সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শান মুবারক উনার খিলাফ যারা বলবে তাদের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদন্ড
, ০৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৪ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১৮ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
যারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অবমাননা করে, কটুক্তি করে তারা কাফির ও মুরতাদ। এই শ্রেণীর লোকদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক ফয়সালা মুবারক দিয়েছেন-
مَّلْعُونِينَ ۖ أَيْنَمَا ثُقِفُوا أُخِذُوا وَقُتِّلُوا تَقْتِيلًا ﴿٦١﴾ سُنَّةَ اللَّـهِ فِي الَّذِينَ خَلَوْا مِن قَبْلُ ۖ وَلَن تَجِدَ لِسُنَّةِ اللَّـهِ تَبْدِيلًا ﴿٦٢﴾
অর্থ: “অভিশপ্ত অবস্থায় তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে, ধরা হবে এবং কতল করা হবে। যারা পূর্বে অতীত হয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে এটাই ছিলো মহান আল্লাহ পাক উনার রীতি। আপনি আল্লাহ পাক উনার রীতিতে কখনো পরিবর্তন পাবেন না। ” (পবিত্র সূরা আহযাব ৬১-৬২)
বিখ্যাত আলেমে দ্বীন আল্লামা হযরত জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা দলীল দিয়েছেন, যে ব্যক্তি পবিত্র দ্বীন ইসলাম বা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার বিরুদ্ধে খারাপ মন্তব্য করে, অথবা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যাপারে মন্দ কথা বলে ওই ব্যক্তিকে শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। (মাহাসিনুত তাওয়ীল-৫/১৪২)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে-
من سب نبيًّا فاقتلوه
আমীরুল মু’মিনীন, ইমামুল আউওয়াল, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবরাক করেছেন, যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালি দেয়, তার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। (জামেউল আহাদীস: হাদীছ নং-২২৩৬৬, জমউল জাওয়ামে: হাদীছ নং-৫০৯৭, দায়লামী শরীফ ৩/৫৪১, হাদীছ নং-৫৬৮৮)
হযরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
من لى بكعب إبن الأشرف فإنه قد أذى الله و رسوله
কাব বিন আশরাফের ব্যাপারে কে আছো? কেননা সে মহান আল্লাহ পাক ও উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়। নাঊযুবিল্লাহ! তখন হযরত মুহাম্মদ বিন মাসলামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি দাঁড়িয়ে বললেন, “ইয়া সাইয়্যিদুল মুরসালীন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি চান আমি তাকে হত্যা করি?” তিনি বললেন, হ্যাঁ। (ছহীহ বুখারী, হাদীছ নং-৩৮১১)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে শাস্তিস্বরূপ কতল করার নির্দেশ দিলেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَامَ الْفَتْحِ، وَعَلَى رَأْسِهِ الْمِغْفَرُ فَلَمَّا نَزَعَهُ جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ إِنَّ ابْنَ خَطَلٍ مُتَعَلِّقٌ بِأَسْتَارِ الْكَعْبَةِ فَقَالَ اقْتُلُوهُ
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের বছর পবিত্র মক্কা শরীফ প্রবেশ করেন, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শির মুবারকে ছিলো শিরস্ত্রাণ। তিনি তা খুললেন। সে সময় একজন এসে বললেন যে, ইবনে খাতাল পবিত্র কা’বা শরীফ উনার গিলাফ ধরে বসে আছে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তাকে শাস্তিস্বরূপ কতল করো। (ছহীহ বুখারী: হাদীছ নং-১৮৪৬, মুসলিম শরীফ ৩৩৭৪, সুনানে আবু দাউদ ২৬৮৭, তিরমিযী শরীফ ১৬৯৩, সুনানে নাসাঈ ২৮৬৭, ইবনে হিব্বান ৩৭১৯, সুনানে দারেমী ১৯৯০, মুসনাদে বাযযার ৬২৯০, বায়হাক্বী সুনানে কুবরা ৩৮৩৬, মুসনাদে আবু ইয়ালা ৩৫৩৯, সুবহুল হুদা ওয়ার রাশাদ ফি সীরাতে খাইরুল ইবাদ ৫/২২৪, বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪/৩৩৪)
ইবনে খাতাল কা’বা শরীফ উনার গিলাফ ধরা অবস্থায়ও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাকে কেন কতল করার নির্দেশ মুবারক দিলেন এর ব্যাখ্যায় হাফিজুল হাদীছ আল্লামা হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বুখারী শরীফ উনার ব্যাখ্যাগ্রন্থ “ফাতহুল বারীতে” বিস্তারিত ঘটনা উল্লেখ করে বলেন যে, লোকটি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গালাগাল করতো। নাঊযুবিল্লাহ! (ফাতহুল বারী-২/২৪৮)
ইবনে খাতালের দুই বাঁদী ছিলো, যারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে কুৎসামূলক গান গাইতো। নাঊযুবিল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ উনার বিজয়ের দিন তাদেরও শাস্তিস্বরূপ কতল করার নির্দেশ মুবারক দেন (আসাহহুর সিয়ার ২৬৬, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪/৪৯৮)
হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একবার হযরত আব্দুল্লাহ বিন আতিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে আমীর বানিয়ে আবু রাফে ইহুদীকে শাস্তিস্বরূপ কতল করতে পাঠালেন। আবু রাফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিতো এবং অন্যদেরকেও কষ্ট দিতে সাহায্য করতো। নাঊযুবিল্লাহ! হযরত আব্দুল্লাহ বিন আতিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি তাকে প্রচ- আঘাত করলাম। কিন্তু প্রথমেই কতল করতে পারিনি, তারপর তরবারীর ধারালো ডগা তার পেটে ঢুকিয়ে দিলাম এমনকি তা তার পিঠ ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তখন আমি বুঝলাম যে, আমি তাকে কতল করতে সক্ষম হয়েছি। সুবহানাল্লাহ! (ছহীহ বুখারী: হাদীছ নং-৩৮১৩)
এমনিভাবে মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়ার কারণে হুরায়াইস বিন নাকীজ নামের এক কুলাঙ্গারকে হত্যা করার নির্দেশ দেয়া হয়। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪/২৯৮)
-খাজা মুহম্মদ নূরউদ্দীন পলাশ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৭)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












