কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১)
, ২৯ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৫ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৪ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ০৯ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) ফতওয়া বিভাগ
সুওয়াল:
বর্তমানে তথাকথিত ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে দেশ-বিদেশের মানুষ কঠিন ভয়াবহ ফিতনার সম্মুখীন হয়েছে। এ ব্যাপারে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার সঠিক ফায়ছালা কি? জানিয়ে বাধিত করবেন।
জওয়াব (ধারাবাহিক):
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে ট্রান্সজেন্ডার সম্পূর্ণরূপে হারাম, নাজায়িয ও কাট্টা কুফরী। কারণ এটি হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিকে পরিবর্তন করা ও উনার সাথে বিদ্রোহ করার শামিল এবং একটি সমকামী মতবাদ, ইবলীসী এজেন্ডা ও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনাকে দুনিয়ার যমীন থেকে মিটিয়ে দেয়ার একটা গভীর নীল নকশা। কেননা স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে উনার সৃষ্টির পরিবর্তন করাকে শয়তানের কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং এর ভয়াবহ কঠিন পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তিনি শয়তানের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন,
وَلَاٰمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللهِ
অর্থ : (শয়তান বললো-) নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে নির্দেশ দিবো, ফলে তারা মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টিকে বিকৃত করবেই। না‘ঊযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা নিসা : আয়াত শরীফ ১১৯)
কাজেই নিঃসন্দেহে ট্রান্সজেন্ডার হচ্ছে একটি ইবলীসী এজেন্ডা। আর এটা লা’নতেরও কারণ। এ সম্পর্কে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন,
لَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَشَبِّهِيْنَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহিলার বেশ ধারণকারী পুরুষের উপর এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলার উপর লা’নত বর্ষণ করেছেন। না‘ঊযুবিল্লাহ! (বুখারী শরীফ)
কাজেই সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে ট্রান্সজেন্ডার সম্পূর্ণরূপে হারাম, নাজায়িয ও কাট্টা কুফরী। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَّلَا مُؤْمِنَةٍ اِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهٗٓ اَمْرًا اَنْ يَّكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ اَمْرِهِمْ وَمَنْ يَّعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِيْنًا
অর্থ: কোনো মু’মিন পুরুষ-মহিলা কারো জন্য কস্মিনকালেও জায়েয হবে না যে, যখন মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা কোনো বিষয়ে সম্মানিত ফায়ছালা মুবারক দেন, এই বিষয়ে কোনো মত পেশ করা। যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল, হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের ফায়ছালাকৃত বিষয়ে কোনো মত পেশ করবে, সে প্রকাশ্য গোমরাহীতে নিমজ্জিত হবে। অর্থাৎ সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহ্যাব : আয়াত শরীফ ৩৬)
আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَرَكْتُ فِـيْكُمْ اَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَـمَسَّكْتُمْ بِـهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ : হযরত আমর ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমি তোমাদের জন্য দুখানা সম্মানিত বিশেষ নিয়ামত মুবারক রেখে যাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত তোমরা এই দুখানা সম্মানিত বিশেষ নিয়ামত মুবারক উনাদেরকে আঁকড়ে ধরে রাখবে, ততদিন পর্যন্ত কস্মিনকালেও তোমরা গোমরাহ্ হবে না, পথভ্রষ্ট হবে না। আর সেই দুখানা সম্মানিত বিশেষ নিয়ামত মুবারক হচ্ছেন, (১) পবিত্র কুরআন শরীফ এবং (২) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নাত মুবারক। সুবহানাল্লাহ! (তারতীবুল আমালী ১/২০২, জামি‘উ বায়ানিল ইলম ওয়া ফাদ্ব্লিহী ১/৭৫৫)
অতএব একজন মুসলমানকে দায়িমীভাবে প্রতিটি মুহূর্তে এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে অবশ্যই পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী চলতে হবে। সে পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র হাদীছ শরীফ অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়ত উনার খিলাফ এক মুহূর্তও চলতে পারবে না এবং কোনো মত পোষণ করতে পারবে না। কেউ যদি সম্মানিত শরীয়ত উনার খিলাফ চলে এবং কোনো মত পোষণ করে, সে ঈমানদ্বার থাকতে পারবে না; বরং কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে।
তাই মুসলমানদের ঈমান ও আমল-আখলাক্ব হেফাযতের লক্ষ্যে এই নিবন্ধে ট্রান্সজেন্ডার সম্পর্কে সংক্ষিপ্তকারে শরঈ ফতওয়া তুলে ধরা হবে। ইনশাল্লাহ।
-আল্লামা মুহাদ্দিস মুহম্মদ আমিন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (৩১)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (৩০)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৯)
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৮)
২০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৭)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৬)
১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৫)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৪)
০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২২)
৩০ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২১)
২৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে- চার মাযহাবের যে কোন একটি মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয (২০)
২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












