ফতওয়া
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (১৯)
, ২৬ রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২০ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ০৩ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) ফতওয়া বিভাগ
৬৬. হাফিযুল্ হাদীছ (حافظ الحديث):
(১৪০-১৪১)
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও হযরত তাবিয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যুগের পর যিনি সনদ ও মতনের সমস্ত বৃত্তান্তসহ এক লক্ষ হাদীছ শরীফ আয়ত্ত করেছেন উনাকে ‘হাফিযুল্ হাদীছ’ বলে। মুফতী হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আমীমুল্ ইহসান মুজাদ্দিদী বরকতী হানাফী মাতুরীদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত ‘মীযানুল্ আখবার’ কিতাবের বর্ণনা মতে, যিনি সনদ ও মতনের সমস্ত বৃত্তান্তসহ এক হাজার হাদীছ শরীফ আয়ত্ত করেছেন উনাকে ‘হাফিযুল্ হাদীছ’ বলে। তবে, কেউ কেউ হাফিযুল্ হাদীছ হওয়ার জন্য ইলমে লাদুন্নী শর্ত করেছেন।
৬৭. হুজ্জাত (حجة):
(১৪২)
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও হযরত তাবিয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যুগের পর যিনি সনদ ও মতনের সমস্ত বৃত্তান্তসহ তিন লক্ষ হাদীছ শরীফ আয়ত্ত করেছেন উনাকে ‘হুজ্জাত’ বলে। তবে, কেউ কেউ হুজ্জাত হওয়ার জন্য ইলমে লাদুন্নী শর্ত করেছেন।
৬৮. হাকিমুল হাদীছ (حاكم الحديث):
(১৪৩)
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও হযরত তাবিয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যুগের পর যিনি সনদ ও মতনের সমস্ত বৃত্তান্তসহ সমস্ত হাদীছ শরীফ আয়ত্ত করেছেন উনাকে ‘হাকিমুল্ হাদীছ’ বলে। তবে, কেউ কেউ হাকিমুল হাদীছ হওয়ার জন্য ইলমে লাদুন্নী শর্ত করেছেন।
যে কোন একটি পবিত্র মাযহাব ইন্তিকাল পর্যন্ত মান্য করা ফরয-ওয়াজিব এবং পবিত্র মাযহাব পরিবর্তন করা হারাম বা নাজায়িয হওয়ার প্রমাণ:
খইরুল কুরূন অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের যুগ, হযরত তাবিঊন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যুগ ও হযরত তাবিউত তাবিয়ীন রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের যুগের পর ফিতনা-ফ্যাসাদ, যুলুম-অত্যাচার, কিয্ব-মিথ্যা, বুহ্তান-তুহমাত বা মিথ্যা অপবাদ, অহঙ্কার, হিংসা-বিদ্বেষ, গিবত-পরনিন্দা ইত্যাদি হাজারো বদ স্বভাব বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এবং এর বিপরীতে তাক্বওয়া-পরহেযগারিতা, ছহীহ বুঝ, প্রখর মেধা শক্তি, দয়া-অনুগ্রহ, বিনয়-নম্রতা, সত্যের আনুগত্যতা, আমানতদারী, দানশীলতা ইত্যাদি হাজারো উন্নত সৎ স্বভাবগুলো কমে যাওয়ার কারণে পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের যে কোন একটি পবিত্র মাযহাব উনাকে আজীবন অনুসরণ করা সকলের জন্য ফরয-ওয়াজিব।
সে ব্যক্তি মুজতাহিদ, ইমাম, আলিম, মুফতী, মাওলানা, আল্লামা, মুহাদ্দিছ, মুফাসসির, ফক্বীহ, আদীব, শায়েখ, উস্তায, শিক্ষক, ওয়ায়িয, সর্বসাধারণ, জ্ঞানী, কবি, সাহিত্যিক, মুর্খ ইত্যাদি যে কোন শ্রেণীর হোক না কেন। যে ব্যক্তি যে মাযহাব একবার অনুসরণ করবে অথবা বংশগতভাবে যে ব্যক্তি যে পবিত্র মাযহাব উনার অনুসারী সে ব্যক্তি কর্তৃক ইন্তিকাল পর্যন্ত সেই পবিত্র মাযহাব উনার ইত্তিবা’ করে যাওয়া ফরয-ওয়াজিব। কারণ, নিজ পবিত্র মাযহাব পরিবর্তন করা হারাম এবং এ কাজটি পবিত্র দ্বীনি শরীয়ত উনার সাথে খিয়ানত ও ইহানত করার শামিল। পবিত্র মাযহাব উনার এ ফতওয়ায় পরবর্তীতে অসংখ্য সমাধান দলীল-আদিল্লাহসহ বিস্তারিত আলোচনা করার পূর্বে শুরুতেই মৌলিক এ বিষয়টি অর্থাৎ পবিত্র মাযহাব মানা ফরয-ওয়াজিব আর মাযহাব পরিবর্তন করা হারাম হওয়া সম্পর্কে সংক্ষেপে অকাট্য দলীলসমূহ উল্লেখ করা হলো।
(১৪৪-১৪৬)
فان قلت اذا كان الحق فى موضع الخلاف واحدا فما معنى حقيقة الـمذاهب الاربعة، قلت معناها ان الحق الواحد يحتمل ان يكون فيما قال الشافعى رحمة الله عليه ويحتمل ان يكون فيما قال ابو حنيفة رحمة الله عليه فيكون كل من الـمذاهب الاربعة حقا بهذا الـمعنى فالـمقلد اذا قلد اىُّ مجتهد يخرج عن الوجوب ولكن ينبغى ان يقلد واحدا التزامه ولا يؤل الى اخر.
