ফতওয়া
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৮)
, ২৮ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৪ সাদিস, ১৩৯২ শামসী সন , ০১ নভেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) ফতওয়া বিভাগ
কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয-ওয়াজিব, আর এর চেয়ে কমে কাটা ও মু-ন করা হারাম হওয়ার অকাট্য দলীলসমূহ:
মহান আল্লাহ পাক তিনি “পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ” উনার ৭৪নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَنَجَّيْنَاهُ مِنَ الْقَرْيَةِ الَّتِي كَانَتْ تَعْمَلُ الْخَبَائِثَ - الخ-
অর্থ: আমি হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনাকে অসৎকাজে লিপ্ত ক্বওম থেকে মুক্তি দিয়েছি। আর অসৎকাজে লিপ্ত ক্বওমকে ধ্বংস করে দিয়েছি।
“পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ” উনার উক্ত আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে মুফাসসিরীনে কিরাম উনারা বলেন-
(৮)
فقد اخرج اسحاق بن بشر والخطيب وابن عساكر عن الحسن قال رسول الله صلى الله عليه وسلـم- عشر خصال عملتها قوم لوط بها هلكوا اتيان الرجال بعضهم بعضا ..................... شرب الخمور وقص اللحية وطول الشارب ................... ولباس الحرير. (تفسير روح الـمعانى ج৯ صفه৭২)
অর্থ: হযরত ইসহাক ইবনে বুশর, খতীব এবং ইবনে আসাকির, হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যে দশটি বদ স্বভাব বা আমলের কারণে লূত সম্প্রদায়কে ধ্বংস করা হয়েছে, তা হচ্ছে বলৎকার, ......... শরাব পান, দাড়ি কর্তন, গোঁফ লম্বাকরণ ......... ও রেশমী কাপড় পরিধান করা। (তাফসীরে রুহুল মায়ানী, ৯ম খ- পৃষ্ঠা-৭২)
(৯) আর হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনাকে নুবুওওয়াত ও ফাহমে সালীম দান করেছি এবং সুদুম বস্তি হতে মুক্তি দিয়েছি। যে বস্তির বাসিন্দারা মন্দ কাজে লিপ্ত ছিল। যেমন- কবুতর বাজী, গান-বাজনা, দাড়ি কাটা ইত্যাদি, যা বর্তমান যামানার বিশেষ সংস্কৃতি। (তাফসীরে ইবনে আব্বাস, ৪র্থ খ- পৃষ্ঠা-২৪)
(১০) হযরত লূত আলাইহিস সালাম উনাকে আমি হিকমত ও ইলিম (হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের জন্যে যে শান প্রযোজ্য) দান করেছি। আর আমি উনাকে এরূপ বস্তি হতে মুক্তি দিয়েছি, যে বস্তির বাসিন্দারা মন্দ কাজ করতো, এর মধ্যে সবচেয়ে মন্দ কাজ ছিল “বলৎকার। তাছাড়া অন্যান্য আরো মন্দ কাজে তারা অভ্যস্ত ছিল। (যেমন) ঢিল ছোঁড়া, কবুতর বাজী, গান-বাজনা, শরাব পান করা, দাড়ি কাটা ও মোঁছ লম্বা করা ....... ইত্যাদি। (তাফসীরে বয়ানুল কুরআন, ৭ম খ- পৃষ্ঠা-৫৪)
মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন, “পবিত্র সূরা হাশর শরীফ উনার’ ৭নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদেরকে যা দান (আদেশ) করেন, তা আঁকড়িয়ে ধরো এবং যা থেকে বিরত থাকতে বলেন, তা থেকে বিরত থাকো। উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় মুফাসসিরীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা বলেন-
(১১)
واما ثقب الاذن فمباح للنساء لاجل التزبين بالقرط والحرام على الرجل كحلق اللحية = (تفسير روح البيان ج৯ صفه৪২৯)
অর্থ: মহিলাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যে কান ছিদ্র করা জায়িয। কিন্তু পুরুষের জন্যে তা হারাম, যেমন পুরুষের জন্যে দাড়ি মুন্ডন করা হারাম। (তাফসীরে রুহুল বয়ান, ৯ম খ-, পৃষ্ঠা-৪২৯)
সুতরাং পবিত্র কুরআন শরীফ উনার উল্লেখিত তিনখানা পবিত্র আয়াত শরীফ ও উনার তাফসীর বা ব্যাখ্যা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে-
১. দাড়ি মু-ন করা আকৃতি বিকৃত করা ও শয়তানের নির্দেশ পালন করার নামান্তর।
২. দাড়ি মু-ন করা মহান আল্লাহ পাক উনার আযাব-গযব তথা অসন্তুষ্টি লাভের কারণ। যেমন দাড়ি মু-ন করার কারণে ক্বওমে লূতের উপর মহান আল্লাহ পাক উনার আযাব-গযব ও অসন্তুষ্টি অবর্তীণ হয়েছিল।
৩. দাড়ি মু-ন করা মূলত মহান আল্লাহ পাক উনার ও সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশ মুবারক অমান্য করার শামিল, যেটা স্পষ্টতঃ হারাম। অতএব, পুরুষের জন্যে দাড়ি মুন্ডন করা এবং এক মুষ্ঠির কমে দাড়ি ছাটা, কাটা সম্পূর্ণ হারাম। (মাসিক আল বাইয়্যিনাত উনার ফতওয়া বিভাগ থেকে সংকলিত। )
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৬)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫)
২৯ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৪)
২২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৩)
১৫ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৯)
০২ নভেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫)
১৭ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৪)
১৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩)
১০ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২২)
০১ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১)
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)