জীবনী মুবারক
হযরত আসমা বিনতু আবী বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা (২)
পারিবারিক জীবন:
এডমিন, ০১ রবীউর আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ১৭সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০২ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি এক সময় উনার আহাল বা স্বামীর থেকে জুদা হয়ে যান। আহাল থেকে জুদা হওয়ার পর তিনি উনার পুত্র হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকট চলে আসেন এবং শেষ জীবন পর্যন্ত উনার সঙ্গেই থাকেন। হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার মাতার অত্যন্ত খেদমত গুজার ছিলেন। তিনি উনার আহাল বা স্বামী থেকে জুদা হওয়ার পরও উনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। উষ্ট্রের যুদ্ধে উনার আহাল বা স্বামী শহীদ হলে তিনি উনার জন্য দুঃখিত ও শোকাভিভূত হয়েছিলেন।
পুত্রের শাহাদাতে উৎসাহ দান:
উনার জীবনের সবচেয়ে দুঃখপূর্ণ ঘটনা হল, উনার পুত্র হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শাহাদাত। মারওয়ানের সময় উমাইয়া রাজত্ব কেবল সিরিয়াতে সীমাবদ্ধ ছিল। সিরিয়ার বাইরে ইসলামী বিশ্ব ছিল হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার আয়ত্বাধীন। কিন্তু আবদুল মালেক সিংহাসনে আরোহণ করে একের পর এক তাদের হারানো এলাকা পূনরুদ্ধার করতে লাগলো। হাজ্জাজ বিন ইউসুফ বিজয়ের সাথে অগ্রসর হচ্ছিল। হিজরী ৭৩ সনে তার হাতে মক্কা শরীফ অবরোধ যখন এমন কঠোরতার পর্যায়ে পৌঁছল যে, হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার সঙ্গী-সাথীগণ উনাকে ত্যাগ করে হাজ্জাজের নিকট নিরাপত্তার আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগল। তখন হযরত আবদুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনার মাতার নিকট গিয়ে বললেন, মাত্র কয়েকজন সঙ্গী আমার নিকট রয়েছে। এমতাবস্থায় আমি আত্মসমর্পন করলে তাদের নিরাপত্তা লাভ করা যাবে। হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বললেন, আপনি যে রাজত্ব ও ক্ষমতা লাভ করেছেন তা যদি দুনিয়ার জন্য করে থাকেন, তবে আপনার চেয়ে নিকৃষ্ট আর কোন মানুষ নেই। তিনি বললেন, আমি যা করেছি দ্বীনের জন্যই করেছি, কিন্তু আমার আশঙ্কা হচ্ছে যে, আমি শহীদ হলে সিরিয়াবাসী আমার লাশের অবমাননা করবে। হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা তিনি বললেন, কোন ক্ষতি নেই, সঠিক দ্বীনের উপর কায়িম থাকুন। শহীদ হওয়ার পর মানুষের ভয়ের কিছু নেই। কারণ, জবেহ করা ছাগলের চামড়া তোলার সময় সে কষ্ট পায় না।
-আল্লামা সাঈদ আহমদ গজনবী।