অর্থ: আপনি যদি প্রশ্ন করেন, পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের একটির সাথে অপরটির যখন মতভেদ আছে, তখন এই মতভেদ সম্বলিত পবিত্র মাযহাব উনাদের মধ্যে মাত্র যে কোন একটি সত্য হবে, সবগুলিই সত্য হওয়া কিভাবে সম্ভব? এ প্রশ্নের উত্তরে আমি বলবো, এর তাৎপর্য হলো- যেখানে মতভেদ আছে সেখানে এইটি সত্য অর্থাৎ যা হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন তা-ই সত্য, কিংবা যা হযরত ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন তাই সত্য, অথবা অপর দু’টির যে কোন একটি সত্য এরূপ ধারণা হতে পারে। এ দৃষ্টিতে পবিত্র চার মাযহাব উনাদের প্রত্যেকটিই হক্ব বলে তাকলীদ করা যেতে পারে।
সুতরাং চার ইমাম উনাদের যে কোন একজনের অনুসরণ করলে ওয়াজিব আদায় হবে। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, একবার যে ইমাম উনার অনুসরণ করা হয়েছে, উনাকে পরিত্যাগ করে অন্য মাযহাবে যাওয়া জায়িয হবে না। (তাফসীরাতুন আহমাদিয়াহ ফী বায়ানিল আইয়াতিশ্ শারইয়্যাহ মায়া তাফরীয়াতিল্ মাসায়িলিল্ ফিক্হিয়্যাহ লিখক: সাইয়্যিদুল ফুক্বাহা ওয়াল্ মুহাদ্দিছীন, রা’সুল্ হুকামা ওয়াল্ মুতাকাল্লিমীন, ইমামুল মা’কূল ওয়াল মানকূল, সাইয়্যিদুল উলামায়িল্ ফুহূল, হযরত মাওলানা শায়েখ আহমদ মুল্লা জিঊন জৌনপূরী হানাফী মাতুরীদী রহমতুল্লাহি আলাইহি সূরাতুল আম্বিয়া উনার ৭৮-৭৯ আয়াত শরীফ উনার তাফসীর ৩৪৩ পৃষ্ঠা প্রকাশনা: আশরাফী বুক ডিপো দেওবন্দ জেলা: সাহারানপূর ইন্ডিয়া, ফতোয়ায়ে ছিদ্দীকিয়া লিখক: আমীরুশ্ শরীয়াহ, ওয়াত্ ত্বরীক্বাহ, আল্ হাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ্ ছূফী নিছারুদ্দীন আহমদ ছারছীনায়ী ফুরফুরাবী হানাফী মাতুরীদী রহমতুল্লাহি আলাইহি ২১৮ পৃষ্ঠা, বুরহানুল্ মুকাল্লিদীন বা মাযহাব মীমাংসা-খ্যাতনামা পীর, মুহাদ্দিছ, মুফাসসির, মুবাহিছ, ফক্বীহ, হাফিযুল্ হাদীছ, শাহ ছূফী আল্ হাজ্জ হযরত মাওলানা আল্লামা মুহম্মদ রূহুল আমিন বশীরহাটী ফুরফুরাবী হানাফী মাতুরীদী রহমতুল্লাহি আলাইহি ১৫২ পৃষ্ঠা)
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত থেকে সংকলিত। ) (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (৩১)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (৩০)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৯)
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৮)
২০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৭)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৬)
১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৫)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৪)
০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২২)
৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২১)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২০)
২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












