ফতওয়া
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৯)
, ০৫ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৯ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) ফতওয়া বিভাগ
মূলত: মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট পবিত্র ওহী মুবারক উনার মাধ্যমে নাযিলকৃত পূর্ণাঙ্গ মনোনীত জীবন ব্যবস্থাকে পবিত্র ইসলাম বলা হয়। আর যিনি পবিত্র ইসলাম উনাকে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিকভাবে মেনে নেন উনাকে মুসলিম বলা হয়।
৬. دين (দ্বীন): শব্দটি একবচন, এর বহুবচন اديان আদইয়ান। দ্বীন শব্দটিও মাযহাব শব্দের সমার্থবোধক। মাযহাব শব্দটির মতোই দ্বীন উনার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- দ্বীন, আক্বীদাহ, ইসলাম, বিশ্বাস, ধার্মিকতা, দ্বীনদারি, বিচার, প্রতিদান, আনুগত্য, ধর্মপরায়ণতা, চরিত্র, অভ্যাস, অবস্থা, রক্ষণশীলতা, ক্ষমতা, ফায়সালা, পরিণাম, বিবেচনা, কিয়ামত দিবস, শরীয়ত, নিয়ম-নীতি, পদ্ধতি, মত, পথ, পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা, মাযহাব, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ ইত্যাদি। আর পারিভাষিক দৃষ্টিতে দ্বীন ইসলাম শব্দটিও মাযহাব শব্দের মতোই অর্থ প্রদান করে।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
(২৩৩)
إِنَّ الدِّينَ عِنْدَ اللهِ الْإِسْلَامُ.
অর্থ: মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নিকট পছন্দনীয় দ্বীন (পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা) হচ্ছে পবিত্র ইসলাম। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৯)
ইসলামী শরীয়ত উনার পরিভাষায়-
(২৩৪)
الدين: بالكسر وضع التى يدعو اصحاب العقول الى القبول ما هو عند الرسول الله صلى الله عليه وسلم، والدين والـملة متحدان بالذات مختلفان بالاعتبار فان الشريعة من حيث انها تطاع تسمى دينا ومن حيث انها تجمع تسمى ملة ومن حيث انها يرجع اليها تسمى مذهبا وقيل الدين منسوب الى الله والـملة منسوبة الى الرسول والـمذهب منسوب الى الـمجتهد.
অর্থ: الدين শব্দটির دال বর্ণে যের যোগে পড়তে হবে। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি নাযিলকৃত যে পবিত্র জীবন ব্যবস্থা গ্রহণের দিকে বিচক্ষণ ইমাম-মুজতাহিদ উলামায়ে কিরাম উনারা আহবান করে থাকেন সেই পবিত্র জীবন ব্যবস্থাকেই পবিত্র দ্বীন বলা হয়।
দ্বীন ও মিল্লাত শব্দ দু’টি মৌলিকভাবে একই অর্থজ্ঞাপক। কিন্তু ব্যাখ্যা সাপেক্ষে শব্দ দু’টির মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার ইত্তিবার নাম পবিত্র দ্বীন, আর যখন সকলেই একই সিদ্ধান্তে জমা হয় তখন তাকে মিল্লাত বলা হয়। আর যখন মিল্লাত তথা ইমাম-মুজতাহিদ উনাদের দিকে প্রত্যাবর্তন করা হয়, তখন তাকে মাযহাব বলে।
এজন্য বলা হয়: ‘পবিত্র দ্বীন’ শব্দটি মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত, ‘মিল্লাত’ শব্দটি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং ‘পবিত্র মাযহাব’ শব্দটি মুজতাহিদ (ইমাম উলামা আউলিয়া) উনাদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। (আত তা’রীফাতুল ফিক্বহিয়্যাহ লিস্ সাইয়্যিদ মুহম্মদ আমীমুল ইহসান মুজাদ্দিদী বরকতী হানাফী মাতুরীদী রহমতুল্লাহি আলাইহি ২৯৫ পৃষ্ঠা)
অতএব প্রমাণিত হচ্ছে যে: দ্বীন, মিল্লাত ইত্যাদি শব্দগুলো মাযহাব অর্থেই ব্যবহার হয়ে থাকে। কারণ দ্বীন, মিল্লাত, ইসলাম, শরীয়ত ইত্যাদিকে সুষ্ঠুভাবে পালন করাই মাযহাব উনার মূল উদ্দেশ্য। সুবহানাল্লাহ!
৭. شريعة (শরীয়ত): শব্দটি একবচন, এর বহুবচন شرائع ‘শারায়িউন’। শরীয়ত শব্দটিও মাযহাব শব্দের সমার্থবোধক। মাযহাব শব্দটির মতই শরীয়ত উনার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- হুকুম, ফায়সালা, শরীয়াত, নিয়ম-নীতি, আইন, মত, পথ, পন্থা, পদ্ধতি, ইসলাম, দ্বীন, পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা, মাযহাব, আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামায়াহ ইত্যাদি। আর পারিভাষিক দৃষ্টিতে দ্বীন ইসলাম শব্দটিও মাযহাব শব্দের মতোই অর্থ প্রদান করে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
(২৩৫)
لكل جعلنا منكم شرعة و منهاجا.
অর্থ: আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি শরীয়ত (বা নিয়ম-নীতি) ও চলার পথ তরীকত বা তাছাওউফ দিয়েছি। (পবিত্র সূরা মায়িদাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৮)
(২৩৬)
ثم جعلناك على شريعة من الامر فاتبعها و لا تتبع اهواء الذين لا يعلمون.
অর্থ: এরপর আমি আপনাকে রেখেছি দ্বীনের এক বিশেষ শরীয়ত উনার উপর। অতএব আপনি এর অনুসরণ করুন এবং মূর্খদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবেন না। (পবিত্র সূরা জাছিয়াহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৮)
এখন স্পষ্টই বুঝা যাচ্ছে যে, পবিত্র কুরআন মাজীদ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে ব্যবহৃত শরীয়ত অর্থই ছিরাত, সাবীল, মাযহাব বা সঠিক পথ ইত্যাদি।
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত থেকে সংকলিত। ) (চলবে)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (৩১)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (৩০)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৮)
২০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৭)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৬)
১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৫)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৪)
০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২২)
৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২১)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২০)
২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (১৯)
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












