূর্ব মু’জিযাহ মুবারকও প্রকাশ পেয়েছে।
বর্তমান ফিৎনা ফাসাদের যামানায়ও যে সমস্ত আশিকে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুন্নত মুবারককে প্রতিষ্ঠা করতে হযরত কাতাদাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ন্যায় ঈমানদীপ্ত দৃঢ়তা প্রদর্শন করবে তার প্রতিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুপম মুহব্বত এবং গায়েবী মদদ অঝোর ধারায় বর্ষিত হবে। বর্তমান যামানায় এমন নিয়ামত মুবারক হাছিল করতে হলে আহলু বাইতে রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারকে আসা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।
-মুহম্মদ মুহাজিরুল ইসলাম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












